ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ফিরে দেখা-২০১৪

বছরের সেরা ১০ আবিষ্কার

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৪
বছরের সেরা ১০ আবিষ্কার

ঢাকা: বিদায় নিচ্ছে ২০১৪। ২০১৫ সাল আসতে  দেরি নেই।

প্রতিবারের মতোই শুরু হয়ে গেছে ২০১৪ সালের আলোচিত-সমালোচিত বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে সালতামামি।

তারই অংশ হিসেবে টাইম ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছে ২০১৪ সালের সেরা ২৫টি আবিষ্কারের একটি তালিকা। সেই তালিকা থেকে বাছাই করা ১০টি আবিষ্কার নিয়ে এই আয়োজন।
 

হোভারবোর্ড
এটি এক ধরনের স্কেটিং বোর্ড। তবে এর বৈশিষ্ট্য শুনলে চোখ কপালে তুলতেই হবে। কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিয়ে এই স্কেটবোর্ড ভেসে বেড়াতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক টেক ফার্ম হেন্ডো’র তৈরি এই স্কেটবোর্ড মাটি থেকে ১ ইঞ্চি উপর দিয়ে ভেসে বেড়াতে পারে। এটা শুধু অ্যালুমিনিয়াম বা তামার মতো কন্ডাক্টিভ ম্যাটেরিয়ালের উপর দিয়ে ভাসতে পারে। এর ব্যাটারি ১৫ মিনিট পর্যন্ত কাজ করে। এখন পর্যন্ত ১০টি হোভারবোর্ড তৈরি করা হচ্ছে।

তবে বিজ্ঞানীদের মতে এটি তৈরিতে যে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, তা যুগান্তকারী হতে পারে। হেন্ডো-এর প্রতিষ্ঠাতা গ্রেগ ও জিল হেন্ডারসন জানিয়েছেন, তারা চুম্বকীয় ‘হোভারিং’ প্রযুক্তির কথা ভাবছেন, যা দিয়ে ভবিষ্যতে ভূমিকম্পের সময়ে ভবনগুলোকে স্থির রেখে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করা সম্ভব হবে।


সুপারস্মার্ট স্পেসক্র্যাফট
ভারতের তৈরি মঙ্গলযান বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলেছে। টাইম ম্যাগাজিন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ভারতের আগে অন্য কোনো দেশ প্রথম চেষ্টাতেই মঙ্গলগ্রহে পৌঁছাতে পারে নি। ভারত সেই অসম্ভব কাজটিই সম্ভব করেছে। শুধু তাই নয়, ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের এই মহাকাশযান তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে ৭৪ মিলিয়ন ডলার, যা ‘গ্র্যাভিটি’ চলচ্চিত্রের বাজেটের চেয়েও কম।

ওয়্যারলেস ইলেক্ট্রিসিটি
তারবিহীন বিদ্যুতের এই প্রযুক্তিকে বলা হচ্ছে উইট্রিসিটি। ব্যাটারির মাধ্যমে আমরা মোবাইল ফোনসহ ছোটখাটো জিনিস তার ছাড়াই ব্যবহার করতে পারি, কিন্তু উইট্রিসিটির মাধ্যমে গাড়ি চালানোর পরিকল্পনা করছে টয়োটা। টয়োটা ইলেক্ট্রিক কার, ইন্টেল পিসি ছাড়াও আরো কিছু জিনিসের উপর এটি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। নির্মাতারা আশা করছেন সবধরনের ইলেক্ট্রিক ডিভাইসে ব্যবহার করা যাবে উইট্রিসিটি।


থ্রিডি প্রিন্টার
থ্রিডি প্রিন্টার অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। এটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা সম্ভব। ডিজিটাল ব্লু-প্রিন্ট থেকে প্লাস্টিক বা অন্য কোনো পদার্থের স্তর ব্যবহার করে তৈরি করা হয় বিভিন্ন বস্তু। থ্রিডি প্রিন্টার চিকিৎসাবিজ্ঞানকেও উন্নত করেছে। এর সাহায্যে মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গও প্রিন্ট করা সম্ভব।


