মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে শিশু ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন সাধারণ মানুষজন। তবে অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালটিতে নির্ধারিত সময়ে ডাক্তার আসেন না।
অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকেও হাসপাতালটির বহিঃবিভাগে শিশু ডাক্তার ফরিদ খানের দেখা নেই।
জানা গেছে, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের ভর্তি রোগী ও বহিঃবিভাগে রোগী দেখার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে প্রতিদিন বেলা ১১ থেকে সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে আসেন ডাক্তার ফরিদ খান।
এছাড়া প্রায়ই রোগীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেন বলে অভিযোগও রয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে তেমন কোনো কিছুই জানেন না বলে দাবি করছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।
সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ থেকে আসা আসমা নামে এক রোগীর মা বাংলানিউজকে বলেন, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু ডাক্তারের দেখা নেই। সেজন্য বাধ্য হয়েই প্রাইভেট হাসপাতালে বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্চি।
আরও এক রোগীর বাবা কালু মিয়া বলেন, আমি মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে বাচ্চা নিয়ে আসছিলাম গত কয়েকদিন আগে, কিন্তু সেবার মান খুব খারাপ। যে কারণে মেয়েটাকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। আমার মতো গরীব মানুষের জন্য এই সরকারি হাসপাতাল কিন্তু আমরাই চিকিৎসা পাই না।
নাম প্রকাশ না করার মর্মে হাসপাতালের এক কর্মচারী বলেন, শিশু ডাক্তার ফরিদ স্যার প্রতিদিন বেলা ১১ থেকে সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে আসেন। পরে কয়েকজন রোগী দেখে তিনি চলে যান। হাসপাতালে কোন ডাক্তার এলো, না এলো সেটা মূলত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দেখার কথা কিন্তু তিনি ওইভাবে বিষয়টা দেখেন না।
এদিকে অভিযুক্ত শিশু ডাক্তার ফরিদ খানের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি রাস্তায় আছি, কিছুক্ষণের চলে আসবো।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) কাজী একে এম রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, ডাক্তার ফরিদ খানের বিষয়ে আমার থেকে ভালো বলতে পারবেন হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক স্যার, বিস্তারিত জানতে তার সঙ্গে কথা বলেন।
মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশ্বাদ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের সব চিকিৎসকের ডিউটি করার কথা। শিশু ডাক্তার ফরিদ সাহেবও তো তাই করেন। সকালে এসে ভর্তি রোগী দেখে তারপর বহিঃবিভাগের রোগী দেখেন।
রোজার শুরু থেকেই ডাক্তার ফরিদ সাহেব বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে আসেন এবং দায়সারাভাবে রোগী দেখে চলে যান— এমন প্রশ্নে আরশ্বাদ উল্লাহ বলেন, আমি তো সব সময় খোঁজ খবর রাখতে পারি না কোন ডাক্তার কোন সময়ে এলেন এবং কখন চলে যান। যদি ডাক্তার ফরিদ সাহেব এ ধরনের কাজ প্রতিনিয়তই করে থাকেন তবে তার বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২২
এসআরএস