ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বামনেতার মেয়ে এখন মমতার দলের প্রার্থী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
বামনেতার মেয়ে এখন মমতার দলের প্রার্থী

কলকাতা: কলকাতার সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আগামী রোববার (১৯ ডিসেম্বর), প্রায় একপেশে নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের গদিতে বসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কারণ, সেভাবে বিরোধীদের প্রচারে দেখা মিলছে না।

চোখে পড়ছে শুধু শাসকদলের ব্যানার, পতাকা, ফেস্টুন। তবে, শাসক দলের এবারের প্রার্থী তালিকা দেখলে বোঝা যায়, দলের যেকোনো সিদ্ধান্তে এখনও শেষ কথা বলেন মমতা।

ফলে দিদির পছন্দের মুখই প্রার্থী তালিকায় জায়গা পেয়েছে। পাশাপাশি মমতার রোষে পড়ে সিটিভোট থেকে ৩৯ জন সাবেক কাউন্সিলার টিকিট পাননি। এছাড়া ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নিজের তৈরি নিয়ম ভেঙে ছয়জন বিধায়ক, মন্ত্রী, সাংসদকে সিটি ভোটের টিকিট দিয়েছেন মমতা।

তবে, কাউন্সিলার নির্বাচনে মমতার প্রার্থী তালিকায় বেশ কয়েকটি চমকের মধ্যে সবচেয়ে বড় চমক, দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরের ৯৬ নম্বর ওয়ার্ড। নারীদের জন্য সংরক্ষিত ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বামনেতা তথা রাজ্যের সাবেক মন্ত্রীর কন্যা বসুন্ধরা গোস্বামী।  

তিনি প্রয়াত বামনেতা ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে। বাম নেতার মেয়ে হলেও, বামবিরোধী দিদির দলের হয়েই ভোটযুদ্ধে প্রথম নেমেছেন বসুন্ধরা। পেশায় তিনি একজন মনস্তত্ত্ববিদ।

২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রয়াত হন বামফন্ট্রের আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামী। তারপরই বসুন্ধরার তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা ছড়িয়েছিল। সেই জল্পনা আরও বেড়েছিল যখন বামফ্রন্ট্র চেয়ারম্যান অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তার সমর্থনে তৃণমূলের মুখপত্র, জাগো বাংলায় কলম ধরেছিলেন বসুন্ধরা।  

প্রসঙ্গত, তৃণমূলের মুখপত্রের  সম্পাদকীয় কলমে অজন্তার লেখা ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক প্রবন্ধে উঠেছিল মমতার নাম। বামনেতার মেয়ে হয়ে তৃণমূলের মুখপত্রে লেখা এবং তাতে মমতার প্রশংসা নিয়ে সমালোচনায় মেতেছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা থেকে মুছে যাওয়া বামশিবির। কারণ দর্শানোর জন্য অজন্তাকে শোকজও করা হয়।

তখনই অজন্তার সমর্থনে এগিয়ে আসেন বসুন্ধরা। তৃণমূলের মুখপত্রে লেখেন, এটা বাস্তব যে বাংলার রাজনীতিতে নারীশক্তি নিয়ে প্রসঙ্গ উঠলে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া সম্পূর্ণ হতে পারে না। তাই অজন্তা তা লিখে কোনও ভুল করেননি। তবে, লেখায় বামপন্থিদের অবদানের অংশ অটুট রেখেই অজন্তার লেখাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন বসুন্ধরা। এসব কার্যকলাপের কারণে সম্ভবত দিদির নজরে আসেন বসুন্ধরা। আর সে কারণেই কলকাতার সিটিভোটে প্রার্থী হয়েছেন এবং শেষ সময়ের প্রচারে জোর বাড়িয়েছেন।

বাম আমলের মন্ত্রী, প্রয়াত ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে হয়ে একেবারে তৃণমুলে? বসুন্ধরার সটান উত্তর, ভোটের ময়দানে বাবা দাদার পরিচয় আসল নয়, রাস্তায় নেমে মানুষের কাজ করাটাই হলো আসল। তাই বাম নেতার মেয়ে হয়েও ডানপন্থি দলের হয়েও কাজ করত কোনও সমস্যা নেই বলেই, জানান বসুন্ধরা। যাদবপুরে বামেদের শক্তঘাটি থেকে বসুন্ধরাই জেতাই এখন তৃণমূলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
ভিএস/এএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।