ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ছিটমহল হস্তান্তর হয়েছে আমার সময়ে: মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৯
ছিটমহল হস্তান্তর হয়েছে আমার সময়ে: মমতা দিনহাটার সভা মঞ্চে মমতা বন্দ্রোপাধ্যায়

কলকাতা: বুধবার থেকে রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সভার জন্য মমতার প্লেন শুরুতে নামতেই দেওয়া হয়নি। অবতরণের পর কোচবিহার জেলার দিনহাটার সভা মঞ্চে উঠেই সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি।

মমতা বলেন, আমি আরও আগে এখানে আসতে পারতাম! কিন্তু শিলিগুড়িতে মোদীবাবু ভাষণ শেষ করে যতক্ষণ না কলকাতায় যাচ্ছেন ততক্ষণ আমার প্লেন আকাশ থেকে নামতে দেওয়া হয়নি। উনি ভিআইপি, তাই নিরাপত্তা দরকার।

বাকিদের সমস্যা হোক তাতে ওনার কী এসে গেল!

এরপর মমতা বলেন, দিনহাটা বাংলাদেশ লাগোয়া অঞ্চল। এর আগে দুই দেশের অমীমাংসিত সমস্যা ছিল ছিটমহল। আমি ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ সরকারের সাথে কথা বলে এই ছিটমহল সমস্যা সমাধান করেছি। এখানে ছিটমহলবাসীদের জন্য জমি দিয়েছি। ছিটমহল খাতে এগারোশো কোটি রুপি ব্যয় করেছি। আজ তাদের কেউ ছিটমহলবাসী বলবে না, আজ তারা আমাদেরই লোক।

প্রথম থেকেই মমতার ভাষণে সুর ছিল চড়া। ভাষণের শুরু থেকে শেষ অবধি নরেন্দ্র মোদীই ছিলেন তার টার্গেট।  

বুধবারই (০৩ এপ্রিল) রাজ্যে দুটি জনসমাবেশ করেন নরেন্দ্র মোদী। আর এই দুটি সমাবেশেই তারও টার্গেট ছিলেন মমতা।

তাই প্রথম নির্বাচনী সফরে মমতাও ছেড়ে কথা বলেননি মোদীকে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওষুধের যেমনি মেয়াদ শেষ হয় তেমনি মোদি বাবুরও মেয়াদ শেষ। তাই আজ থেকে ওনাকে ‘এক্সপ্যায়রি বাবু’ বলে ডাকবো। তবে আমি ওনার এক্সপ্যায়রি চাই না। এক্সপ্যায়রি চাই ওনার সরকারের।  

তিনি বলেন, রাজ্যে এলো আর ‘এক্সপ্যায়রি বাবু’ মিথ্যা কথা বলা শুরু করলো। তার (নরেন্দ্র মোদী) ৫৬ ইঞ্চি ছাতি। প্রতিদিন ৫৬ রকমের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেড়ান। মোদীবাবু আজ শিলিগুড়িতে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার গরিবদের জন্য কিছুই করে না।  

মমতা আরো বলেন, রাজ্যের ইতিহাস, ভূগোল কোনো কিছুরই খবর রাখেন না উনি (মোদী)। এদিকে নিজেকে দেশের চৌকিদার বলেন।  

দিনহাটার সভামঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, তার সরকার যা বলে তা করে দেখায়। মোদী সরকারের মতো মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয় না। কন্যাশ্রী, সবুজসাথী ছাড়া ২ টাকা কিলো দরে চাল, কৃষকবন্ধু, স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পেয়েছেন রাজ্যের গরিব মানুষ। শস্য বিমার পুরো অর্থটাই রাজ্য সরকার দেয়। কৃষিঋণে খাজনা মওকুফ করা হয়েছে। কোনো খবরই রাখেন না উনি। খালি বড় বড় মিথ্যা ভাষণ দিয়ে বেড়ান।  

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ওপেন মিটিং-এর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ক্ষমতা থাকলে একসঙ্গে ওপেন মিটিং করুন। মিটিংয়ে আপনি থাকবেন, আমি থাকব। আপনি প্রশ্ন করবেন, আমি উত্তর দেব। আমি প্রশ্ন করবো আপনি উত্তর দেবেন। সেই সৎ সাহস নেই আপনার, আমি জানি।

এদিন শিলিগুড়ির সভা থেকে মোদী আহ্বান জানান, যেই প্রার্থী হোক, ভোটটা আমাকে দিন। এর পাল্টা দিনহাটার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জোড়াফুলে ভোট দিয়ে বিজেপিকে বয়কট করুন। প্রত্যেকটা ভোট বিজেপির বিরুদ্ধে দিন। জোড়া ফুলে ভোট দিন। দিল্লিকে দেখিয়ে দিন। মোদীকে কবর দিন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৯
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।