ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বছরের পর বছর অচল মাগুরা সদর হাসপাতালের ২ অ্যাম্বুলেন্স

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
বছরের পর বছর অচল মাগুরা সদর হাসপাতালের ২ অ্যাম্বুলেন্স দু’টি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে

মাগুরায়: ‘বিনা চিকিৎসায়’ মাগুরা সদর হাসপাতালের সরকারি দু’টি অ্যাম্বুলেন্সই যেন রোগী হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দু’টি গত কয়েক বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।

জেলার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা সদর হাসপাতাল চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যা নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। ২৮ জন চিকিৎসকের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ২৪ জন।

তার মধ্যে একজনকে ওএসডি করে রাখা হয়েছে এবং আরেক জন চাকরিতে যোগদানে পর তিনি আর ফিরে আসেননি। শূন্য পদ রয়েছে ছয়টি। এ অবস্থায় জোড়াতালি দিয়ে চলেছে জেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা।

জানা যায়, জেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রথমে ৫০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে মাগুরা সদর হাসপাতাল। বর্তমানে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালের বারান্দায় ও মেঝেতে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ছয়জন ও বহির্বিভাগে নয়জন ডাক্তার রয়েছেন। তার মধ্যে দু’জন আবার অন্যত্র পড়াশোনায় রয়েছেন।

মাগুরা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স বিউটি বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের সদর হাসপাতালে সুপারভাইজারসহ সিনিয়র স্টাফ নার্সের পদ রয়েছে ৮৮টি। তবে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৮১ জন। ’

হাসপাতালের কম্পিউটার অপারেটর শাহানাজ পারভীন বাংলানিউজকে বলেন, ‘চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ২৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ১৬ জন। পরিছন্নতা কর্মী ২১টি পদের বিপরীতে রয়েছেন ১৫ জন। নিরাপত্তা কর্মী চারটি পদের বিপরীতে রয়েছেন দু’জন। কুক মশালচি পদ রয়েছে ৬টি। বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন চারজন। হাসপাতালে ছয়টি টয়লেট থাকলেও ব্যবহারের উপযোগী তিনটি।

হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আশা এক রোগী ফাতেমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, টয়লেটে নেই লাইট ও পানি ব্যবহারের পাত্র। যা আছে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করে না বললেই চলে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আশা গোলাম আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘ হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো আর নতুন নতুন অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ হলেও নেই কোনো ভালো চিকিৎসক। ডাক্তার সংকট লেগেই থাকে।

মাগুরা সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী এবিএম মছলেম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ হাসপাতালে লোক বল সংকট ছাড়াও সব চেয়ে বড় সমস্যা ডাক্তারা থাকেন না। রয়েছে অধিক শূন্য পদ। সরকারিভাবে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও বর্তমানে দু’টি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। ‘

জনবল সংকট থাকলেও ওষুধের সংকট নেই উল্লেখ করে মাগুরার সিভিল সার্জন ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মুন্সী মো. ছাদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি সদ্য তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পেয়েছি। দায়িত্ব পেয়ে সবাইকে ডেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। নতুন চিকিৎসক নিয়োগ সম্পন্ন হলে শূন্যতা পূরণ হবে। নষ্ট অ্যাম্বুলেন্স মেরামত ও নতুন অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।

হাসপাতাল গেটে দালালদের উপদ্রব বন্ধ করতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একটি আদর্শ হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলতে জেলার সব শ্রেণী-পাশার মানুষের সহযোগিতায় চান তত্ত্বাবধায়ক মুন্সী ছাদুল্লাহ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।