ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

হাঁটুন নিয়মিত, সুস্থভাবে বাঁচুন দীর্ঘদিন

মো. আজিবুর রহমান রাজিব | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৩
হাঁটুন নিয়মিত, সুস্থভাবে বাঁচুন দীর্ঘদিন

ঢাকা: নিয়মিত হাঁটাহাটি মন ও আত্মার দিগন্তকে প্রশস্ত করে তোলে। নিয়মিত হাঁটাহাটি মানসিকভাবে শক্তিশালী, সচেতন ও চাঙ্গা করে তোলে।

এতে শরীরের কর্মগতি অনেক গুণ বেড়ে যায়। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য হাঁটাহাটির বিকল্প নেই।

নিয়মিত হাঁটাহাটির উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করতে এবং এই অভ্যাসে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে যুক্তরাজ্যে বেশ কয়েকটি ‘ওয়াকিং ফর হেলথ প্রোগ্রাম’ চালু রয়েছে। বিভিন্ন দাতব্য ও সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে পরিচালিত এসব হাঁটাহাটি প্রকল্প বিশ্বাস করে, নিয়মিত হাঁটাহাটি করলে মানুষের অকাল মৃত্যু অনেকখানি কমে যাবে। মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে অনেক বেশি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে।

সম্প্রতি প্রকাশিত ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের এক গবেষণায় দেখা যায়, হাঁটাহাটি বা শারীরিক ব্যায়াম হৃদরোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। আরও বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা করে হাঁটলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।

এ পর্যায়ে থাকছে হাঁটাহাটির ফলে বিভিন্ন শারীরিক অঙ্গের ওপর ইতিবাচক প্রভাবের বিবরণ।

চর্বি ও মাংসপেশির ওপর প্রভাব
প্রতিদিন ৪৫ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন হাঁটাহাটি করলে খাবার-দাবার ঠিক রেখেও প্রতি বছর অন্তত ১৮ পাউন্ড ওজন কমানো সম্ভব। এছাড়া হাঁটাহাটির ফলে মাংসপেশির গঠন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

হৃদযন্ত্রের ওপর প্রভাব
প্রতিদিন ২০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত ৩ থেকে ৪ দিন হাঁটলে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা অনেক গুণ বেড়ে যায়। হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস শক্তিশালী থাকলে দীর্ঘ সময় ধরে ক্লান্তিহীন অনেক কঠিন ব্যায়াম বা কর্মক্ষমতা তৈরি হয়। ফলে  স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।

হাঁটাহাঁটির প্রত্যক্ষ উপকারিতা
•    হৃদযন্ত্র শক্তিশালী হয়ে ওঠে, কর্মক্ষমতা বাড়ে।
•    রক্তচাপ কমে যাওয়ায় বা নিয়ন্ত্রণে থাকায় স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
•    শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
•    হাড়ের ও মজ্জার জোড়াকে সংহত করে তোলে।
•    শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
•    মানসিক সুস্থতা ও প্রশান্তি বাড়ায়।
•    মস্তিষ্কের গঠন ভাল রাখে।
•    ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে দেয় ও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
•    স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।
•    ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
•    ঘুম ভালো হয়।
•    অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমিয়ে দেয়।
•    রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
•    ত্বকের ঔজ্জল্য ও লাবণ্য ধরে রাখে।
•    ব্যাক পেইন বা মেরুদণ্ডের ব্যথ্যা কমিয়ে দেয়।
•    শরীরে রক্ত চলাচল এবং ব্রেইনে এন্ডরপিন নামে একধরনের হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোন স্বাভাবিকভাবে মানুষের মনকে প্রফুল্ল রাখে।
•    বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের গঠন ঠিক রাখে, এমনকি অস্টিওফরেসিস বা হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
•    হাঁটাহাটির ফলে শরীরের সবধরনের হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায়।

অতএব, নিয়মিত হাঁটাহাটি করে শরীর ও মনকে সুস্থ রেখে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। প্রতিদিন হাঁটাহাটি করার মাধ্যমে কিছু সময় ব্যয় করা মানে সময় নষ্ট নয়, বরং নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রেখে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে একজন সফল মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠার করার সুদূরপ্রসারী যাত্রা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৩
এইচএ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।