ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ইলিশ ছাড়াই উপকূলে ফিরছেন পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
ইলিশ ছাড়াই উপকূলে ফিরছেন পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীরা

কলকাতা: খারাপ আবহাওয়ার জেরে গভীর সমুদ্র থেকে ইলিশ ছাড়া উপকূলে ফিরছেন পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবী ট্রলার। ইলিশ না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে অন্য মাছ নিয়ে ফিরতে হচ্ছে মৎস্যজীবীদের।

 

এতে বড়সড়ো প্রভাব পড়তে পারে ইলিশের দামে, এমনটা মনে করা হচ্ছে।  

তার ওপর নদী এবং সমুদ্রের উত্তাল অবস্থা ক্রমশ বাড়ছে। কয়েকদিন আগে খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে ট্রলার থেকে পড়ে এক মৎস্যজীবী গভীর সমুদ্রে তলিয়ে যায়। যার খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে একপ্রকার বুকে ভয় নিয়ে মৎস্য বন্দরের দিকে ফিরতে শুরু করেছে ট্রলারগুলি।

কয়েকদিনের মধ্যে সব ট্রলার উপকূলে ফিরে আসবে বলে জানিয়েছেন, রাজ্যটির দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ অঞ্চলের মৎস্যজীবী ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র।  

তিনি জানিয়েছেন, আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় মৎস্যজীবীরা তাড়াহুড়ো করে গভীর সমুদ্র থেকে মৎস্য বন্দরে ফিরতে শুরু করেছে।  

তবে এখনও সমুদ্রে পর্যাপ্ত ইলিশ আছে বলে, মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু, আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে সেই মাছ ধরা তাদের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে মৌসুমের মাঝখানে ইলিশ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হবে তা ভাবতে পারছেন না কেউই।

উল্লেখ্য, এক একটি ট্রলার সমুদ্রে পাঠাতে প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ রুপি খরচ করতে হয়। সেই অর্থ না উঠলে আগামীদিনে ট্রলার সমুদ্রে আবার পাঠাবে কিনা তার চিন্তা করছেন ট্রলার মালিকরা। এই অবস্থা চলতে থাকলে পশ্চিমবঙ্গে বাংলার ইলিশের দাম যে বাড়তে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।  

জানা যায়, বিশ বছরে পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের উৎপাদনে ৮০ হাজার টন থেকে নেমে এসেছে ১১ হাজার টনে। সরকারি উদাসীনতা এবং অতিমাত্রায় জাটকা ইলিশ ধরাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারণে, রাজ্যবাসীকে ভারতের গুজরাট আর মিয়ানমারের ইলিশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

তবে এরই মধ্যে রাজ্যের মৎস্য ব্যবসায়ীদের আশার আলো দেখাচ্ছে প্রতিবেশী বাংলাদেশ। জানা গেছে, বিগত বছরগুলোর মত চলতি বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিতে চলেছে বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।  

ইতোমধ্যে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে। যা আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।

গত বছর ২৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ৫০ টন ইলিশ আনতে পারবে বলে জানিয়েছিল, বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সে বছর রপ্তানি চালু ছিল ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।  

তারও আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৪৬০০ মেট্রিক টন ইলিশ আসার কথা থাকলেও, সেবার সময় পার হওয়ার কারণে ভারতে এসেছিল ১২০০ মেট্রিক টন। যে কারণে, ওই বছর ইলিশের আকাল দেখা গিয়েছিল। বাজার ঘুরেও মেলেনি বাংলাদেশের ইলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।