এ দিনেই দুইবছর আগে জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) তকমা পায় কলকাতার রসগোল্লা। অবিভক্ত বাংলা তথা আজকের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাই রসগোল্লার জন্মস্থান।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিনা পয়সায় রসগোল্লা খাওয়ানোর আয়োজন করেছেন মিষ্টি বিক্রেতারা। ‘পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতি’র আওতায় রাজ্যের জেলায় জেলায় যে সংগঠনগুলো রয়েছে, তাদের অধীনস্থ দোকানগুলোই মূলত এই মিষ্টিমুখের আয়োজন করেছে।
মিষ্টিপ্রেমীরা জানেন, প্রকৃত রসগোল্লা যেমন-তেমনভাবে তৈরি হয় না। চিনির রসে ডোবানো হালকা হলদেটে রঙের গোলাকার মিষ্টি মানেই রসগোল্লা নয়। তাতে যদি স্টার্চ বা সুজি থাকে, তাহলে তো স্বাদের সর্বনাশ! রসগোল্লা হতে হবে শুধু ছানার। চাঁদের মতো সাদা, নরম তুলতুলে। সেখানে ভেজালের কোনো ঠাঁই নেই।
পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র কুমার পাল বলেন, আমরা রাজ্যের জেলায় জেলায় রসগোল্লা উৎসবের আয়োজন করেছি। সবাই যে নরম হালকা রসগোল্লা তৈরি করে, তা নয়। অনেকে একটু পুরনো ঘরানার ওজনদার রসগোল্লাও পছন্দ করেন। তবে সে যাই হোক না কেন, আমরা সবাইকে রসগোল্লা খাইয়ে দিনটি উদযাপন করতে চাই।
বৃহস্পতিবার কলকাতা তো বটেই, জেলায় জেলায় পশ্চিমবঙ্গের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা বিনামূল্যে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন সাধারণ মানুষদের। তাদের কথা, সবাইকে হয়তো খাওয়ানো যাবে না। ১৪ নভেম্বর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর জন্মদিন। এদিনই ভারতে পালিত হয় শিশু দিবস। তাই ছোট ছোট শিশু-কিশোরদের আগে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তারপর বড়দের।
কলকাতার বাগবাজারে রসগোল্লার স্রষ্টা নবীনচন্দ্র দাশের মূর্তিতে মালা দেওয়ার পাশাপাশি রসগোল্লা নিয়ে আলোচনার আয়োজন করেছে ব্যবসায়ী সমিতি। নবীনচন্দ্র দাশের উত্তরসূরি ও আরেক বিখ্যাত মিষ্টি প্রতিষ্ঠান কেসি দাশের কর্ণধার ধীমান দাশ বলেন, রসগোল্লা শুধু বাঙালির রসনার সঙ্গে নয়, একইভাবে বাঙালির সমাজ, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত।
রসগোল্লার জন্মদিনে উৎসবে মেতেছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা, তবে ক্ষোভ রয়েছে তাদের মনেও। প্রথমত, দুই বছর আগে জিআই তকমা পেলেও বিদেশে যতটা দরকার, ততটা প্রচার হয়নি রসগোল্লার। একইভাবে, মিষ্টির ওপর জিএসটি কর চাপানো নিয়েও তাদের অভিযোগ রয়েছে। করের চাপে একদিকে যেমন দাম বাড়ছে রসগোল্লাসহ অন্য মিষ্টির, সেভাবে বিক্রিও কমছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, বিদেশে রসগোল্লার প্রচার ও বাণিজ্য বাড়াতে সরকারের আরও উদ্যোগী হওয়া দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
ভিএস/একে