ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঢামেকের ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতে কর্মচারী বরখাস্ত

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৮
ঢামেকের ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতে কর্মচারী বরখাস্ত

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের ৩২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে প্রতিষ্ঠানটির আবু হানিফ ভূঁইয়া (তৃতীয় শ্রেণী) নামে এক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
 
 

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিনের স্বাক্ষরিত একটি আদেশে তাকে বরখাস্ত করার কথা জানানো হয়। টাকা গরমিলের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর হানিফকে বরখাস্ত করা হলো।

হানিফ রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে ইউজার ফি আদায়ে কর্মরত ছিলেন।

ওই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাক্তার মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, গত ১৬ জুলাই আবু হানিফের বিরুদ্ধে ইউজার ফি’র ওই টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি সুষ্ঠু তদন্ত শেষে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, আবু হানিফ রেডিওলজি বিভাগের ইউজার ফি ৩২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৮০ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।  

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক স্বাক্ষরিত ২০ আগস্টের আদেশে বলা হয়, সরকারি টাকা আত্মসাতের কারণে হানিফকে সেদিন থেকেই চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হলো।  

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, রেডিওলজি বিভাগের সিটিস্ক্যান, এমআরআই ও এক্স-রে থেকে আসা ইউজার ফি’র টাকাগুলো হানিফ ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, কেবল হানিফ নয়, এই অর্থ হাতিয়ে নিতে তার সঙ্গে একটি চক্র কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। পুরো চক্রটি খুঁজে বের করা উচিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।  

ওই কর্মকর্তা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এভাবে তারা সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করবে, তারপরও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকবে- এমনটা হতেই পারে না। তাছাড়া হানিফ ব্যক্তি হিসেবেও ভাল লোক নন।  বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন। আর রোগী বা তাদের স্বজনদের পাত্তাই দিতেন না তিনি।

যোগাযোগ করা হলে হানিফ উল্টো বাংলানিউজকেই প্রশ্ন ছোঁড়েন, ‘কে বলল আপনাকে এসব কথা? এ বিষয়ে আপনি অফিস থেকে জানেন। ’ কিছুক্ষণ চুপ থেকে ফের নিজের ‘অফিসে গিয়ে দেখা’ করতে বলেন বাংলানিউজ করেসপন্ডেন্টকে। এরপর ফোনটি কেটে দেন হানিফ, পরে আর তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের আরেক এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, কোরবানি ঈদের আগে হাসপাতালের পরিচালক নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে হানিফকে বলেন, ‘তুমি সরকারের টাকা আত্মসাৎ করেছো, কতো বড় সাহস! এক সপ্তাহের মধ্যে টাকাগুলা দেবে। নইলে তোমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালে উপ-পরিচালক ডাক্তার মো. শাহ আলম তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের ইউজার ফি’র টাকা গরমিল হওয়ার কারণে একটি তদন্ত কমিটি হয়। ওই তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে হানিফকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৮
এজেডএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।