ঢাকা: বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। তাপদাহের কারণে মানুষের বাইরের খাবার ও পানি গ্রহণের কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শনিবার (এপ্রিল ৩০) দিবাগত রাতে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে রোগী সংখ্যা। কর্তব্যরত কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরেই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
সর্বশেষ ভর্তির তালিকা থেকে জানা যায়, শুক্রবারে মোট ভর্তি হয়েছেন ৪৯০ জন। বৃহস্পতিবারে ৪৩০ জন। বুধবারে ৪৫৫, মঙ্গলবার ও সোমবার ৪৬৫ জন করে রোগী ভর্তি হয়েছেন।
তবে শনিবার রাত ১১ টা পর্যন্ত ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৪৯০ জন। দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়তই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
আইসিডিডিআর’বি থেকে জানা যায়, এবারে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা বেশি।
রোগীর স্বজন তাহের আলী বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার সকাল থেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন তার স্ত্রী। বিকাল ৪ টা পর্যন্ত প্রায় ৩০ বার পাতলা পায়খানা হয়। শরীর নেতিয়ে পড়লে বিকেলে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
হাসপাতালের রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বারিধারা, গুলশান, লালবাগ, যাত্রাবাড়ী, তেজগাঁও এবং মিরপুর এলাকা থেকেই আসছেন বেশিরভাগ রোগী।
রাজধানীতে প্রচণ্ড গরমে পানির সঙ্কট থেকেই বিশুদ্ধ পানির অভাব হচ্ছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডায়রিয়া বৃদ্ধির কারণ হিসেবে গরমে রাস্তায় এবং ফুটপাথের পানীয়কে দায়ী করেছেন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রফেসর অব সার্জন ডা. ফিরোজ কাদের। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গরম বৃদ্ধির কারণে আমাদের শ্রমজীবী ও নিম্নজীবী মানুষেরা রাস্তায় আখের রস, লেবুর শরবত পান করেন। এসব পানি মোটেও বিশুদ্ধ নয়। শরবতে মাছের জন্যে বা লাশের জন্যে রাখা বরফ দেওয়া হয়, যা পেটের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর। এটিই ডায়রিয়া বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
তিনি বলেন, এছাড়াও আমাদের দরিদ্র শ্রেণীর লোকেরা রান্না করা খাবার পরবর্তীতে ফ্রিজে রাখতে পারছেন না। ফলে গরমে অনেক সময় খাবার নষ্ট হয়ে যায় এবং সেটি খেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন মানুষ।
এজন্যে রাস্তার শরবত ধরনের পানীয় গ্রহণ না করা এবং রান্না করা খাবার দেরিতে না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, শুধুমাত্র বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা গেলেই ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। বড় ছোট সকলেরই দিনে অল্প সময়ের মধ্যে যদি কয়েকবার পাতলা পায়খানা হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে স্যালাইন খাওয়া শুরু করতে হবে।
এ সময় শরীর থেকে পানি চলে যায় এবং গরমের কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই যতো দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘন্টা, মে ০১, ২০১৬
এমএন/আরআই