ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চশমা পরে ধান কাটুন!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৭
চশমা পরে ধান কাটুন! চশমা পরে ধান কাটুন!

ধান কাটার মওসুমে আমাদের দেশের কৃষকদের অসাবধানতাবশত চোখে পাকা ধানের গুচ্ছের বা খড়ের ঝাপটা লেগে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যাপারটিকে অশিক্ষিত সরল কৃষকেরা ‘সামান্য ব্যাপার’, ‘ক’দিন পরেই সেরে যাবে’ এমন ভেবে হাত গুটিয়ে বসে থাকে। চক্ষু চিকিৎসকের কাছে যায় না। অথবা যাওয়া যে খুবই দরকার সেটা বুঝতে পারে না। এর ফলে সেখানে ধীরে ধীরে ইনফেকশন হয়ে চোখটি শেষ পর্যন্ত হারাতে হয়।

এরকম নজির গ্রামবাংলায় ভুরিভুরি। ফসল তোলার মওসুমে হরহামেশা এমন ঘটনা ঘটে থাকে।

অথচ চাইলেই এই বিপত্তি থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। কৃষক ভাইদের ধান কাটার সময় চোখে চশমা পরার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. গোলাম মোস্তফা। বাংলানিউজের সঙ্গে চোখের চিকিৎসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ পরামর্শ দেন।

ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, ধান কাটায় বা অন্য কোনো বিপজ্জনক কাজে যখন একজন শ্রমিক নিয়োজিত থাকেন তখন তাদের চোখে পাওয়ারলেস চশমা পরা উচিত। চোখের কর্নিয়াকে আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা করতে এর কোনো বিকল্প নেই।  চশমা পরে ধান কাটুন!

তিনি বলেন, রাজধানীর শ্যামলীর কাছে শিশুমেলার উল্টো দিকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ১৫শ রোগী দেখা হয় জনপ্রতি মাত্র ১০টাকা হারে। একহাজার টাকা খরচে যে কোনো ধরনের অপারেশন করা হয় এখানে। অনেক সময় রোগীভেদে বিনামূল্যেও অপারেশন করা হয়। এ হাসপাতালে বর্তমানের দ্বিগুণ প্রায় ৩ হাজার রোগী দেখার মত সক্ষমতা রয়েছে।

গোলাম মোস্তাফা বলেন, দালালদের উৎপাত ঠেকাতে একটি শৃঙ্খলা কমিটি করা হয়েছে। এর ত্রিসীমানায় দালালের অস্তিত্ব নেই। হাসাপাতালকে আরো সচল করতে ভারতের তামিলনাড়ুর অরবিন্দ হাসাপাতালের সহযোগিতায় অটোমোশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। এজন্য আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, ২০০৭ সাল থেকে হাসপাতাল ভবনটির কার্যত্রুম চালু হলেও ২০১৬ সাল থেকে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ২৪ ঘণ্টার জরুরি বিভাগ চালু করা হয়েছে। ২৫০ শয্যার হাসাপাতালে বেশ কিছু কেবিনও রয়েছে। ১৯৭৯ সালে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ছোট্ট পরিসরে চোখের চিকি‍ৎসা শুরু হয়। চশমা পরে ধান কাটুন!

এখন এ ইনস্টিটিউটে ক্যাটার‌্যাক্ট, কর্নিয়া, গ্লুকোমা, রেটিনা, অকুলোপাস্টিক, পেডিয়াট্রিক অপথামোলজি, নিউরো অপথালমোলজি, কমিউনিটি অপথালমোলজি ও লোভিশন নামে নয়টি বিভাগ চালু রয়েছে। ১৩টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার রয়েছে। প্রতিদিন এখানে ৮০ থেকে ১০০ জনের অপারেশন করা হচ্ছে। যেকোনো ধরনের চোখের চিকিত্সা এই হাসপাতালে হয়।

ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, হাসপাতালটিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে সার্বক্ষণিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা রযেছেন তাঁরা প্রায় সবাই বিদেশে উন্নত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ ও ডিগ্রি নিয়ে এসছেন। চোখের এমন কোনো রোগ নেই যা এখানে চিকিৎসা করা হয় না। সব বিভাগে রোগীদের সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অপারেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রশিক্ষিত জনবল, আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রয়োজনীয় প্রায় সব ওষুধ বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা,  ফেব্রুয়ারি ৭,  ২০১৭
কেজেড/ জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।