ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

দফতর হারাচ্ছেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ, কার হাতে যাবে মন্ত্রণালয়?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
দফতর হারাচ্ছেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ, কার হাতে যাবে মন্ত্রণালয়?

কলকাতা: ২৩ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে ভারতের আর্থিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর (ইডি), আদালতের নির্দেশে ১০ দিনের ইডির রিমান্ডে রয়েছেন পার্থ ও তার ঘনিষ্ঠ অর্পিতা। জেরায় নিত্যদিন উঠে আসছে নানান গোপন সম্পত্তি ও অর্থের হদিশ।

তৃণমুল কংগ্রেসের মহাসচিবের এহেন অবস্থায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল।

ইতোমধ্যে মমতার নির্দেশে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সরকারি গাড়ি বিধানসভায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফেরত নেওয়া হয়েছে গাড়ির চাবি। আর বিধানসভায় গাড়ি রাখার পিছনে রহস্য দেখছে রাজনৈতিক মহল। তবে কি মন্ত্রিত্ব থেকে বাতিল হচ্ছেন, নাকি দফতরবিহীন মন্ত্রী থাকবেন পার্থ? এখন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্যটির রাজনৈতিক মহলে। কি হবে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর ভবিষ্যৎ? পার্থই থাকবে নাকি অন্য কেউ পেতে পারে শিল্প দফতর? নাকি মমতার হাতে যাবে? বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) মন্ত্রিসভার বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

এর আগে দেখা গিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে তৎকালীন পরিবহনমন্ত্রী মদন মিত্র গ্রেফতার হওয়ার পরও দীর্ঘ সময় তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা জানিয়ে দিয়েছিল, মদন মিত্র গ্রেফতার হলেও তার মন্ত্রিত্ব থাকবে। আবার ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তৃনমূল বিপুল জয়ের পরও নারদা চিটফান্ড কাণ্ডে রাজ্যের গ্রামন্নোয়ন (পঞ্চায়েত) মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মেয়র ও পরিবহসমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমসহ অনেকে স্বল্প সময়ের জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে মন্ত্রিত্বে থাকা নিয়ে কোনও হেরফের হয়নি।

সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছিল, বিজেপি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য সিবিআই, ইডি দিয়ে দলীয় নেতৃত্বদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। ফলে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর কোনও প্রশ্ন ওঠে না। তবে এবার পার্থর বিষয়টা ভিন্ন। খোদ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দোষ প্রমাণ হলে তার যাবজ্জীন হলেও দল বা সরকার, ইডির বিষয়ে মাথা গলাবে না। এমনকী গ্রেফতারের পর দলনেত্রীর সঙ্গে পার্থ যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে এড়িয়ে গেছেন মমতা।  

দলীয়সূত্রে জানা যায়, পার্থর ওপর বেজায় চটেছেন নেত্রী। আবার অপর সূত্রে জানা যায়, সহযোগিতা না পেয়েই নাকি প্রতিদিনই ইডির কাছে মুখ খুলছেন পার্থ ও তার ঘনিষ্ঠা অর্পিতা।

এই মুহুর্তে দুজনকেই রাখা হয়েছে কলকাতার ইডি দফতর সিজিও কমপ্লেক্সের ৫ তলায়। তবে পার্থ দোষী কি নির্দোষ সেটা সময়ই বলবে। কিন্তু পার্থ ও তার ঘনিষ্ঠাকে গ্রেপ্তার করে ইডি যে তথ্য প্রতিদিন তুলে আনছে তাতে অনেকটাই অস্বস্তিতে মমতার দল। তারমধ্যেই শিল্পমন্ত্রীর গাড়ি ফিরিয়ে নেওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে মমতার দলের অবস্থান কি হবে? তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কৌতুহল বাড়ছে। প্রশ্ন উঠেছে-তাহলে কি সাময়িকভাবে তার দফতর অন্য কেউ সামলাবেন? নাকি শিল্প দফতর মমতা নিজের হাতেই রাখবেন। তবে দ্বিতীয় সম্ভাবনাই প্রকট হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর অর্থ দফতরের দায়িত্ব নিজের হাতেই রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। পরবর্তীতে প্রতিমন্ত্রী করা হয় চন্দ্রিমা ভাট্টাচার্য্যকে। সূত্রে খবর, শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতেই রাখতে পারেন।

এর মধ্যে বিরোধীদের প্রশ্ন, কোনও শিল্পপতি যদি রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান তাহলে কার সঙ্গে দেখা করবেন? কে কথা বলবে তার অনুপস্থিতিতে? মন্ত্রী তো ইডির হেফাজতে। রাজনৈতিক মহলের মত, কতদিনে পার্থর জামিন মিলবে বা আদৌ মিলবে কিনা তা অনুমান করা সম্ভব নয়।

এই পরিস্থিতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্ত্রিত্ব বদল হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা বৃহস্পতিবার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
ভিএস/এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।