ঢাকা: জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে অপেক্ষা করছিল ৯ বছরের শাম্মি আখতার। আজই একটি কৃত্রিম পা সংযুক্ত হবে তার।
শাম্মির বাবা রাজ্জাক শিকদার পেশায় দিনমজুর। বুধবার (২৫ মে) সকালে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চার বছর আগে পিরোজপুরে ট্রাকের ধাক্কায় বাম পায়ে ভয়ঙ্করভাবে অাঘাত পায় শাম্মি। এরপর উরুর পর থেকে পুরো পা কেটে ফেলতে হয়।
রাজ্জাক শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘এক সময় সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, কাঠের স্ট্রেচারে ভর দিয়েই বাকি জীবনটা আমার মেয়েকে কাটাতে হবে। তবে এখন কৃত্রিম পা জোড়া লাগছে’।
কৃত্রিম পা তৈরি করতে একটি দীর্ঘ এবং নিঁখুত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ভারতের জয়পুর ফুটওয়্যারের স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন ‘ভগবান মহাবীর বিকলাঙ্গ সহায়তা সমিতি’ এই পুর্নবাসন কেন্দ্রে কৃত্রিম পা তৈরি এবং সংযোজনের কাজ করছে।
ইনস্টিটিউটের একটি কক্ষ পুরো ওয়ার্কশপ হয়ে উঠেছে। সেখানে কয়েকটি তাকে সাজানো রয়েছে অনেকগুলো পা, পায়ের পাতা, হাঁটু।
ভগবান সমিতির ম্যানেজার রঞ্জন কর্মকার বাংলানিউজকে বলেন, একটি পা তৈরি করতে প্রথমেই গঠন এবং আকার পরিমাপ করে নিতে হয়। এরপর সেই পরিমাণে চকের দলা দিয়ে একটি আকার তৈরি করা হয়। যার ওপর প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে একটি শক্ত গঠন দেওয়া হয়।
পা’কে ঘোরানোর জন্যে জয়েন্টগুলোতে বিশেষ লিবার বসাতে হয়। এর মাধ্যমে পা সহজে নড়াচড়া করে এবং প্রয়োজনে স্থির থাকে। একে বলা হয় প্লাস্টার অব পারিস। এর ওপরেই ধাতুর তৈরি স্ক্রু এবং যন্ত্র লাগানো হয় নড়া-চড়ার জন্যে। এর জন্যে রয়েছে আলাদা বিভাগ। যেখানে লোহার এই লিবারগুলো তৈরি করা হয়।
সবশেষে পা’গুলোকে পাঠানো হয় একজন মুচির কাছে। তিনি সেগুলোতে প্রয়োজনীয় চামড়া লাগান এবং বেল্ট সংযুক্ত করেন। বেল্টের মাধ্যমে হাঁটু বা কোমর বা শরীরের সুস্থ অংশের সঙ্গে কৃত্রিম পা’কে সংযোজন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘন্টা, মে ২৫, ২০১৬
এমএন/এএসআর