ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

পেট্রোলিয়াম জেলি কতটুকু নিরাপদ!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৩
পেট্রোলিয়াম জেলি কতটুকু নিরাপদ!

ঢাকা: আপনার নিত্যব্যবহৃত ওষুধের বাক্সটি খুললে পেট্রোলিয়াম জেলির একটি জার পাওয়া যাবেই। ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে এখন এটাই স্বাভাবিক।

মানব শরীরের বিভিন্ন ব্যথা নিরাময়ের সঙ্গে সৌন্দর্য্য চর্চায়ও দীর্ঘদির ধরে আস্থার সঙ্গেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে পেট্রোলিয়াম জেলি।

কিন্তু বিশ্বস্ত এ পেট্রোলিয়াম জেলি হয়তো আপনার জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পেট্রোলিয়াম জেলিকে আপনি যতটা নিরাপদ মনে করছেন, ততটা নিরাপদ তো নাও হতে পারে।

সম্প্রতি এ বিষয়ে হলিস্টিক ডারমটোলজি.কম’র প্রতিষ্ঠাতা বিখ্যাত ত্বক বিশেষজ্ঞ ড. অ্যালান ডেটনার বিস্তারিত ধারণা দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, পেট্রোলিয়াম জেলি হচ্ছে হাইড্রোকার্বনের সেমি-সলিড মিশ্রণ। যা তেল জাতীয় পদার্থ থেকে রিফাইনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। এটি একটি অস্থিতিশীল পদার্থ। সাধারণত ত্বকের আদ্রতা দূর ও চামড়ার ওপরে ফোসকা নিরাময়ে পেট্রোলিয়াম জেলির ব্যবহার হয়ে থাকে।

প্রাথমিকভাবে পেট্রোলিয়াম জেলিকে নিরাপদ মনে হলেও তেল রিফাইনের মাধ্যমে এটি (পেট্রোলিয়াম জেলি) প্রস্তুত করে যে উপাদান সরিয়ে ফেলা হয় তা অনেক সময় ক্যান্সার জাতীয় রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে।

এ বিষয়ে ড. অ্যালান ডেটনার বলেন, তেল রিফাইনের সময় সন্দেহাতীতভাবে পেট্রোলিয়াম জেলি থেকে এ ধরনের উপাদান সরিয়ে ফেলা হয়।

পেট্রোলিয়াম জেলি পণ্য থেকে ঠিক কী মাত্রায় ওইসব উপাদান সরিয়ে ফেলা হয় সে সর্ম্পকে আমাদের সঠিক কোনো ধারণা নেই। ডেটনার বলেন, ব্যবহারকারীরা জানেন না তার পণ্যটি থেকে কি পরিমাণ উপাদান সরানো হয়েছে।

তিনি বলেন, যদিও পেট্রোলিয়াম জেলির শুদ্ধতার বিভিন্ন মাত্রা আছে। কিন্তু আপনি জানেন না আপনার বিশ্বস্ত পেট্রোলিয়াম জেলিতে ক্ষতিকারক উপাদানের অনুপস্থিতি কতটুকু কম। আর এটি আপনার ত্বকের জন্য কতটুকুই বা নিরাপদ।

পেট্রোলিয়াম জেলি আপনার ত্বকের ছিদ্রগুলোর ওপর আস্তরণ তৈরি করে ত্বককে আদ্রতা থেকে রক্ষা করে। কিন্তু অনেক সময় ধরে ব্যবহারের কারণে এটি ত্বকের ক্ষতিও করতে পারে।

তাই ড. অ্যালান ডেটনার শরীর ভেজা অবস্থায় ভ্যাসলিন ব্যবহারের উপদেশ দিয়েছেন। ময়লা শরীরে ভ্যাসলিন মাখলে তা আপনার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠবে।

যাদের মুখে ব্রণ ও ৠাশ আছে তাদেরকে ভ্যাসলিন ব্যবহার না করারই পরামর্শ দিয়েছেন। পেট্রোলিয়াম জেলির তৈলাক্তভাব আপনার ত্বকের সমস্যাগুলোক আরও জটিল করে তুলতে পারে।

ভ্যাসলিন ব্যবহারে সতর্কতা হিসেবে তিনি বলেন, ফুসফুসে গেলে তা লিপিড নিওমোনিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রতিদিন ভ্যাসলিন ব্যবহার না করাই শ্রেয়। এমন পরামর্শই দিয়েছেন ড. অ্যালান।

ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা ও সৌন্দর্য্য চর্চায় এটি সহজ্যলভ্য উপায় হওয়ায় সবাই একে ব্যবহার করে। ত্বক পরিষ্কারে আমরা যখন সাবান ব্যবহার করি তখন এটি মুখের স্বাভাবিক তৈলাক্ততা সরিয়ে ফেলে।

যদি আপনি সঠিকভাবে ভ্যাসলিন ব্যবহার করেন তবে তা ত্বকের হারানো তৈলাক্ততা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি ত্বকভেদে অ‍াচরণ করে।

এ প্রসঙ্গে ড. অ্যালান বলেন, পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহারের পর এটি আপনার ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে, নাকি বিরুপ প্রভাব ফেলেছে তা অনেকেই খেয়াল করি দেখি না।

এখন প্রশ্ন হলো ভ্যাসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার না করে কি ব্যবহার করবেন। এ বিষয়ে ড. অ্যাল‍ানের পরামর্শ, পণ্য ক্রয়ের সময় এর প্রস্তুত উপকরণ দেখে কিনতে পারেন।

বিকল্প হিসেবে যেসব পণ্যে মৌমাছির শরীর থেকে নি:সৃত মোম, নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল, কোকোয়া বাটার আছে সেসব পণ্য ব্যবহার করা নিরাপদ। কারণ এ সব উপকরণের মাধ্যমে তৈরি ব্যবহারীক পণ্য মানব শরীর খুব সহজেই মানিয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৩
এসএইচ/জেডএস/আরকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।