ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে ফের ‘ধুন্ধুমার’ কলকাতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে ফের ‘ধুন্ধুমার’ কলকাতা

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক চাকরি প্রত্যাশীদের মতো রাজ্য কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে আদালতে লড়াই চলছে। বুধবার (২৩ নভেম্বর) পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাল মমতার সরকারের বেতনভুক্ত ও পেনশনভুক্ত কর্মচারীদের ৩০টি সংগঠন।

এ নিয়ে ধুন্ধুমার কলকাতা এসপ্ল্যানেড ও বিধানসভা চত্বর।

আন্দোলন করতে নেমে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। দুই পক্ষের ধস্তাধস্তিতে আবারও রক্ত ঝরল রাজপথে। পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর কিল, চড় ও ঘুষি চালানোর অভিযোগও আনা হয়েছে। ঘুষি মেরে কিছু বিক্ষোভকারীর মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিক্ষোভের এ ছবি কলকাতায় কয়েকবার দেখা গিয়েছিল। এদিন যেন সেই ছবি ফুঠে ওঠে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের কলকাতার রানি রাসমনি অ্যাভিনিউতে আটকে দিলে তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দেয়।  

এ সময় দুপক্ষের মধ্যে চলে চরম ধস্তাধস্তি। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বেশকিছু রাজ্য সরকারের বেতনভুক্ত এবং পেনশনভুক্ত কর্মচারী বিধানসভার উদ্দেশ্যে আকাশবাণীর দিকে দৌড়াতে থাকেন। তাদের ধরতে ছুটে যায় পুলিশ। এসবের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের একটি বড় অংশ ওই পথেই পথ চলতির বেশ ধরে পৌঁছে যান বিধানসভার গেটের সামনে। বিধানসভা চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি হয়।

এদিনও কার্যত নাজেহাল অবস্থা হয় পুলিশের। ফলে নির্বিচারে চলে বলপ্রয়োগ। বিক্ষোকারীদের মধ্যে সরকারের বেতনভুক্ত, প্রবীণ পেনশনভুক্ত কাউকেই ছাড় দেয়নি পুলিশ। ধরতে গিয়ে পুলিশ কিল, ঘুষি মারে বলে তাদের অভিযোগ। একইসঙ্গে তাদের অভিযোগ, পুলিশ টেনে-হিঁচড়ে, চ্যাংদোলা করে প্রিজন ভ্যানে তোলে প্রবীণ বিক্ষোভকারীদের। অনেক পেনশনভুক্ত কর্মচারী রাস্তায় পড়ে যান। তাদের কারো মাথায়, কারো কোমরে আঘাত লাগে।

এক বিক্ষোভকারী বলেন, প্রাপ্য ডিএর জন্য লড়াই করছি সরকারের বিরুদ্ধে। যা পাওয়ার কথা, তা থেকে মাসে ১০-১২ হাজার রুপি করে কম পাচ্ছি। অথচ পুলিশ সরকারি কর্মী হয়েও আমাদের ওপর লাঠি চালাচ্ছে। পুলিশ ডিএ না পেলেও তার জন্য তাদের তো ক্ষোভ নেই। কারণ তাদের অনেক পথ জানা আছে। এটা লজ্জার। আমাদের ডিএ দিতেই হবে।

এক পেনশনভুক্ত ব্যক্তি বলেন, আমরা বৈধ প্রাপ্যের জন্য লড়াই করছি। এই জন্যই পথে নেমেছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবহার করলেন। আর কত সহ্য করব?

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে যারা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী, তাদের সঙ্গে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ডিএর পার্থক্য ৩৫ শতাংশ। কলকাতা হাইকোর্ট তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে মমতার সরকার। যদিও সেই মামলার শুনানি এখনও শুরু হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকেই এখন তাকিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মী ও পেনশনভোগীরা। এরমধ্যেই কেন্দ্রের সমান মহার্ঘ ভাতা কবে পাওয়া যাবে- সেই দাবিতে বুধবার পথে নামে রাজ্য সরকারের বেতনভুক্ত ও পেনশনভুক্ত কর্মচারীদের ৩০টি সংগঠন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ২৩ নভেম্বর ২০২২
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।