ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

বিএটিবি’র রাজস্ব ফাঁকি ৭শ’ কোটি টাকা

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৬
বিএটিবি’র রাজস্ব ফাঁকি ৭শ’ কোটি টাকা

ঢাকা: পাইলট ব্র্যান্ড সিগারেটে মিথ্যা মূল্যস্তর ঘোষণায় প্রায় ৭শ’ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)।
 
মূল্যস্তর কম দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির এ ঘটনা সম্প্রতি উচ্চ আদালতে প্রমাণ হওয়ায় অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।


 
শিগগিরই এ রাজস্ব পরিশোধ না করলে বিএটিবি’র বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআর’র একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
 
সূত্র জানায়, বিএটিবির বেনসন, গোল্ডলিফ, পাইলটসহ সব ব্র্যান্ডের সিগারেটে মূল্যস্তর ঘোষণায় সম্পূরক শুল্ক ও মূসক ফাঁকি দিচ্ছে এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

পাইলট ব্র্যান্ডের সিগারেটে মূল্যস্তর ঘোষণায় সন্দেহ হয় এনবিআর’র বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ)। এ নিয়ে কাগজপত্র যাচাই করেন কর্মকর্তারা।
পরে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এ তিন অর্থবছরের মধ্যম মূল্যস্তরের পাইলট ব্র্যান্ড সিগারেটের মূল্য ঘোষণায় গড়মিল পাওয়া যায়।
 
সূত্র আরও জানায়, পাইলট ব্র্যান্ড মধ্যম মূল্যস্তরে মূল্য ঘোষণার কথা থাকলেও নিম্ন মূল্যস্তর দেখিয়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক পরিশোধ করে বিএটিবি।
 
মিথ্যা মূল্যস্তর ঘোষণায় প্রতি প্যাকেটে সম্পূরক শুল্ক বাবদ ১৩ টাকা ৮৬ পয়সার বিপরীতে মাত্র ৪ টাকা ৭২ পয়সা রাজস্ব দিয়েছে বিএটিবি।
 
মিথ্যা মূল্যস্তর ঘোষণায় তিন অর্থবছরে পাইলট ব্র্যান্ডের সম্পূরক শুল্ক ও মূসক হিসেবে প্রায় ৭৯৮ কোটি ২৪ লাখ ২৩ হাজার ৫শ’ ৯৩ টাকা রাজস্ব ফাঁকি খুঁজে পায় এলটিইউ।
 
সূত্র জানায়, রাজস্ব ফাঁকি খুঁজে পাওয়ার পর এলটিইউ ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর বিএটিবি’র কাছে একটি দাবিনামা পাঠিয়ে তা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। বিএটিবি এ দাবিনামাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৫ সালে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। ৬ মার্চ উচ্চ আদালত এনবিআরের পক্ষে রায় দেয়।

আদালত বিএটিবি’র দাবিকৃত অংশ বাদ দিয়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ ৬৯৯ কোটি ৩৬ লাখ ৭৭ হাজার ৫শ’ ৬১ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে রাজস্ব ফাঁকি প্রমাণিত হওয়ায় রায়ের কপি হাতে পাওয়ার দিন থেকে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে এ রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশ দেন আদালত।
 
এলটিইউ’র একজন যুগ্ম কমিশনার বাংলানিউজকে বলেন, এক ব্র্যান্ডের রাজস্ব ফাঁকিতে প্রমাণ হয় অন্য ব্র্যান্ডেও বিশাল অঙ্কের ফাঁকি থাকতে পারে। আমরা খতিয়ে দেখছি। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর আমরা এ রাজস্ব আদায়ে বিএটিবিকে চিঠি দেব।

রাজস্ব পরিশোধ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

তামাক বিরোধী জোট প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ৪ স্তর বিশিষ্ট মূল্যস্তর প্রথা থাকার কারণে বিএটিবি বিশাল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকির সুযোগ পেল।

তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি ৪ স্তরবিশিষ্ট মূল্যস্তরের পরিবর্তে একটি মূল্যস্তর রাখার। এতে রাজস্ব ফাঁকির সুযোগ থাকবে না, একস্তরে বাড়তি রাজস্ব আদায় হবে।

চার মূল্যস্তরের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিএটিবিসহ সব সিগারেট কোম্পানি বছরে শত শত কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৬
আরইউ/জিসিপি/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।