ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

প্রদীপে শাহবাগ, অনলাইনে জ্বলছে পাঠকেরা

সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩
প্রদীপে শাহবাগ, অনলাইনে জ্বলছে পাঠকেরা

একটি আন্দোলন। ছড়িয়েছে দেশজুড়ে।

উত্তাপ ছড়াচ্ছে কদিন থেকেই। এখন তা গণআন্দোলনের রূপ নিয়েছে। এ আন্দোলনের সূচনা কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যতম পথপ্রদর্শক ফেসবুকে। আর তা থেকেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের কোটি কোটি অনলাইন পাঠকের কাছে। অনলাইন থেকে ছড়িয়ে গণমাধ্যমে। আর গণমাধ্যম থেকে সব শ্রেণীপেশার মানুষের কাছে।

এ আন্দোলনে এরই মধ্যে ঢাকার শাহবাগ চত্বরের নাম বদলে হয়েছে শাহবাগ স্কয়ার। অনলাইন সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষকেরা একে তাহরির স্কয়ারের আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করছেন।

শাহবাগে এ আন্দোলনের সূচনা করে দেশের অনলাইন অ্যাকটিভিটস নামের একটি সামাজিক সংগঠন। এ সংগঠনের অন্যতম সংগঠক রনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দাবি আদায়েই তাদের এ শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি। আর তা চূড়ান্তভাবে আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা কোনোভাবেই মাঠ ছাড়বেন না।

সক্রিয় সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ জনমুখী আন্দোলন প্রসঙ্গে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর. কমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন বলেন, দেশের মানুষের জন্য এটি একটি অভূতপূর্ব দাবি আদায়ের আন্দোলন। দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনেও এ ধরনের গুণগত পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি। গণমানুষের দাবি আদায়ে একটি গণতান্ত্রিক দেশে সহিংসতা এবং রক্তপাত মোটেও প্রত্যাশিত নয়। শান্তিপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় আলোচনাই এখানে গ্রহণযোগ্য মডেল হওয়া উচিত। এখন প্রতিমুহূর্তেই দেশজুড়ে অনলাইনভিত্তিক সামাজিক মাধ্যমের সক্রিয় প্রতিনিধির সংখ্যাও যে বাড়ছে এ আন্দোলন তারও প্রমাণ রাখছে।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর কোনো অরাজনৈতিক ইস্যুতে এমন তারুণ্যের ক্ষোভ দেখা যায়নি বলেও বাংলানিউজকে জানিয়েছেন দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

গত কদিনে দেশের ইন্টারনেটের ওপর ব্যাপক চাপ বাড়ছে। অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথডের চাপ সামলাতে অনেক কারিগরি সংযোজন-বিয়োজন করতে হচ্ছে দেশের অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলোকে। বাংলানিউজে এ চাপটা একটু হলেও বেশি। তাই মূল পৃষ্ঠায় নিচের অংশে নিয়মিত বিভাগগুলোকে থেকে থেকে বন্ধ রাখা হচ্ছে।

এ ছাড়াও দেশজুড়ে ফেসবুক, টুইটার এবং বাংলা ব্লগসাইটগুলোতে লাখ লাখ মন্তব্য আর অভিজ্ঞতার কথা লিপিবদ্ধ হচ্ছে। দেশে সামাজিক গণমাধ্যমের এ অভিনব দাবি প্রকাশকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা দেখছেন নতুন কৌশল হিসেবে। তবে শাহবাগের আন্দোলনকারীরা এ আন্দোলনকে কোনোভাবেই রাজনৈতিক চেহারা দিতে নারাজ।

শুধু দেশের প্রতিটি জেলা শহর নয়, প্রবাসেও চলছে সোচ্চার প্রতিবাদ। উদ্দেশ্য গণমানুষের দাবি আদায়। দেশের প্রায় প্রতিটি শহীদ মিনার চত্বরজুড়ে এ আন্দোলন দানা বেধেছে। আর তা চলছে অবিরাম গতিতে, বিরামহীন।

শাহবাগে আসা তরুণেরা বলছে, সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তাদের প্রত্যক্ষ জনসংযোগ ছিল না। কিন্তু এত বছর পরে হলেও দেশের স্বাধীনতার সম্মান রক্ষার্থে এবারে তারা এ আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকেই দেখবেন। এতদিন পরে হলেও অরাজনৈতিক ইস্যুতে দেশজুড়ে একটি সক্রিয় আন্দোলনকে বাস্তব রূপ দিয়েছে দেশের সোচ্চার অনলাইন পাঠকেরা।

এ আন্দোলন সূচনার কৃতিত্বের দাবিদার তাই সামাজিক গণমাধ্যমের প্রাপ্য। আর এ আন্দোলকে যারা গণমানুষের আন্দোলন হিসেবে এগিয়ে নিচ্ছেন তাদের প্রশংসায় কোনো কারপণ্য করছে না দেশের অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো।

বাংলাদেশ সময় ১৮৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।