ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বাংলানিউজের মুখোমুখি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
বাংলানিউজের মুখোমুখি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পশ্চিমবঙ্গে সদ্য মুক্তি পেয়েছে বাঙলা চলচ্চিত্র 'জুলফিকার'। পরিচালনা সৃজিত মুখোপাধ্যায়।

পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে সৃজিত মুখোপাধ্যায় এমন একটি নাম যার কাছ থেকে দর্শক প্রতিটি চলচ্চিত্রে কিছু নতুনত্ব আশা করেন। এরই মধ্যেই সৃজিত মুখোপাধ্যায় তৈরি করেছেন বাইশে শ্রাবণ, অটোগ্রাফ, জাতিস্মর থেকে রাজকাহিনীর মতো বিখ্যাত বেশ কিছু চলচ্চিত্র। আর এই চলচ্চিত্রগুলির মাধ্যমেই তিনি তৈরি করেছেন এক বিশেষ ঘরানা।

'জুলফিকার' সেই ঘরানায় একটি নতুন চলচ্চিত্র।

‘জুলফিকার’ মুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই বাণিজ্যিক দিক থেকে সফল শুধু নয়,  সমালোচকদের কাছেও এই ছবি যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। চলচ্চিত্রটি দেখে উচ্ছ্বসিত দর্শকরাও। এই প্রথম শহর কলকাতা এবং শেক্সপিয়রের দুটি নাটককে কোনো বাঙলা চলচ্চিত্রে এতো সফলভাবে মেলানো হয়েছে।

চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট কলকাতার  বন্দর এলাকা। গার্ডেনরিচ, খিদিরপুর, মেটিয়াবুরুজ এবং তার সংলগ্ন এলাকা ঘিরে গড়ে ওঠা অন্য এক কলকাতার গল্প। যেখানে শিপিং মাফিয়া বা কলকাতার অন্ধকার জগতের অলিতে গলিতে মিশে যায় ক্ষমতা, লোভ, প্রতিযোগিতা আর লড়াই। আর এই জগতেই মিলেমিশে যায়  শেক্সপিয়রের একাধিক চরিত্র। ক্যামেরার মাধ্যমে মানুষের মনের গভীরে থাকা প্রবৃত্তিগুলিকে তুলে এনেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। এবং এই কাজে তিনি একশো শতাংশ সফল।

একসঙ্গে এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন একাধিক নায়ক। একদিকে আছেন দেব, অন্য দিকে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে আছেন যিশু সেনগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও  অঙ্কুশ প্রমুখ। অন্যদিকে আছেন পাওলি দাম এবং নুসরাত জাহানের মতো অভিনেত্রী। এই চলচ্চিত্র নিয়ে বাংলানিউজের মুখোমুখি হয়েছিলেন পরিচালক।

বাংলানিউজ:‘জুলফিকার’-এ টলিউডের প্রায় সব নায়ককে হাজির করেছেন। বারবার এত নায়ক নিয়ে ছবি করেন কেন?

সৃজিত মুখোপাধ্যায়: আমি সবসময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভালোবাসি। অনেকদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল একটা 'ম্যাগনাম ওপাস' ছবি করার। কিন্তু ভাবা আর কাজে করা তো এক নয়। এতজন নায়ককে এক প্ল্যাটফর্মে আনাটা সবসময়ই কঠিন ছিল। অনেক রকম ইগো কাজ করে। শেক্সসিপয়রের নাটকে প্রচুর উপাদান থাকে। একটা ছোট চরিত্রও অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই এতজন স্টার যে আপনি বলছেন তাঁদের জাস্টিফাই করার এটাই তো সেরা সুযোগ।

বাংলানিউজ: শেক্সপিয়র নিয়ে কাজ করার পেছনে ভাবনাটি কি?

