ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীরা আস্থা হারাচ্ছে : শেখ সেলিম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১২
চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীরা আস্থা হারাচ্ছে : শেখ সেলিম

ঢাকা : চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে জনগণ তাদের ওপর আস্থা হারিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাচ্ছে। ফলে এ খাতে প্রতি বছর ১৫ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম।



শনিবার জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘মহাজোট সরকারের তিন বছরে স্বাস্থ্য সেবায় অগ্রগতি ও অর্জন’ শীর্ষক সেমিনারের প্রধানবক্তা শেখ সেলিম এসব কথা বলেন।      

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম বলেন, ‘দেশে মুদি দোকানের উপরসহ যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। লোকজন সেখানে প্রথমে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, তারপর মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা করায়। দু’ নিরীক্ষায় দু’ ধরনের রিপোর্ট পেয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে সাধারণ মানুষ। এর পেছনে আরেকটি কারণ হলো ডাক্তাররা রোগীদের প্রতি আন্তরিক নয়। তারা প্রাইভেট প্রাকটিস নিয়েই ব্যস্ত থাকেন এবং রোগীদের সঙ্গে ১/২ মিনিট কথা বলেই প্রেসক্রিপসন লিখে দেন। ’

ডাক্তারদের দলাদলি থেকে বিরত থেকে সেবার মানসিকতা নিয়ে জনসেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শেখ সেলিম। এছাড়া রোগীদের সঙ্গে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেই বিষয়ে ডাক্তারদের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস চালু করা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।

সেমিনারে তিনি রোগীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু, দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে ৪৪ ধরনের ওষুধ দেওয়া, ডাক্তার, বিশেষায়িত ডাক্তার বাড়ানো ও বাজে ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং গ্রামের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা দিতে চিকিৎসকদের উদ্যোগী করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সব উন্নয়ন কার্যত্রম বিএনপি গত মেয়াদে ক্ষমতায় এসে বাতিল করে দিয়েছে। এক সরকারের চালু করা উন্নয়ন কাজ অন্য সরকারের বাতিল করে দেওয়াকে দেশের জন্য দুঃখজনক সংস্কৃতি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সেমিনারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত তিন বছরে স্বাস্থ্য খাতে মহাজোট সরকারের অর্জন ও ভবিষ্যৎ বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, জাতিকে সুস্থ, সুখী ও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গত মেয়াদে আওয়ামী লীগের চালু করে যাওয়া কমিউনিটি ক্লিনিক আবার চালু করা হয়েছে। নতুন নতুন অনেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ করেছে। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়ানোসহ চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে ৪ হাজার ১৩৩ জন ডাক্তার, ৬৩৯১ জন স্বাস্থ্য সহকারী,আড়াই হাজারের মতো নার্স, ৪৭০ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ বিপুলসংখ্যক জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

২০১৫ সালের মধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্বাস্থ্ সেবার উন্নয়নে চলমান প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে। বর্তমান সরকার এ লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হবে।

সেমিনারে গত তিন বছরের স্বাস্থ্য খাতে আওয়ামী লীগ সরকারের অগ্রগতি নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, স্বাস্থ্য খাতে অর্জনের পেছনে সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অ্যাওয়ার্ড ও সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড পাওয়া উল্লেখযোগ্য।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ডা. আবদুল মান্নানের সভাতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েসনের সভাপতি ডা. মাহমুদুল হাসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময় : ১৯৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।