ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

রাঙ্গামাটিতে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সফলতা

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৪
রাঙ্গামাটিতে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সফলতা

রাঙ্গামাটি থেকে ফিরে: সদর উপজেলার মনতলার ভেদভেদী গ্রামের মন্টু মার্মা, পেশায় কাঠ মিস্ত্রি। তিনি কাশি ও জ্বরে ভুগছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে।

দিনে দিনে অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে কাজ করার সামর্থ্যও হারিয়ে ফেলেছিলেন। এরই এক পর্যায়ে ব্র্যাকের সেবিকা জাহানারা বেগমের পরামর্শে ব্র্যাক অফিসে যোগাযোগ করে কফ পরীক্ষা করান।

পরীক্ষায় ধরা পড়ে যক্ষ্মা রোগ। পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির মতো জেলায় এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দরিদ্র মন্টু। তবে তার এই আতঙ্ক দূর করে দেয় ব্র্যাক। বিনামূল্যে ওষুধও পান ব্র্যাকের সহযোগিতায়। ডটসের মাধ্যমে পূর্ণ মেয়াদে ৬ মাস চিকিৎসার পর সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করেন।

সম্প্রতি রাঙ্গামাটি ঘুরে সরেজমিনে মন্টু মার্মার বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় সুস্থ হয়ে পুনরায় কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি। মন্টু বাংলানিউজকে বলেন, “এভাবে যে চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হতে পারবো তা ভাবিনি। বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়ে আমি খুশি। ”

বাংলানিউজের আলাপ হয় সদর উপজেলার কলেজ গেট মুসলিম পাড়া এলাকার মো. হোসেনের সঙ্গে। ৬০ বছর বয়সী হোসেন অনেক দিন জ্বর-কাশি ভাল না হওয়ায় দিনে দিনে দূর্বল হয়ে পড়েছিলেন। ব্র্যাকের স্বাস্থ্য সেবিকা ঝর্ণা বড়ুয়ার পরামর্শে কফ পরীক্ষা করান তিনি। প্রথমদিকে আতঙ্কিত থাকলেও ব্র্যাকের সেবিকার সাহস ও অনুপ্রেরণায় তিনি ডটস’র মাধ্যমে ওষুধ সেবন শুরু করেন। প্রতিদিন সেবিকার সহযোগিতায় ওষুধ খেয়ে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থারও অনেক উন্নতি হয়েছে। এভাবে নিয়মিত ৬ মাস ওষুধ খেলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন হোসেন।

রাঙ্গামাটি জেলায় সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে ব্র্যাক ‘জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক রোগী সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাচ্ছেন তাদের রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সেবা। গত পাঁচ বছরে মোট ২৯৩৬ জন নতুন রোগী চিহ্নিত হয়- যার মধ্যে শতকরা ৯৭ জনই আরোগ্য লাভ করেন।

ব্র্যাকের স্বাস্থ্য সেবিকারা ঘরে ঘরে গিয়ে যক্ষ্মার লক্ষণ চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কফ পরীক্ষার করানোর জন্য পরামর্শ দেন। পরীক্ষায় যক্ষ্মা ধরা পড়লে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। প্রতিদিন সকাল বেলায় ব্র্যাকের স্বাস্থ্য সেবিকা বা নির্দিষ্ট ব্যক্তির সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে রোগীর ওষুধ খাওয়া নিশ্চিত করা হয় (ডটস পদ্ধতিতে)।

এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শে এক্সরে ও ইএনএসি করার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

ব্র্যাকের রাঙ্গামাটি জেলা ব্যবস্থাপক মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা বাংলানিউজকে বলেন, মানুষের ঘরে ঘরে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতেই কাজ করছি আমরা। রাঙ্গামাটি জেলায় সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে ব্র্যাক ‘জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি’ তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। কর্মীদের পরিশ্রমের ফলেই গত পাঁচ বছরে মোট ২৯৩৬ জন নতুন রোগী চিহ্নিত হয়- যার মধ্যে শতকরা ৯৭ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৭ ঘন্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।