ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন মাধবীলতার স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মে ৯, ২০২৩
পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন মাধবীলতার স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার

কলকাতা: পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন মাধবীলতার স্রষ্টা দুই বাংলার জনপ্রিয় সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। তার বিদায় বেলায় শোক প্রকাশ করলেন সবাই।

শোকাহত বাংলা। শেষ হলো বাংলা সাহিত্যের আরও একটি যুগ।

চিরকাল বাম ঘরানার মানুষ ছিলেন সমরেশ। কোনোদিন বিলাসিতা পছন্দ করেননি। তাই তার শেষ বিদায়বেলায় কোনো আড়ম্বর না হোক এটাই ছিল তার শেষ ইচ্ছে। সে কারণে রাজ্য সরকারের গান স্যালুট বা সরকারি রীতি-আচার ছুতে পেল না তার নশ্বর শরীর। একজন সাধারণ বাঙালি হিসেবেই বিদায় নিলেন বাংলার মাটি থেকে। সরকারি উদাসীনতা থাকলেও স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেল সাহিত্যপ্রেমী বাঙালির। তবে তারাও আজ সংখ্যালঘু। তাই ভিড় দেখা গেল না সমরেশের বিদায়বেলা। বুদ্ধিজীবী, বিদ্বজনরা নেই। তাই বাংলাদেশ মিডিয়া ছাড়া সাহিত্যিকের বিদায়বেলা দেখা মিলল না কলকাতার মিডিয়ার। তবে দু-একটা সংবাদমাধ্যমের ব্যতিক্রমী চরিত্র দেখা গেল।

গত সোমবার (৮ মে) বিকেলে কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। হাসপাতালের হিমাঘারে রাখা হয়েছিল তার মরদেহ। মঙ্গলবার (৯ মে) ভোরের আলো ফুটতেই পরিবারের তরফে সাহিত্যিকের মরদেহ নিয়ে আসা হয় তার বাসভবনে। উত্তর কলকাতার শ্যামনগরের সেই বাসভবনে শ্রদ্ধা জানাল সমরেশ ভক্তরা।

কারো হাতে ছিল ফুলের তোড়া, কারো হাতে ফুলের মালা, শেষ রক্তিম শ্রদ্ধা জানাতে অনেকের হাতেই ছিল গোলাপ ফুল। সবাই শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাহিত্যিককে। সাধারণদের পাশাপাশি শ্রদ্ধা জানিয়েছে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন, ইন্দো বাংলা প্রেসক্লাব। শ্রদ্ধা জানান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বোস ও সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম।

এরপর স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় মরদেহ বের করা হয় বাসভবন থেকে। শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় কলকাতার নিমতলা মহাশ্মশানে। মহম্মদ সেলিমের অভিমত, তার মনুষ্যত্ববোধ, তার জীবনবোধ, তার মূল্যবোধ সে শুধু তার জীবদ্দশায় নয়, তার মৃত্যুতেও ধরে রাখলেন। আজকে যেখানে কেনাবেচা চলছে। লেখক জগৎ যখন অর্থের বিনিময়ে মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেছেন। সেখানে তার শেষ ইচ্ছা এবং তার পরিবারের সেই মূল্যবোধের জন্য ধন্যবাদ জানানো, আমরা কৃতজ্ঞ।  

বিমান বোস বলেন, তিনি তার জীবনটাকে বাংলা সাহিত্যের জন্য উদযাপন করেছেন। মৃত্যুতেও সেই বিশ্বাস তিনি ধরে রাখলেন। তার লেখাতে সব সময় বাস্তব প্রেক্ষাপটে ছবি ভেসে উঠেছে। কারণ তিনি কারো ফরমায়েশ বা তাবেদারি করেননি। যেভাবে সমাজকে দেখেছেন, সময়টাকে দেখেছিলেন তাই ব্যক্ত করেছিলেন। তাই একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বিদায় নিলেন।

একদিকে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মঙ্গলবার পঁচিশে বৈশাখ। অর্থাৎ রবীন্দ্রজয়ন্তী। অপরদিকে বাংলার মাটি থেকে চিরতরে বিদায় নিলেন দুই বাংলার বিশিষ্ট সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। তার মৃত্যুতে একটা যুগের অবসান ঘটল।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২৩
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।