ঢাকা: নয়দিনের সরকারি ছুটিতে চিকিৎসকহীন হয়ে পড়েছে রাজধানীর হাসপাতালগুলো। ফলে কিছুটা বিপাকে রয়েছেন ‘বাধ্য হয়ে’ হাসপাতালে থাকা রোগীরা।
রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিকেল হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। তবে ঈদের কারণে হাসপাতালটিতে রোগীর সংখ্যাও হাতে গোনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জরুরি বিভাগে একজন কনসালট্যান্টসহ মোট পাঁচজন চিকিৎসক থাকলেও ওয়ার্ডগুলোর জন্য কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডিউটিতে নেই।
মেডিকেল অফিসারদের দিয়েই চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ১২ তলা বিশিষ্ট হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে ৫৫০টি শয্যা রয়েছে।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ বিছানাই খালি পড়ে আছে। তবে যেসব রোগী রয়েছেন, অসুস্থতার মাত্রার কারণে তাদের বাধ্য হয়েই থাকতে হচ্ছে বলে জানালেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
তবে ঈদের কারণে একটু ‘সুস্থ’ হয়ে ওঠা রোগীরাও ছাড়পত্র পেতে মরিয়া।
পাঁচতলার নারী ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মোট আটজন রোগী রয়েছেন। জ্বর, হৃদরোগসহ বিভিন্ন অসুখে তাদের ঈদ কাটবে হাসপাতালের বিছানায়। তারা জানান, দিনে ডাক্তাররা নিয়মিতই আসছেন। তবে বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক নেই।
‘এই ছুটিতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নাগাল পাওয়া কঠিন ব্যাপার। দুজন করে সেবিকা এসব ওয়ার্ডগুলোতে পালাক্রমে ডিউটি করছেন। ’
কাওলা থেকে আসা রোগী অনন্ত আজিজ বাংলানিউজকে জানান, গত ১ জুলাই ভর্তি হওয়ার পরে ক’দিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে আর দেখা যায়নি। তবে তাদের নির্দেশনায় জুনিয়র ডাক্তার ও ইন্টার্নরা নিয়মিত দেখাশোনা করে যাচ্ছেন।
শিশু ওয়ার্ডে দেখা যায়, চারজন মা চারটি বিছানায় তাদের অসুস্থ সন্তানদের কোলে নিয়ে বসে আছেন। এদের মধ্যে জ্বরে নির্জীব হয়ে পড়া শিশুর মা কৃষ্ণা বাংলানিউজকে বলেন, ‘জ্বরে হওয়ার পরে আমার বাচ্চাটা হাত পা কেমন নড়াচড়া বন্ধ করে দিয়েছিলো। এজন্য আজই হাসপাতালে ভর্তি করেছি। একজন ডাক্তার সে দেখে গেছে। উনি বড় ডাক্তার কিনা জানিনা। ’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালটির একজন নার্স বাংলানিউজকে বলেন, সব বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এখন ছুটিতে। তবে মেডিকেল অফিসাররা রয়েছেন রোগী দেখার জন্য।
ছুটি শেষ হলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ফিরবেন। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগটি পূর্ণরুপে খোলা থাকতে দেখা যায়। যেখানে কয়েকজন রোগীকেও চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত এমন ছুটিতে জরুরি বিভাগেই বেশি চাপ পড়ে। এজন্য এ বিভাগটি পূর্ণরুপে খোলা রয়েছে। এখানে তাৎক্ষণিক যে কোনো ধরনের চিকিৎসা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি সবসময়।
তবে কেবিন বা ওয়ার্ডের জন্য কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাসপাতালে ৪৮টি কেবিনের ৮০ শতাংশই রোগী নেই। ওয়ার্ডগুলোও ৭০ শতাংশ ফাঁকা। এমন অবস্থায় যে রোগীরা আছেন তারা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানেই চিকিৎসা চলছে।
ঈদের জন্য হাসপাতালে বিশেষ রোস্টার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি রোগীদের চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২২০১ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৬
জেপি/এমএ/