স্মার্ট ওয়াচ
অ্যাপলের স্মার্ট ওয়াচ উঠে এসেছে টাইমের বর্ষসেরা আবিষ্কারগুলোর তালিকায়। এই ঘড়িটি কম্পিউটারকে এনে দিয়েছে হাতেই। এতে কম্পিউটারের সব রকম সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সময় দেখা ছাড়াও বার্তা পাঠানো, দিকনির্দেশনা দেওয়া, ওয়্যারলেস পেমেন্টসহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে এই ঘড়িতে। এছাড়া এটি একটু চমৎকার ফ্যাশন অনুষঙ্গও। বিভিন্ন মডেলের ঘড়িটির কিছু মডেলে ১৮ ক্যারাট সোনাও ব্যবহার করা হয়েছে।


কুলেস্ট কুলার
‘একের ভেতর সব’ কুলেস্ট কুলার পার্টির আয়োজনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। এই কুলারে খাবার ও পানীয় রাখা ছাড়াও রয়েছে নানা সুবিধা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্লেন্ডার, এলইডি লিড লাইট, ইউএসবি চার্জার, ব্লু-টুথ স্পিকার। এছাড়া সহজেই যেকোনো জায়গায় নেওয়ার জন্য এই কুলারের সঙ্গে চাকাও লাগানো হয়েছে।


রিংলি
ছেলেদের মোবাইল ফোন সাধারণত পকেটেই থাকে, বেজে উঠলে টের পাওয়া বেশ সহজ। কিন্তু মেয়েদের পার্সের ভেতরে মোবাইল ফোন বাজতে থাকলেও অনেক সময়ে তা খেয়াল করা সম্ভব হয় না। সেজন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফোন ধরা সম্ভব হয় না। এই সমস্যার সমাধান করতেই আবিষ্কৃত হয়েছে রিংলি।

রিংলি এক ধরনের আংটি। যিনি এটি পরবেন, তিনি এই আংটির মাধ্যমেই মোবাইল ফোনে আসা কোনো কল বা মেসেজ সম্পর্কে জানতে পারবেন। ফোনে কোনো মেসেজ বা কল এলেই আংটিটি জ্বলজ্বল করে উঠবে। ই-বে এর সাবেক প্রোডাক্ট অ্যান্ড ডিজাইন ম্যানেজার মার্কান্ডোর তৈরি রিংলি প্রথম ১০০০টি বিক্রি হয়েছে গেছে বাজারে ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই।


হেমোপিউরিফায়ার
ইবোলা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাঁচার আশা নিয়ে হাজির হয়েছে হেমোপিউরিফায়ার। এই ফিল্টারটি ডায়ালিসিস মেশিনের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে মানুষের শরীর থেকে ইবোলা ভাইরাস বের করে আনা যায়। এই ফিল্টারটি ইবোলা ভাইরাসকে আকর্ষণ করে রক্ত থেকে তা শুষে নেয়। একজন মাত্র ইবোলা আক্রান্ত রোগীর উপর এটি পরীক্ষা করা হয় এবং এই ফিল্টার তার শরীর থেকে ইবোলা ভাইরাস বের করে আনতে সক্ষম হয়েছিল। ডাক্তাররা আশা করছেন ভবিষ্যতে হেপাটাইটিসের চিকিৎসায় এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হবে।


উইকিপার্ল
প্যাকেটজাত খাবারের প্যাকেটটি আমরা ফেলেই দিই। উইকিফুডস এর প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড এডওয়ার্ডসের এটা মোটেই পছন্দ নয়। তাই তিনি ভাবলেন, খাবার মোড়ানোর প্লাস্টিক, পলিথিন ও অন্যান্য পদার্থে তৈরি প্যাকেট ফেলে পরিবেশ দূষণ বা অপচয় করার চেয়ে যদি প্যাকেটটাকেই খাদ্যদ্রব্য বানানো যায়?

চিন্তাটা উদ্ভট হলেও তা সত্যি করেছেন ডেভিড। শুকনো খাবার এবং প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি করেছেন খাওয়ার উপযোগী প্যাকেট। এখন আর খাবার খেয়ে প্যাকেটটি ফেলে দিতে হবে না। বরং প্যাকেটটিকেও কামড়ে কামড়ে খেয়ে ফেলা যাবে।


সেলফি স্টিক
সম্প্রতি সময়ে সেলফি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আর সেই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে এক নতুন বাজার। লম্বা হেয়ারব্রাশের মতো দেখতে সেলফি স্টিক দিয়ে এখন মনমতো সেলফি তোলা সম্ভব হচ্ছে। সেলফির জনপ্রিয়তাকে তুঙ্গে তুলতে সহায়তা করায় তাই সেলফি স্টিকও উঠে এসেছে টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা আবিষ্কারের তালিকায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।