ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

উখিয়া-টেকনাফে ১৩৩ কলেরা রোগী শনাক্ত, খাওয়ানো হবে টিকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৯
উখিয়া-টেকনাফে ১৩৩ কলেরা রোগী শনাক্ত, খাওয়ানো হবে টিকা

কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ওরাল কলেরা ভ্যাকসিন (ওসিভি) ক্যাম্পেইন। আগামী ৮ ডিসেম্বর (রোববার) থেকে ৩১ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) পর্যন্ত ২৪দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইনে এ দুই উপজেলায় রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী মিলে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫ জনকে কলেরা টিকা খাওয়ানো হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এ ক্যাম্পেইন চলবে।

বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার জেলা ইপিআই স্টোরের সম্মেলন কক্ষে ওরাল কলেরা ভ্যাকসিন (ওসিভি) ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন বড়ুয়া রাজন।

 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,  গত এক বছরে উখিয়া ও টেকনাফে ১৩৩ জন কলেরা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭৭ জন রোহিঙ্গা আর ৫৬ জন স্থানীয়। তাই শীতকালে কলেরার প্রকোপ যাতে না বাড়ে, ফের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ক্যাম্পেইন চলবে। এবার ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫ জন রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে কলেরা টিকা খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে। এরমধ্যে ৪ লাখ ৯৫ হাজার ১৯৭ জন স্থানীয় আর ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৮ জন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। স্থানীয়দের ক্ষেত্রে ১ বছরের ঊর্ধ্বে সব বয়সী লোকজন আর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ১ বছর থেকে ৫ বছরের নিচে শিশুকে কলেরা টিকা খাওয়ানো হবে।
 
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ২৪ দিন ব্যাপী এ ক্যাম্পেইন হলেও মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৮ থেকে ১৪ ডিসেম্বর এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে ৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওরাল কলেরা ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন চলবে।  

সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য সমন্বয়ক ডা. জামশেদ বলেন, সর্বশেষ ওসিভি ক্যাম্পেইন হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৭ নভেম্বর। সেই ক্যাম্পেইনের আওতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ছিল বেশি। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় কিছু সংখ্যক স্থানীয় লোকজনকে খাওয়ানো হয়েছিল। তাই এবারের ক্যাম্পেইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও থাকবে। তবে বেশির ভাগ স্থানীয় লোকজনকে এ টিকা  খাওয়ানো হবে।  

তিনি আরও বলেন, গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত উখিয়ায় ২১ জন আর টেকনাফে ১২২ জনসহ দুই উপজেলায় মোট ১৩৩ জন কলেরা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৭৭ জন রোহিঙ্গা আর ৫৬ জন স্থানীয় জনগোষ্ঠী।

এরমধ্যে উখিয়ায় স্থানীয় ৮ জন, রোহিঙ্গা ১৩ জন আর টেকনাফে স্থানীয় ৪৮ জন এবং রোহিঙ্গা ৬৪ জন কলেরা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।  

রঞ্জন বড়ুয়া রাজন বলেন, কলেরা ক্যাম্পেইন সফল করতে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সচেতনতা, মাইকিং, সভাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সফলভাবে ওসিভি ক্যাম্পেইন সম্পন্ন হলে কলেরা ঝুঁকি থেকে মুক্ত হবে উখিয়া-টেকনাফ।  

ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মো. আলমগীর বলেন, কলেরা একটি পানিবাহিত রোগ। নিরাপদ পানি এবং সঠিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে এ রোগ হয়। তাই কলেরা প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি নিরাপদ পানি পান করতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, উখিয়া-টেকনাফে গত এক বছরে ১৯১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ১৩৩ জনের কলেরা রোগ শনাক্ত হয়েছে। তবে জেলার অন্যকোনো উপজেলায় এখন পর্যন্ত কলেরা রোগী পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, এই দুই উপজেলায় কলেরা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা গেলে পুরো জেলাকে কলেরা থেকে নিরাপদ করা সম্ভব।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯
এসবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।