কক্সবাজার: কক্সবাজারে ফের ডেঙ্গু আক্রান্তের হার বাড়ছে। এমনকি চলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ জন।
বুধবার ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণকারী তানভীর আহমদ (১৪) কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ও কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রহিমের ছেলে।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ আশিকুর রহমান জানান, বুধবার (৩১ আগস্ট) রাত পৌনে ২টায় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তানভীরের মৃত্যু হয়েছে।
তানভীরের চাচা ও যুবদলের কক্সবাজার পৌর কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দীন জানান, সোমবার (২৯ আগস্ট) গায়ে প্রচণ্ড জ্বর অনুভূত হওয়ায় তানভীরকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় তানভীরের শরীরে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে স্থানান্তর করেন। সেখানে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ২টায় তানভীর মারা যায়।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোমিনুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, চলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৪৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, কক্সবাজারে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। বর্ষাকালে চিপসের প্যাকেটসহ প্লাস্টিকের নানা বর্জ্যে পানি জমে থাকে। আর এই প্যাকেটগুলোই এডিস মশা প্রজননের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে।
তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে যেখানে সেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য না ফেলা, ঘরের আশেপাশে পরিষ্কার রাখা ও রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
চিকিৎসকরা জানান, বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগ প্রথম দেখা দেয় ১৯৬৪ সালে। তবে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আক্রান্তের হার ছিল খুব কম। এরপর ২০০২-০৩ সালে এবং ২০১৭ সালে পুনরায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগ দেখা দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০১৭ সালে দুই হাজার ৭৬৯ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। পরের বছর সেই সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে ১০ হাজার ১৪৮ জনে দাঁড়ায়। আর এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে সেই সংখ্যা প্রায় দশগুণে বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জনে। যার মধ্যে ১৭৯ জন প্রাণ হারান।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২২
এসবি/কেএআর