ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

বিজেপির শাসনে ত্রিপুরার উন্নয়ন হয়েছে: অমিত শাহ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
বিজেপির শাসনে ত্রিপুরার উন্নয়ন হয়েছে: অমিত শাহ

আগরতলা (ত্রিপুরা, ভারত): ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় দফায় ত্রিপুরা সফর করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন বিশেষ বিমানে তিনি আগরতলা এসে পৌঁছান এবং গোমতী জেলার উদয়পুরে ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে পূজা দেন।

পাশাপাশি দুটি সভা এবং একটি রোড শো করেন। প্রথম সভাটি করেন ঊনকোটি জেলার কৈলা শহরে।

সেকানে  অমিত শাহ বললেন, কমিউনিস্টরা বছরের পর বছর ত্রিপুরায় শাসনভার পরিচালনা করলেও সাধারণ মানুষের জন্য কোনো কাজ করেনি। শুধুমাত্র বিজেপির পাঁচ বছরেই ত্রিপুরার উন্নয়ন হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার হাত ধরে হচ্ছে। উন্নয়নের অর্থ শুধু এই নয় যে রাস্তাঘাট, পাকা বাড়ি এবং পরিকাঠামো তৈরি করা। জনজাতি, মহিলা যুব প্রজন্ম আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের কল্যাণে ওবিজেপি সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এ রাজ্যে অনেক বছর বামফ্রন্ট সরকার থাকার পরও জনজাতিদের কল্যাণে কোনো কাজ করেনি। এখন জনজাতি নেতাকে মুখ্যমন্ত্রীর চেহারা হিসেবে দাঁড় করিয়ে ভোট পাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এভাবে চালাকি করে ভোট পাওয়া সম্ভব নয়।

রাজ্যের চা শ্রমিক জনজাতিদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন করেন, বামফ্রন্ট সরকার আপনাদের জন্য কী কাজ করেছিল? বর্তমান বিজেপি সরকার তাদের জন্যও পাঁচ লাখ টাকার স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা করেছে। সেই সঙ্গে প্রতিটি বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছে, রান্নার গ্যাসের সংযোগ দিয়েছে, শৌচালয় নির্মাণ করে দিয়েছে, চাল সরবরাহ করা হচ্ছে বিনামূল্যে,  সবাইকে বিনামূল্যে কোভিড মহামারির টিকা দেওয়া হয়েছে। মনিপুরী হোক বা জনজাতি অথবা চা বাগানি সম্প্রদায়ের মানুষ, সমাজের সব স্তরের জন্য সমান উন্নয়নের ব্যবস্থা করেছে বিজেপি সরকার।

অমিত শাহ বলেন, ত্রিপুরায় কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট নিজেদের মধ্যে নির্বাচনী জোট করেছে। তাদের এই জোট প্রমাণ করেছে ইতোমধ্যে তারা বিজেপির কাছে হেরে গিছে। একা বিজেপিকে হারানো সম্ভব নয় আগে মেনে নিয়ে এই জোট করেছে, তারপরও তাদের হার নিশ্চিত। যে বামফ্রন্ট একসময় কংগ্রেস দলের কর্মী সমর্থকদের ওপর অত্যাচার করত, আজ তাদের সঙ্গেই কংগ্রেস ইলু ইলু অর্থাৎ আই লাভ ইউ, আই লাভ ইউ করছে। সেই সঙ্গে তিপ্রামথাকেও তাদের মোহরা বানিয়ে ফেলেছে। বাম, কংগ্রেস এবং তিপ্রামথা হচ্ছে ত্রিপল ট্রাবলের (সমস্যা) গটবন্ধন। এই তিন বিপদের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে ডাবল ইঞ্জন সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে এবং মোদি ও মানিক সাহার হাত শক্ত করতে হবে।

যদি রাজ্যের উন্নয়ন করতে হয় তাহলে বিজেপিকে জয়ী করে মানিক সাহার হাত মজবুত করতে হবে। বিজেপি একদিকে যেমন রিয়াং শরণার্থীদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করেছে, জঙ্গি সংগঠন এনএলএফটির সঙ্গে চুক্তি করে শান্তি ফিরিয়েছে। একইভাবে আগামী পাঁচ বছর রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করবে।

আগে ত্রিপুরা রাজ্যজুড়ে পানীয় জলের সংযোগ থেকে চাকরি, যে কোনো কাজের জন্য বামফ্রন্ট ক্যাডারদের কাছে যেতে হত। কিন্তু ২০১৮ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই অবস্থা থেকে রাজ্যবাসী মুক্তি পেয়েছে। তাই আবার রাজ্যে যাতে ক্যাডার রাজ আসতে না পারে সেজন্য কাজ করার আহ্বান রাখেন তিনি। শুধুমাত্র ত্রিপুরা রাজ্যই নয় সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিজেপি বড় ভূমিকা নিয়েছে। এই অঞ্চলের ৯ হাজারের বেশি জঙ্গি সদস্য আত্মসমর্পণ করেছেন।

নরেন্দ্র মোদির উত্তর পূর্বের উন্নয়নের জন্য দিনরাত কাজ করছেন বলে দাবি করে তিনি বলেন মনিপুরী ভাষাকে প্রাথমিক শিক্ষায় যুক্ত করা হবে। রাজ্যের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে রাজ্যবাসীর গড় আয় ৭০ হাজার থেকে বাড়িয়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা করা সম্ভব হয়েছে বর্তমান বিজেপি সরকারের সময়।

বিজেপি সরকার আবার ক্ষমতায় এলে প্রতিটি গরিব পরিবারকে বছরে দুটি করে রান্নার সিলিন্ডার বিনামূল্যে দেওয়া হবে বলেও অঙ্গীকার করে অমিত শাহ বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে রাজ্যের সব গরিব মানুষকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। কলেজ ছাত্রীদেরকে বিনামূল্যে স্কুটি দেওয়া হবে। পিএম কৃষাণ প্রকল্পে বর্তমানে যে ৬ হাজার টাকা করে বছরে এক একটি কৃষক পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে তা বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা করা হবে। রাবার, বাঁশ, চাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য ২০০০ কোটি টাকার আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। কৈলা শহরের হীরাছড়া এলাকায় আরও একটি নতুন বিমানবন্দর গড়ে তোলা হবে।

এদিন অমিত শাহ দ্বিতীয় ও শেষ সভাটি করেন সিপাহীজলা জেলার বিশ্রামগঞ্জ এলাকায়। সবশেষে আগরতলা একটি রোড শোতে অংশ নেবেন। রোববার রাতেই দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে তার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
এসসিএন/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।