ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

আইসিটি এক্সপো-২০১৫

হাঁটি-হাঁটি পা-পা নয়, চাই উল্লম্ফন

আবু তালহা, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৫
হাঁটি-হাঁটি পা-পা নয়, চাই উল্লম্ফন ছবি: জি এম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে এই সরকারের দর্শন হলো হাঁটি-হাঁটি-পা-পা নয়, উল্লম্ফন গতি। আমরা যদি হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে চাই, তবে সম্ভব হবে না।

আমাদের উলম্ফন দিতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা নিতে হয়, ব্যতিক্রম ব্যবস্থা নিতে হয়, সে বিষয়ে আমাদের সরকার, শেখ হাসিনার সরকার কখনও কার্পণ্য করে না, করবেও না।

বুধবার (১৭ জুন) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেশের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি মেলা ‘বাংলাদেশে আইসিটি এক্সপো-২০১৫’র সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক সরকারের দায়িত্ব জনগণের চাহিদা পূরণ করা। আর যা জনগণ অপছন্দ করে তা বর্জন করা। প্রযুক্তি খাতে আমরাও সেটাই করবো। তবে একটা বিষয় মানুষ যা চায়, তার শতভাগ পূরণ করা সম্ভব হবে না। আমাদের অন্য দিকও দেখতে হবে। আদায় না করে দেওয়া যাবে না। বরাদ্দ দিতে হলে সম্পদের দরকার। সম্পদ আদায় বড় কষ্টের কাজ। জনগণ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সম্পদ সৃষ্টি করে। আর তৃতীয় পক্ষ সরকার এসে বলে ‘আমাকে তোমার শেয়ার দিয়ে দাও’, ভয়ঙ্কর খারাপ কথা। ব্যক্তিগতভাবেও আমার খারাপ লাগে। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় আছে, যা একা করা যায় না। সরকারকে আপনারাই ক্ষমতা দিয়েছেন, সেজন্য আমাদের সম্পদ আদায় করতে হয়। তবে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন, এই সরকার কখনও কার্পণ্য করে না, করবেও না।

‘ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ সংশ্লিষ্টরা আমার কাছে অনেক দাবি নিয়ে এসেছেন। আমি নিজেও একজন প্রযুক্তির পৃষ্ঠপোষক। কিন্তু তারপরও আমার কাছে তদবিরের কোনো অভাব নেই। এর মধ্যে অন্যায় কিছু নেই, যৌক্তিকও বটে’, যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, বলা হয়-বাষ্পইঞ্জিন আবিষ্কারের পরে কেমিক্যাল, এর পর তথ্য প্রযুক্তি বিপ্লব ঘটেছে। আমরা সুযোগ পেয়েছিলাম বিনামূল্যে সাবমেরিন কেবল স্থাপনের, তখন আমরা সে কাজ করলাম না। কারণ আমাদের তৎকালীন সরকার ছিলেন তাদের মাথায় এ বুদ্ধি মোটেই ছিল না। পরবর্তীতে আমরা পয়সা খরচ করে ক্যাবল বসানোর কাজ করছি। এর ফলে তথ্য আদান-প্রদান অনেক সহজ হয়ে যাবে। সেদিক থেকে বলা যায়, তথ্য প্রযুক্তিতে বিল্পব হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীর কাছে ই-কমার্সের ক্ষেত্রে যে শতকরা ৪ শতাংশ কর আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান।

এতে ৪ কোটি রাজস্বের পরিবর্তে হাজার কোটি টাকার মার্কেট পরিণত করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

পলক বলেন, আমাদের ২০ লাখ মোবাইল আমদানি করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে লিগ্যাল চ্যানেলের বাইরেও আমদানি হয়। সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার পাশাপাশি যদি ডিউটি কমিয়ে দেওয়া হয়, তবে আমদানি অনেক বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে স্যামসাং-আরএমজি’র মতো আইটি জায়েন্ট বাংলাদেশে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার স্থাপন করতে চায়। এই আরএমডি সেক্টরে প্রকৌশলীদের যে আয়কর আরোপ করা হয়েছে সেটাকে শতকরা ৫ শতাংশ ফ্ল্যাট করে দেওয়া হয়, তবে আরও দক্ষ প্রকৌশলীরা বাংলাদেশে এসে কাজ করতে আগ্রহী হবেন।

এ সময় মোবাইল সিমের ওপর সারচার্জ বহাল রেখে ক্যাবল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য ডাটার ওপর কর প্রত্যাহারেরও অনুরোধ জানান পলক।

সমাপনী অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইমরান আহমাদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি এ এইচ এম মাহফুজুল আরিফ। বক্তব্য শেষে মেলা প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করেন অর্থমন্ত্রী।

এর আগে সোমবার (১৫ জুন) দুপুর ১টায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ মেলার উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) যৌথভাবে এই প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করে।

আয়োজনে সহযোগী হিসেবে ছিল বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বেসিস, সিটিও ফোরাম এবং আইএসপিএবি।

মেলার প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে ডেল ও এইচপি, গোল্ড স্পন্সর কনিকা মিনোল্টা এবং মাইক্রোল্যাব এবং সিলভার স্পন্সর প্রোলিংক ও এন আরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেড অংশ নিয়েছে। আর মিডিয়া পার্টনার ছিল এটিএন বাংলা, এফএম ৮৯.৬ এবং দৈনিক সমকাল।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৫
এটি/টিআই /এমজেএফ

** উদ্ভাবনে উদ্ভাসিত প্রযুক্তি মেলা
** মরণোত্তর তথ্য-প্রযুক্তি সম্মাননা পেলেন দেশের প্রথম প্রোগ্রামার
** দেশে উৎপাদন নির্ভর প্রযুক্তিশিল্প গড়ার প্রত্যয়
** ফ্রিল্যান্সারদের লেনদেনের সহায়তায় স্ট্যান্ডার্ট চার্টার্ড ব্যাংক
** নেটওয়ার্ক-পাওয়ারের যাবতীয় সমাধানে প্রোলিংক
** দৈনন্দিন জীবনে আমূল পরিবর্তন আনবে 'আইওটি’
** পেনড্রাইভ আকৃতির ‘কম্পিউটার’
** হরতালে দর্শনার্থী কম হওয়ার আশঙ্কা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।