ঝালকাঠি: ঝালকাঠি পৌরসভা শহরের বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের কামড়ে পুলিশ, শিশু-বৃদ্ধ, নারীসহ ৬৬ জন আহত হয়েছেন। আহতরা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সোমবার (২০ জুন) বিকেল থেকে মঙ্গলবার (২২ জুন) দুপুর পর্যন্ত আহত ৬৬ জনকে চিকিৎসায় র্যাবিক্স-ভিসি দেওয়া হলেও মূল ভ্যাকসিন র্যাবিক্স আইজি সরবরাহ না থাকায় দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ঝালকাঠি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে ভ্যাকসিন র্যাবিক্স আইজি সরবরাহ না থাকায় আক্রান্তরা স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী বরিশালের ওষুধের দোকান থেকে সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ইতোপূর্বে পৌর কর্তৃপক্ষ রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) থেকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে পৌরবাসীকে স্বল্পমূল্যে ও অসহায়-দরিদ্রদের বিনামূল্যে সরবরাহ করলে বর্তমানে তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে র্যাবিক্স আইজি ভ্যাকসিন সংকটের সুযোগে দু’একটি ওষুধের দোকানে ২, ৪ ডোজ ভ্যাকসিন চড়া মূল্যে বিক্রি করছে বলে জানা গেছে।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার বিকেল ৩টা থেকে রাত পর্যন্ত ১৩ জন ও মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫৩ জন কুকুরের কামড়ের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আক্রান্ত মোট ৬৬ জনের মধ্যে অধিকাংশই শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও শ্রমজীবী। এছাড়া দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ কনস্টেবল আজিজুর রহমান কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন।
আহতরা জানান, হঠাৎ পেছন থেকে কুকুর এসে পায়ে কামড়ে দিচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ লোকেরা কামড়ের পর নিজেকে সামলে নিতে চেষ্টা করলেও শিশু ও নারীরা আক্রান্ত হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। রেজিস্টার অনুযায়ী আক্রান্তরা অধিকাংশই পৌরসভা শহরের কালিবাড়ী সড়ক, ফায়ার সার্ভিস মোড়, কুমারপট্টি সড়ক, সাধনার মোড় ও পূর্ব চাঁদকাঠি, বিকনা ও পেট্রল পাম্প মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্দা।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ব্রাদার মনিন্দ্র নাথ বলেন, ঝালকাঠি হাসপাতালে র্যাবিক্স-ভিসি ভ্যাকসিন সরবরাহ থাকলেও জলাতঙ্ক প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় আইজি ভ্যাকসিনের সংকট থাকায় আহতদের বাইরের দোকান থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে। অনেক রোগী বাইরের দোকানে ভ্যাকসিন না পাওয়ায় ইনসেপ্টা ফার্মার বিক্রয় প্রতিনিধিকে আমরাও ফোন করে ঝালকাঠিতে জরুরি ভিত্তিতে আইজি ভ্যাক্সিন সরবরাহের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।
এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে ঝালকাঠি পৌরসভায় মেয়র ও সচিবকে না পেয়ে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের দায়িত্বরত কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানান, বিগত দিনে আমরা ইনজেকশন দিয়ে বেওয়ারিশ বা পাগলা কুকুর মেরে ফেললেও বর্তমানে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের নিষেধের কারণে কুকুর নিধন করা যাচ্ছে না। আর পৌর কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিগত ৪-৫ বছর ধরে আমরা কোনো ভ্যাকসিন সংগ্রহ বা বিতরণ করি না।
ঝালকাঠি সিভিল সার্জন ডা. মো. শিহাব উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি শুনে আমি হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি জানিয়েছেন- র্যাবিক্স-ভিসি সরবরহ স্বাভাবিক রয়েছে, তবে র্যাবিক্স আইজি ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় দ্রুত সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জলাতঙ্ক প্রতিরোধে দু’টি ভ্যাকসিনই প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২২
এসআরএস