ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

কলকাতা বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
কলকাতা বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ৪৩তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) ছিল বাংলাদেশ দিবস। এদিন ‘বাংলা সাহিত্য ও বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে এক সেমিনার আয়োজন করে পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ড এবং কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি।
 

বক্তব্যের শুরুতেই খালিদ বলেন, প্রথমেই ভাষার মাসে স্মরণ করতে চাই ভাষাশহীদদের। যারা বাংলা ভাষার জন্য পাকিস্তানি বর্বর সেনাদের হাতে প্রাণ দিয়েছিলেন।

অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করি বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের এবং স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ভারতীয় সেনাদের অবদান। এছাড়া তৎকালীন সময় এই পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি শরণার্থীদের যারা আশ্রয় দিয়েছিলেন তাদেরও আমরা কোনোদিন ভুলবো না। আজ ৪৩তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় পালিত হচ্ছে বাংলাদেশ দিবস। এই ৪৩তম বইমেলায় বাংলাদেশ ২৫ বছর ধরে অংশগ্রহণ করে আসছে। আর এই অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে গর্বিত বোধ করছি।
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পর সাড়ে সাতকোটি বাঙালি একত্রিত হয়েছিল। তারা মুক্তির জন্য যুদ্ধ করেছিল। প্রাণ দিয়েছিলেন ৩০ লক্ষ শহীদ। এরপরই আমরা পাই স্বাধীন বাংলাদেশ। এই স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হাত ধরে। আমাদের কালরাত ১৫ আগস্টের সেই রাত। সাময়িকভাবে অন্ধকার নেমে এসেছিল গোটা বাংলাদেশে। এরপর ১৯৮১ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ফের বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছি।
 
বইমেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানেও যেমনি বইমেলা হয় তেমনি বাংলাদেশে একমাস ধরে একুশে বইমেলা হয়। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার হাত ধরেই সেই বইমেলার সম্প্রসার ঘটে। বাংলা ভাষা তার আমলেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি পায়। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশ যেমন পথচলা শুরু করেছিল, তেমনি আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে।
 
সেমিনারে পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট লেখক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, নেতাজি বলতে আমরা সুভাষচন্দ্রকে বুঝি, স্বামীজি বলতে বিবেকানন্দকে বুঝি, তেমনি বঙ্গবন্ধু বলতে আমরা শেখ মুজিবকেই চিনি। অনেকেই বন্ধু হতে পারে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু একজনই হন। পানি ছাড়া খাটি গরুর দুধ বলতে আমরা যা বুঝি, তেমনি বঙ্গবন্ধু একশো ভাগ খাঁটি বাঙালি পুরুষ। তাঁর কণ্ঠস্বর মেঘের গর্জনের মতো। তিনি প্রকৃত পুরুষ এবং খাঁটি নেতা। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ যাবতকালে গোটা পৃথিবীতে গবেষণা করছে। আমিও তাদের কিছুটা সহচর হয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমিও কিছুটা গবেষণা করছি। আমার ইচ্ছা আছে ‘কলকাতা ও বঙ্গবন্ধু’ নামে একটা বই বের করার। বর্তমানে আমি তা নিয়ে ব্যস্ত আছি।
 
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব বেগম আখতার মমতাজ ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালযয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল।  

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ এবং কলকাতা পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায়। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। আলোচক ছিলেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক ভুইয়া।
 
সেমিনারের পর ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন হৈমন্তী মঞ্জুরী, ড. লীলা খান ও কিরণ চন্দ্র রায়। সঙ্গে ছিল ২২ শিশুশিল্পীর নৃত্যনুষ্ঠান। বর্ণিল এ অনুষ্ঠানে কলকাতাবাসীর ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।