ঢাকা: ‘দিন দিন তথ্য-প্রযুক্তির যত উৎকর্ষ সাধন হয়েছে ততই বাংলা ভাষা ‘প্যারাময়’ হয়েছে। আমরা আগে বলতাম কষ্ট পাচ্ছি, যন্ত্রণা হচ্ছে।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে ‘প্রযুক্তির উৎকর্ষে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি হুমকির মুখে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমি বিচারক থাকা অবস্থায় বাংলায় রায় দিলে আরও ভালো হতো। আমরা বিদেশি জাজমেন্ট দেখে, পড়াশোনা করে, গবেষণা করে এ দেশে রায় দেই। কিন্তু বাংলায় সেটা লেখা কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। যদিও নিম্ন আদালতে বাংলায় রায় দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উচ্চ আদালতেও অনেক রায় বাংলায় হচ্ছে। কোনো কোনো বিচারক নিয়মিত বাংলায় রায় দিচ্ছেন। আগামীতে উচ্চ আদালতেও সব বিচারক বাংলা রায় দেবেন বলে আমি আশাবাদী।
তিনি বলেন, আমার চাওয়া সবার আগে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হোক, এরপর বাংলায় রায় দেওয়া যাবে। যদিও আমি প্রেস কাউন্সিলে এসে এখানে বাংলায় রায় দিচ্ছি। কারণ এখানে ইংরেজিতে দেওয়ার সুযোগ নেই।
নিজামুল হক নাসিম বলেন, টিভি বিজ্ঞাপনে অনেক সংমিশ্রণ ইংরেজি শব্দ ব্যবহার হচ্ছে। যেমন একটি শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনে দেখলাম বলছে, চুল শাইনিং করে। এটা না বলে চুল উজ্জ্বল করে বলা যেত। এতে মানুষের কাছে আরও বোধগম্য হত এবং গ্রহণযোগ্যতা পেত।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে ‘তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ’ নামের একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল। কিন্তু প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উন্নয়নে সরকার যে টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে তা বুদ্ধিজীবীরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। আসলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
এতে বক্তব্য রাখেন সমাজবিশ্লেষক, সাহিত্য সমালোচক, রাষ্ট্রচিন্তাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, জাতীয় জাদুঘরের কিউরেটর ড. শিহাব শাহরিয়ার, ফাইবার অ্যাট হোমের গভর্নমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের প্রধান আব্বাস ফারুক প্রমুখ।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
এমআইএইচ/এএটি