ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার কমাতে চালু হচ্ছে এটিএলএস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯
দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার কমাতে চালু হচ্ছে এটিএলএস বিসিপিএস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনায় মানুষকে বাঁচাতে অ্যাডভান্সড ট্রমা লাইফ সাপোর্ট (এটিএলএস) চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হলে দুর্ঘটনা কবলিত ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ মানুষকে বাঁচানো সম্ভব। পৃথিবীর ৮৩টি উন্নত দেশে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে। ৮৪তম দেশ হিসেবে এ মাসেই বাংলাদেশে আধুনিক এ চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীস্থ বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

ওই সময়ে রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা দেওয়া অত্যাবশ্যক। আমাদের দেশের ট্রমা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় এ ব্যাপারে অনেকটাই ঘাটতি আছে। ফলে অনেক রোগী দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে বা হাসপাতালে নিতে নিতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই ঘাটতি মেটানোর জন্য ডাক্তারদের এটিএলএস কোর্স সম্পন্ন করা প্রয়োজন। একজন গুরুতর আহত ব্যক্তিকে সময়মত ট্রমা চিকিৎসা দিতে পারলে তাকে বাঁচানো সম্ভব।  

বক্তারা আরো জানান, আমেরিকান কলেজ অব সার্জনস অ্যান্ড ট্রমা কমিটি ডাক্তারদের জন্য ১৯৭৯ সালে এটিএলএস কোর্স তৈরি করে। ১৯৮৮ সালে কোর্সটি ব্রিটেনসহ বেশকিছু দেশে শুরু করা হয়। কোর্সটি যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা কবলিত, যুদ্ধাহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পদ্ধতিগত এবং সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এটিএলএস কোর্সটি বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। একজন আহত রোগীকে কিভাবে চিকিৎসাসেবা দিতে হবে, এ ব্যাপারে ওই কোর্সে লব্ধ জ্ঞান, চিকিৎসা পদ্ধতি এবং কৌশল সম্পর্কে ব্যাপকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বেশিরভাগ উন্নত দেশে এটি ডাক্তারদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক কোর্স।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বক্তারা বলেন, বর্তমানে বিদেশি প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে এই গুরুত্বপূর্ণ কোর্সটি চলমান থাকলেও খুব দ্রুতই দেশীয় প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে কোর্সটি চলমান থাকবে। ইতোমধ্যে আমাদের ৫ জন দেশি চিকিৎসক বা প্রশিক্ষক রয়েছে। এই প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের হার একেবারে কমিয়ে আনা সম্ভব। কেননা এই চিকিৎসকরা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যাবে এই সেবা প্রদানের তাগিদে। তারা শুধু ঢাকায় অবস্থান করবেন না। সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও চকবাজারের মতো ট্রাজেডির ক্ষেত্রেও এই বিদ্যা অত্যন্ত সহায়ক হবে মৃত্যুহার রোধ করতে।

সংবাদ সম্মেলনে বিসিপিএস’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ এস এম গোলাম কিবরিয়া, সোসাইটি অব সার্জনস এর সহ-সভাপতি ডা. ফিরোজ কাদীর, এটিএলএস’র আঞ্চলিক প্রধান অধ্যাপক ডা. গিলবার্টো লেং, ভারতের মহাত্মা গান্ধী ইউনির্ভাসিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মাহিশ চন্দ্র মিশ্রা, আমেরিকান কলেজ অব সার্জনস-এর ডা. কাটিএ স্ট্রং, এসিএস ইউএসএ’র ট্রমা কমিটির চেয়ারম্যান ডা. শ্যারন হেনরি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্যে বিসিপিএস’র সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. আব্দুল জলিল চৌধুরী জানান, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, হংকং, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশ থেকে পাঁচটি বিষয়ের ১২ জন প্রশিক্ষক চলমান ২৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি এটিএলএস’র প্রথম কোর্সটি পরিচালনা করছে। বিসিপিএস থেকে পাস করা ১৬ জন সিনিয়র ফেলো কোর্সে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
এমএএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।