ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

গঙ্গার পানি দিয়ে ধোয়া হবে কলকাতা, উদ্যোগ মেয়র ফিরাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
গঙ্গার পানি দিয়ে ধোয়া হবে কলকাতা, উদ্যোগ মেয়র ফিরাদের

কলকাতা: নতুন বছরের শুরুতে শহর কলকাতা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে মেয়র ফিরাদ হাকিম। এবার গঙ্গার পানিতে ধুলোর আস্তরণ ধুয়ে শহরবাসীকে ঝকঝকে পরিষ্কার কলকাতা উপহার দেবে কলকাতা করপোরেশন।

গাড়িতে করে বিশেষ স্প্রে মেশিনের সাহায্যে গঙ্গার পানি দিয়ে শহরের রাস্তাঘাট, গাছপালা, বাগানবাড়ি, গাড়ি থেকে ধুলোর পাহাড় ধুয়ে-মুছে সাফ করার উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা করপোরেশনের জলনিকাশি বিভাগ। এ মুহূর্তে সেই নিয়েই প্রস্তুতি চলছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।

দিনের পর দিন শহরে ধোঁয়া ও ধুলোর জেরে ধূসর হয়ে উঠেছে কলকাতা। বিশেষ করে শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য রাস্তাঘাট ও গাছপালায় মোটা ধুলোর আস্তরণ পড়ে যায়। তার সঙ্গে রয়েছে শহরজুড়ে গাড়ির ধোঁয়া ও বহুতল ভবন নির্মাণের বালি-সিমেন্টের ধূলিকণা। এ পরিস্থিতিতে শহরের সৌন্দর্যায়নের অংশ হিসেবে গঙ্গার পানি ব্যবহার করে শহর সাফাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কলকাতা করপোরেশনের তরফে।

এ নিয়ে জলনিকাশি বিভাগের মেয়র পরিষদ তারক সিং বলেছেন, গঙ্গা লাগোয়া মায়ের ঘাট, দই ঘাট ও নর্থপোর্ট থেকে পুরসভা যতটা গঙ্গার পানি তোলে সেই পানি পুরোপুরি ব্যবহার হয় না। সেই বাড়তি পানি দিয়েই শহর ধোয়া হবে। এ বিশাল কর্মকাণ্ডকে খুব দ্রুত শুরু করতে চায় কলকাতা করপোরেশন। সেজন্য ১৫ বছরের পুরোনো বাতিল হয়ে যাওয়া পুরসভার পানির গাড়িগুলো ব্যবহার করা হবে বলে জানান মেয়র পরিষদ।

মূলত, করোনা মহামারির সময় রাস্তাঘাট স্যানিটাইজেশনের জন্য ব্যবহৃত স্প্রে মেশিনের মতো একটি যন্ত্র ওই পুরোনো গাড়ির ছাদে বসিয়ে গোটা শহরের রাস্তাঘাট, গাছপালা ইত্যাদি সাফাই করা হবে। তারক সিং বলেছেন, শহর সাফাইয়ের কাজ হবে রাতের বেলায়। ফলে বিশালাকার গাড়ি শহরের বুকে চালাতে যেমন সমস্যা হবে না। তেমন সকালে উঠে একটা স্বচ্ছ ও নির্মল কলকাতা পাবে শহরবাসী। তবে আপাতত গাড়ির মাধ্যমে হলেও পরে মাটির তল দিয়ে যাওয়া পাইপলাইন দিয়ে শহর সাফাইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে করপোরেশনের।

একসময় আদি কলকাতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির জন্য গঙ্গার ওপরেই নির্ভরশীল ছিলেন শহরবাসী। গঙ্গার সঙ্গে গোটা কলকাতার মাটির তল দিয়ে পাইপলাইন বসানো রয়েছে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে। গঙ্গায় জোয়ার এলে সেসব পাইপলাইন দিয়ে ফোয়ারার মতো পানি পড়তো। সে সময়কার শহরবাসী পানীয় জল বাদে সেই গঙ্গার পানি দিয়েই চালাতো নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজকর্ম। কিন্তু আধুনিক কলকাতার মানুষ দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য গঙ্গার পানির ওপর নির্ভরশীল নয়। ফলে সেসব পাইপলাইনের অধিকাংশই এখন অকেজো।

করপোরেশনের ভাবনায় সেসব পাইপলাইনগুলো আগের মতো সচল করার। এতে যেমনি জোয়ারের সময় পানি মজুদ রাখা যাবে, তেমন প্রয়োজনে অন্য সময় পাম্পের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করা যাবে। সেই নিকাশি ব্যবস্থার জন্য ভারতের সবচেয়ে নামি আইআইটির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে, যা পশ্চিমবঙ্গে মেদিনীপুরে অবস্থিত। যাকে ভারতবাসী আইআইটি খড়গপুর নামেই চেনে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে খড়গপুর আইআইটির শিক্ষার্থীরা। কীভাবে আধুনিক কলকাতায় পুরোনো পাইপলাইনের মাধ্যমে গঙ্গার পানি ব্যবহার করে শহর পরিষ্কার করা হবে সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে মেয়র ফিরাদ হাকিমের কাছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে তখন আর গাড়ির মাধ্যমে গঙ্গার পানি স্প্রে করতে হবে না। শহরবাসী এক নতুন রূপ পাবে মহানগরী কলকাতার।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।