ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

রাকেশের পর এবার ইন্দিরা গান্ধীকে চাঁদে পাঠালেন মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
রাকেশের পর এবার ইন্দিরা গান্ধীকে চাঁদে পাঠালেন মমতা

কলকাতা: চন্দ্রযান ‘বিক্রম’ চাঁদের মাটি ছোঁয়ার সফলতায় উচ্ছ্বসিত ভারতবাসী। এ নিয়ে রাজনৈতিক চর্চার চলছে পুরোদমে।

 

সেই চর্চায় অনেকটা এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিক্রমের চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পর থেকে তার বক্তব্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন ভাইরাল। সম্প্রতি তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতীয় মহাকাশচারী রাকেশ শর্মার বদলে বলিউড অভিনেতা, চিত্রপরিচালক রাকেশ রোশনের নাম বলেছিলেন। যিনি ‘কৃষ’খ্যাত ঋত্বিক রোশনের বাবা। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ট্রোলের শিকার হচ্ছেন মমতা।  

আর তা শেষ হতে না হতেই ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীকেও চাঁদে পাঠিয়ে দিয়েছেন মমতা।

চাঁদে বিক্রমের সফল অবতরণ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গত সোমবার (২৮ আগস্ট) মমতা বলেছিলেন, এর আগেও আপনারা জানেন ইন্দিরা গান্ধী চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছিলেন। সালটা ১৯৬৯ বা ১৯৭০- এই সময় হবে। আমি তখন খুব ছোট ছিলাম। আমার মনে আছে আমি তখন খুব কাগজ পড়তাম, আনন্দবাজার পড়তাম, কিন্তু ওটা এখন পড়ি না। তখন আমি একটা প্রতিবেদন দেখেছিলাম। ইন্দিরা গান্ধী যখন চাঁদে পৌঁছালো, রাকেশকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ‘উপর সে হিন্দুস্তান ক্যাইসা লাগ রাহা হে। তিনি বলেছিলেন সারে জাহা সে আচ্ছা। ’

সোমবার নিজের দলের ছাত্রপরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই ভুল মন্তব্য করে বসেন মমতা।  

তার এই বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করছে। মমতার ওই মন্তব্যের পরে সামাজিক মাধ্যমজুড়ে মিমের বন্যা।

তাতে কেউ লিখেছেন, চাঁদে ভারত পৌঁছানোর মিশনে কয়েকজন বাঙালি ছিলেন। আর এক বাঙালি ছিলেন ইন্ডিয়াতে। যিনি চাঁদে মানুষ পাঠিয়ে সেখান থেকে মর্তে লাইভ কথোপকথনের ঘটনা বলে এখন পৃথিবীতে জুড়ে ভাইরাল।

এখানেই শেষ নয়, চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণের শেষ মুহূর্তের ছবি গণমাধ্যমগুলিতে সম্প্রচারিত না করানো নিয়েও নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা।

তিনি বলেছেন, ল্যান্ডিংটা দেখাই গেল না। সকলেই রেডি হয়ে বসেছিল। আমি নিজেও টিভির সামনে বসেছিলাম। ভাবছি কী করে ল্যান্ডিংটা করছে। স্মুথ ল্যান্ডিং, নাকি টাফ ল্যান্ডিং হয়, না রাফ ল্যান্ডিং, না স্ট্রং ল্যান্ডিং। কিন্তু, দেখতে পেলাম না। টিভি বন্ধ করে দিলাম।  

টিভি বন্ধ করে দেওয়ার কারণ জানাতে তিনি বলেন, আমার না দেখার কারণ ওই লাইভের সঙ্গে আরও একজনের মুখ ভেসে উঠেছিল।

এ কথা বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা বলেছিলেন তিনি।

এর আগে ২৩ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন মমতা। সেই সময় চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদে অবতরণ ও ভারতের মহাকাশ কাহিনি নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মমতা বলেছিলেন, তারা যখন চাঁদের মাটিতে পৌঁছলেন, ইন্দিরা গান্ধী তখন রাকেশ রোশনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন মহাকাশ থেকে ভারতকে কীরকম দেখতে লাগছিল? প্রত্যুত্তরে রাকেশ রোশন বলেছিলেন সারে জাহা সে আচ্ছা। যা নিয়েও চরম ট্রোলের মুখে পড়ে মমতা।  

প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন রাকেশ শর্মা। পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশযানে চেপে তিনি মহাকাশে গিয়েছিলেন।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মমতার এই ভুল বলাটা অনেকের মনে হতে পারে মুখ ফসকে ভুল বলছে। আদতে তা নয়। যাতে এসব ভাইরাল হোক অর্থাৎ ভুল হোক বা ঠিক সবসময় প্রচারের আলোয় থাকা। এটাও নাকি রাজনৈতিক কৌশল।

যেমনটা ২০১৯ সালে ভারতে লোকসভা ভোটের আগে গরুর দুধে সোনা আবিষ্কার করেছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি প্রকাশ্যে একাধিকবার বলেছিলেন, গরুর দুধে সোনা আছে। তাতে তিনি কম ট্রোল হননি। তবে নাকি এর থেকে বিজেপিও ফায়দা তুলেছিল। যার ফল স্বরূপ পশ্চিমবঙ্গের একসময় যে দলের সেভাবে অস্তিত্ব ছিল না। সেই দল গত লোকসভা ভোটে রাজ্যে ৪২টা আসনের মধ্যে ১৮ দখল করতে পেরেছিল। ফলে মমতার এই ভুল বাচনভঙ্গি আদতে তার দলকে কি লাভজনক অবস্থায় রাখে তা সময় বলবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।