ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

প্রসূতির পেটে গজ রেখে সেলাই, তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
প্রসূতির পেটে গজ রেখে সেলাই, তদন্ত কমিটি গঠন

বরিশাল: বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যুতে ঝুঁকিতে পড়েন ৩ সন্তানের এক জননী। দেড় মাস আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের সময় তার পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দেন চিকিৎসক।

ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দেড় মাস পর আবারও অস্ত্রোপচার করে তা অপসারণ করা হয়।

ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী নারীর শারমিন আক্তার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার বাসিন্দা জিয়াউল হাসানের স্ত্রী। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গত ১৬ এপ্রিল বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন শারমিন আক্তার। অস্ত্রোপচারের পর থেকে পেটে ব্যথা অনুভব করছিলেন তিনি। এজন্য সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাও দেওয়া হয় তাকে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার কিছু দিন পর শুরু হয় প্রচণ্ড ব্যথা। সম্প্রতি পেট ফুটো হয়ে বের হয় পুঁজ। এরপর ভর্তি করা হয় শেবাচিম হাসপাতালে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায় শারমিনের পেটের ভেতর রয়ে গেছে গজ। পরে ২২ মে পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তা বের করেন শেবাচিম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নাজিমুল হক। তিনি জানান, দীর্ঘ দিন গজ থাকায় পেটের ভেতরে পচন ধরে নাড়ি ফুটো হয়ে গেছে শারমিনের। পুনরায় অস্ত্রোপচার করে সেগুলো ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসকের ভুলে স্ত্রীর এমন ভোগান্তিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শারমিন আক্তারের স্বামী জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, চিকিৎসকের কাছে আমরা আসি সুস্থ হওয়ার জন্য। সেই চিকিৎসকই আমার স্ত্রীকে অসুস্থ করে দিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসকের পরিচয় জানাতে পারেননি তিনি।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমরা অবগত। যেটা ঘটেছে সেটা দুঃখজনক। ঘটনার তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সার্জারি বিভাগের প্রধান ও মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাজিমুল হককে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. খুরশীদ জাহান ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মনিরুজ্জামান শাহীনকে সদস্য করা হয়েছে।

এই কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।