ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

শেষ হল বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
শেষ হল বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক

ঢাকা:  সারাদেশে ১ কোটি ২২ লাখের অধিক মানুষকে ইন্টারনেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে শেষ হল দেশের সর্ববৃহৎ ইন্টারনেট উৎসব ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫’।

শুক্রবার সিলেটের রিকাবি বাজারের সিটি ইনডোর স্টেডিয়ামে বড় উৎসবের মাধ্যমে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয়।



দেশের তিনটি বিভাগীয় শহরে বড় আয়োজন ও ৪৮৭টি উপজেলায় এই উৎসব আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ এবং গ্রামীণফোন।

উৎসবে অংশ নেয় ই-কমার্স, ওয়েবপোর্টাল, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ও সারাদেশের স্থানীয় মোবাইল ভিত্তিক উদ্যোগ। সব উদ্যোগ প্রচার ও প্রদর্শন করা হয়। দর্শনার্থীরা এসব সেবা গ্রহণের প্রক্রিয়া সরাসরি দেখতে ও জানতে পারেন।
 
শুক্রবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সিলেটে আয়োজিত বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের সমাপনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দীন কামরান, বেসিসের সভাপতি শামীম আহসান, গ্রামীণফোনের পরিচালক (বিপণন) নেহাল আহমেদ।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদিন, বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫ এর আহ্বায়ক রাসেল টি. আহমেদ, বেসিসের সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পার্থ প্রতীম দেব।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন-বেসিসের মহাসচিব উত্তম কুমার পাল, যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, কোষাধ্যক্ষ শাহ ইমরাউল কায়ীশ, পরিচালক ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের সহ-আহ্বায়ক আশ্রাফ আবির, পরিচালক সামিরা জুবেরী হিমিকা, পরিচালক আরিফুল হাসান অপু, গ্রামীণফোনের ডিরেক্টর (স্টেকহোল্ডার রিলেশনস) ইশতিয়াক হুসেন চৌধুরী।

প্রধান অতিথি জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে একসঙ্গে এত জায়গায় এ ধরনের আয়োজন এবারই প্রথম। তিনটি বিভাগীয় শহরে বড় উৎসব, ৪৮৭টি উপজেলা, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত ৫০টি সেমিনার, সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিভিশন টক-শোর মাধ্যমে এই আয়োজনে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়েছে ১ কোটি ২২ লাখেরও অধিক মানুষ। তারা ইন্টারনেট ও এর সঙ্গে জড়িত সেবা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে, দেখতে ও ব্যবহার করতে পেরেছে। এই আয়োজনের সুফল আগামীতেও পাওয়া যাবে।
বিশেষ অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ গ্রামীণফোনসহ অন্যান্য ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে শিগগিরই ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সরকার ইন্টারনেট ব্যান্ডইউথের দাম ৭০ হাজার টাকা থেকে ৬৫০ টাকায় কমিয়ে এনেছে। কিন্তু সাধারণ গ্রাহক এখনও সে সুবিধা পাচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে আপনাদের গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

বেসিস সভাপতি শামীম আহসান বলেন, সরকারসহ আমরা সবাই ঢাকার পর সিলেটকে দ্বিতীয় আইটি হাব হিসেবে দেখতে চাই। তারই ধারাবাহিকতায় শিগগিরই সিলেটে বেসিস এবং বিআইটিএমের শাখা চালু করা হবে। এখানকার তরুণরা সেখানে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিতে ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে।

গ্রামীণফোনের পরিচালক (বিপণন) নেহাল আহমেদ বলেন, সরকার ও বেসিসের সঙ্গে আমরাও সারাদেশে ইন্টারনেট সেবার প্রসারে সবার জন্য ইন্টারনেট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক আমাদের লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে। গ্রামীণফোন ইতিমধ্যে ইজিনেট নামে ইন্টারনেট সচেতনতা বিষয়ক ক্যাম্পেইন চালু করেছে, যার মাধ্যমে গ্রাহকরা ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন।

বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের আনুষ্ঠানিক সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘মিট দ্য ইয়ুথ’ প্রোগ্রাম আয়োজিত হয়। বেসিসের সভাপতি শামীম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বেসিসের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বনানী মাঠে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক আয়োজন করা হয়। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে এই উৎসব পালন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সিলেটে এই ইন্টারনেট উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে বড় উৎসবের পাশাপাশি ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর দেশের সবকটি উপজেলায় এই উৎসব পালন করা হয়। উৎসবের অংশ হিসেবে প্রায় অর্ধশত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার এবং দেশের গনমাধ্যমগুলোতে অন্তত ৭টি পলিসি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। আর এর মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রবৃদ্ধির হার বাড়িয়ে প্রতিবছর নূণ্যতম ১ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক বাড়ানো, সাধারণ জনগণকে আরও বেশি অনলাইন সেবার আওতায় আনাসহ তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটভিত্তিক উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিতকল্পে এগিয়ে যাওয়াও এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।

বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.bangladeshinternet.org ও ফেসবুক পেজ www.facebook.com/BDInternetWeek থেকে এই উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
আরএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।