শনিবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে এক সেমিনারে তারা এসব পরামর্শ দেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) ও বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট যৌথভাবেিএ সেমিনারের আয়োজন করে।
‘বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ এবং বাংলাদেশে এর প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সিনিয়র বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু। বিশেষ অতিথি ছিলেন রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান। এ সময় বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু বলেন, সম্প্রতি শুরু হওয়া বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে, তবে তা বেশি দিন স্থায়ী হবে না। যুক্তরাষ্ট্র চীনের রপ্তানি করা যেসব পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করেছে, তার পরিমাণ প্রায় ২৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আমেরিকার দুটো চেম্বার ইতোমধ্যে চীনের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে পরিচালিত একটি জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জরিপ অনুযায়ী, ৯৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের বিনিয়োগকে পুনরায় আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী নয়। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানসমূহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া প্রভৃতি দেশকে প্রাধান্য দিয়ে থাকবে।
চীনের সানসেট ইন্ডাস্ট্রিকে স্থানান্তরের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে উপযোগী গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপনের জন্য দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন, মানব সম্পদের দক্ষতা বাড়ানো এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতের ওপর গুরুত্বারোপে বেসরকারিখাতের প্রতি আহ্বান জানান বাণিজ্য সচিব।
ইপিবি-এর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য বলেন, মূলত চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ব্যবধান কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি চীনের অ্যালুমোনিয়াম ও স্টল পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করেছে। এতে দুটো বৃহৎ রাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ সৃষ্টি হয়। এতে আমাদের টিকে থাকতে সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে শুধুমাত্র চীনের সানসেট ইন্ডাস্ট্রির ওপর নির্ভর না করে ‘ফিউচার ইন্ডাস্ট্রি’রও গুরুত্বারোপের আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, চীনের সানসেট ইন্ডাস্ট্রি স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উৎকৃষ্ট স্থান গতে পারে। সেজন্য অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন, বাণিজ্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি এবং পরিকল্পিত বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসেব অনুযায়ী, বাণিজ্য যুদ্ধের আর্থিক প্রভাবের পরিমাণ প্রায় ৪৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বৈশ্বিক জিডিপির প্রায় ০.৫ শতাংশ।
সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, লাওস ও শ্রীলংকা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করেছে চীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৮
জিসিজি/এমএ