সৃজিত মুখোপাধ্যায়:  আমার অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল শেক্সপিয়র নিয়ে ছবি করব।   শেক্সপিয়রের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল জুলিয়াস সিজার দিয়ে। শেক্সপিয়রের গল্পগুলো বিরাট একটা ক্যানভাস। আমার ইচ্ছেটা পূরণ করল জুলফিকার। আর এটা তো শুধু জুলিয়াস সিজার নয়, অ্যান্টনি-ক্লিওপ্যাট্রাও আছে।

বাংলানিউজ: মাফিয়াদের নিয়ে ছবি তো কম হয়নি। আপনার ছবিতে নতুন কি এল?

সৃজিত মুখোপাধ্যায়: প্রেক্ষাপটটা নতুন। আন্ডারওয়ার্ল্ড। কলকাতার শিপিং মাফিয়া বা কলকাতার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ে বাংলা ছবিতে সেভাবে কাজ হয়নি।   গার্ডেনরিচ, খিদিরপুর, মেটিয়াবুরুজ---কলকাতার এই তিনটে এলাকাই কিন্তু আকর্ষণীয়। চেনা কলকাতাকে নতুন করে চিনতে পারবেন দর্শক।

বাংলানিউজ: বলা হয় একাধিক নায়ককে একসঙ্গে একই পর্দায় আনাটা খুবই কঠিন কাজ। আপনার কি মনে হয়?

সৃজিত মুখোপাধ্যায়: এই চলচ্চিত্রে প্রসেনজিৎ, দেব, পরমব্রত, যিশু, অঙ্কুশ, পাওলি, নুসরাত সবাই আছে। এটা একটা মাল্টিস্টার ছবি। যেহেতু দুটো খুব গুরুত্বপূর্ণ নাটক শেক্সপিয়রের, তাই আমার মনে হয়েছিল দুটো নাটক একত্র করলে অনেকগুলো ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ চরিত্র তৈরি করা যাবে। ফলে কাস্টিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেকগুলো ইন্টারেস্টিং চরিত্র তৈরি হয়।

বাংলানিউজ: চিত্রনাট্য লেখার সময় কাউকে মাথায় রেখে লিখেছিলেন?
সৃজিত মুখোপাধ্যায়: শুধু মার্কাসের চরিত্রটা প্রথম থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম এটা ‘দেব’ করবে। লেখার সময় এটাই ফিক্সড ছিল। কারণ এটা ‘দেব’ ছাড়া কেউ করতে পারত না।

বাংলানিউজ: আর প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়? তাকে তো আপনি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে বিভিন্ন ভাবে পর্দায় এনেছেন।

সৃজিত মুখোপাধ্যায়: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রটা বেশ ইন্টারেস্টিং। আমি বরাবরই অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে ব্যবহার করেছি। অটোগ্রাফ, জাতিস্মর, বাইশে শ্রাবণ সব ছবিতেই। কিন্তু এবার আমি চেয়েছিলাম প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্রটা পর্দায় ধরতে। ওঁর ক্যারিশমাটাকে কাজে লাগাতে। আমি বলেই দিয়েছিলাম এখানে অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নয়, স্টার বুম্বাদাকে (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ডাক নাম) চাই।

বাংলানিউজ: আর নায়িকারা? আপনার ছবিতে নায়িকারা যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়ে থাকেন।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়: নায়িকারাও আছেন স্বমহিমায়। নুসরাতের সঙ্গে প্রথম কাজ করলাম। ক্লাসিক বিউটি বলতে যা বোঝায় নুসরত তাই। পাওলির সঙ্গেও এটা প্রথম কাজ। তবে পাওলির অভিনয় নিয়ে সকলেই উচ্ছ্বসিত। ছোট রোল। অসাধারণ অভিনয় করেছে।

বাংলানিউজ: জুলফিকারের সফলতা কামনা করি।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়: ধন্যবাদ আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে বাংলানিউজের সমস্ত পাঠককে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮ , ২০১৬
ভিএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।