ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মেডিক্যালে না পড়েও এমবিবিএস ডাক্তার তিনি!

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৪ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
মেডিক্যালে না পড়েও এমবিবিএস ডাক্তার তিনি! ভুয়া ডাক্তার আতিকুল হক

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): মেডিক্যাল তো দূরের কথা, বিজ্ঞানও পড়েননি কোনোদিন, তবুও তিনি এমবিবিএস ডাক্তার! 

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে দেখছেন রোগী! নিজেই এনেসথেসিওলজিস্ট এবং নিজেই সার্জন হিসেবে করছেন অপারেশনও। দীর্ঘদিন ভুয়া ডাক্তার হিসেবে চিকিৎসা সেবা দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কালিন্দী ইউনিয়নে অবস্থিত তাজ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও ভুয়া ডাক্তার আতিকুল হকের।

লাইসেন্স বিহীন হাসপাতাল পরিচালনা ও  ডাক্তার পরিচয়ে চিকিৎসা দেওয়ার অপরাধে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাকে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এ সাজা দেন।  

খুলনার বাসিন্দা ভুয়া ডাক্তার আতিকুল হক দীর্ঘদিন ধরে কালিন্দী ইউনিয়নের গদারবাগ এলাকার বসবাস করছেন। তার বাবার নাম মীর আশরাফ আলী। এসময় হাসপাতালটিকে লাইসেন্স না পাওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

৭২ ঘণ্টার মধ্যে সারা দেশের সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার যে নির্দেশনা দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, রোববার (২৯ মে) তার শেষ দিন।  

সে অভিযানের অংশ হিসেবে ২৯ মে দুপুর দেড়টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আব্দুল্লাহপুর এলাকায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় রহিমা বেগম আধুনিক হাসপাতাল ও স্বদেশ জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার ও লাইসেন্স না থাকায় এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে ছয় ঘণ্টার মধ্যে ভর্তি থাকা রোগীদের অন্যত্র রেফার করে হাসপাতাল দু’টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশেই অবস্থিত আব্দুল্লাহপুর ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে অপর একটি হাসপাতাল ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেলে সে হাসপাতালটিতে তালা লাগিয়ে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিকেলে কলাতিয়া ইউনিয়নের খাড়াকান্দী বাজারে অবস্থিত গ্রিন লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকেও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও লাইসেন্স না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে ঘোষণা করা হয়।

এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, কেরানীগঞ্জে ৪২টি হাসপাতালের লাইসেন্স আপডেট রয়েছে, বাকিগুলো অবৈধভাবে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। আমরা অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে অভিযান চালাচ্ছি। অন্য হাসপাতালগুলোতেও নজর রাখছি। অভিযানের দ্বিতীয় দিনে রোববার চারটি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা ও এক ভুয়া ডাক্তারকে কারাদণ্ড দিয়েছি আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, সারা দেশের ন্যায় কেরানীগঞ্জেও কোনো অবৈধ হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলবে না।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিজিস কন্ট্রোল মেডিক্যাল অফিসার ডা. নজরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করে কেরানীগঞ্জ মডেল ও দক্ষিণ থানা পুলিশ।  

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।