ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঢামেকে ট্রলি স্বল্পতা, রোগীদের নেওয়া হচ্ছে কোলে করে

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২২
ঢামেকে ট্রলি স্বল্পতা, রোগীদের নেওয়া হচ্ছে কোলে করে

ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ট্রলির স্বল্পতার কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়। জরুরি বিভাগে নির্দিষ্ট স্থানে ট্রলি না পেয়ে স্বজনরা রোগীদের কোলে নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ ও বাহির হতে দেখা যায়।

হাসপাতালে ট্রলির স্বল্পতার কারণে জরুরি  বিভাগে দূরদূরান্ত থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য আনা রোগীরা অ্যাম্বুলেন্সে ভিতরেই অপেক্ষা করতে দেখা যায়।  

শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ থেকে রাত ১০ পর্যন্ত জরুরি বিভাগের মূল ফটকে প্রবেশের মুখে হাতের বাম দিকে ট্রলি রাখার স্থানে কোন ট্রলি দেখা যায়নি। এ সময় রোগী বহনকারী অনেক অ্যাম্বুলেন্সকে ট্রলি না পেয়ে জরুরি বিভাগের সামনে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় সুমন (৩০) নামের এক যুবক। তাকে দুপুরের দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা। রাতে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা শেষে কোন ট্রলি না পেয়ে স্বজনরা সুমনকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে থেকে বেরিয়ে যায়।

আহত সুমনের সঙ্গে থাকা স্ত্রী খালেদা জানান, দুপুরে হাসপাতালে প্রবেশের সময় ট্রলি পেলেও রাতে চিকিৎসা শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও ট্রলি পাওয়া যায়নি। নিরুপায় হয়ে মাথায় ও পায়ে আঘাত প্রাপ্ত সুমনকে স্বজনরা কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে থেকে বের হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দুলাল নামে এক রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা। অনেক সময় অপেক্ষার পর জরুরি বিভাগে ট্রলি না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সের থাকা রোগীসহ বেড নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রবেশ করে স্বজনরা।

এই রোগীর মামা মকবুল জানায়, রোগীর অবস্থা খারাপ। ট্রলির জন্য বসে থাকলে হবে না। তাই অ্যাম্বুলেন্স থাকা রোগীসহ সেই বেড নিয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, জরুরি বিভাগে বর্তমানে ট্রলি আছে আনুমানিক ২০টির মত। তিন বেলা শিফটিং ডিউটিতে থাকে সরকারি কর্মচারীসহ দৈনিক মজুরিতে নিয়োগ প্রাপ্ত মোট ২০ জনের মত। হাসপাতালে মাঝে মধ্যে অনেক রোগী একসঙ্গে আসে। তখন ১৫টা ট্রলিতে ১৫জন রোগীকে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যায়। এক এক সময় দেখা যায় চিকিৎসকদের পরামর্শে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা চলে যায়। কারণ হাসপাতালে একেক জায়গায় একেক বিভাগ। এ কারণে মাঝে মধৌই ট্রলির সংকট দেখা দেয়।

অপর একটি সূত্র জানান, টলি সংকটের কারণে এই অবস্থা হয়েছে, সেটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এটা হচ্ছে জরুরি বিভাগে ম্যানেজমেন্টের তদারকির এর অভাবে। কারণ হাসপাতালে পর্যাপ্ত ট্রলি আছে।

এই ব্যাপারে কথা হয় জরুরী বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ২০ থেকে ২২টা ট্রলি আছে। প্রতি শিফটে ১৫ জন ট্রলিম্যান আছে। অনেক সময় রোগীর চাপের কারণে টলি পাওয়া যায় না, এটা ঠিক আছে কিন্তু ট্রলির সংকট নেই। তবুও এই ব্যাপারে আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করব।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২১
এজেডএস/এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।