২০১৬ সালের প্রযুক্তির বাজারটা ছিল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পণ্যের। এ বছর বাজারে আসা বৈচিত্রময় পরিধানযোগ্য প্রযুক্তি পণ্যগুলো গ্রাহকদের সহজেই আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিল।
এসব পণ্যের মধ্যে মাথায় পড়ার হেডসেট ও হাতে পরিধেয় ঘড়ির ছিল জয়জয়কার।
বাংলানিউজের এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো বছর মাতানো এমন ১০টি পরিধানযোগ্য গেজেটের তথ্য।
মিসফিট রে: ফ্যাশনেবল এই ব্রেসলেটটি যে শুধু হাতের সৌন্দর্যই বাড়ায় তা নয়। বহু কাজের কাজী মিসফিট রে আসলে ফিটনেস ট্র্যাকার। জোবোনের তৈরি এই ফিটনেট ট্র্যাকার ব্যবহারকারীর চলাফেরার তথ্য, শরীরের ক্যালরি পোড়ানোর হার এবং ঘুমের তথ্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম। তাই এটি হাতে থাকলে সহজেই জানা সম্ভব শরীরের সার্বিক হালচাল।
স্যামসাং গিয়ার ফিট টু: মিসফিট রে’র অন্যতম প্রতিদ্বন্দী স্যামসাং গিয়ার ফিট টু। নাম শুনে বোঝা যায় এটিও একটি ফিটনেস ট্র্যাকার। বেশ কয়েকটি রং ও মডেলে আসা ট্র্যাকারটি মিসফিটের থেকে কিছুটা এগিয়ে ছিল নোটিফিকেশন সিস্টেম এবং এসএমএস মেসেঞ্জারের কারণে। এটি ব্যবহারকারীর হৃদস্পন্দন সহ দৈনন্দিন কাজে শরীর বৃত্তীয় তথ্য সংরক্ষণ করে।
জারমিন ভিভোস্মার্ট এইচআরপ্লাস: এই গেজেটটিও ফিটনেস ট্র্যাকার। তবে আগের গুলোর থেকে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে এতে। কারণ যারা দৌড়াতে পছন্দ করেন মূলত তাদের উপযোগী করে তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে থাকা জিপিএস সিস্টেম ব্যবহারকারীকে দৌড়ের নির্ভুল তথ্য দেয়। তাই ক্রীড়া ক্ষেত্রের মানুষের জন্য এটি ছিল বছরের অন্যতম পছন্দ।
প্লেস্টেশন ভিআর: শুরুতেই বলা হয়েছে, চলতি বছরটা ছিল ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উত্থানের বছর। এ বছর প্রযুক্তিপ্রেমীরা স্বাদ নিতে পেরেছেন প্রযুক্তি নির্ভর বাস্তবতাকে উপভোগ করার। প্লেস্টেশন ভিআর সেইসব গেজেটের মধ্যে অন্যতম। তবে সনির তৈরি এই গেজেটকে বাজারে টেক্কা দিতে হয়েছে বাজারের অন্যসব ভিআর পণ্যকে। তবুও মন্দ হয়নি তাদের বিক্রি-বাট্টা। গেমপ্রেমীরা স্বভাবতই তাই মজেছিলেন প্লেস্টেশন ভিআর নিয়ে।
স্ন্যাপচ্যাট চশমা: এ বছরের অন্যতম চমকপ্রদ গেজেট হিসেবে বিবেচিত হয় স্ন্যাপ ইনকর্পোরেশনের তৈরি স্ন্যাপচ্যাট চশমা। বাহ্যিকভাবে একটি সাদামাটা রোদচশমা মনে হলেও, আসলে এটি ক্যামেরার কাজও করে। ব্যবহারকারীর চোখের নির্দেশনা সনাক্ত করে তুলে ফেলতে পারে যে কোনো ছবি। এরপর সেটি তারবিহীন প্রযুক্তিতে অ্যাপের মাধ্যমে সংরক্ষণ হয়ে যায় ব্যবহারকারীর মোবাইল ফোনে। শুধু কি তাই, এই চশমাকে ব্যবহার করেই তৎক্ষনাত সেগুলো পোষ্ট করা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
স্যামসাং গিয়ার এসথ্রি: মোবাইল নিয়ে চলতি বছরটা বেশ বেকায়দায় থাকতে হলেও, অন্যান্য প্রযুক্তি পণ্য বাজারে আনার ক্ষেত্রে সজাগ ছিল স্যামসাং। প্রযুক্তি নির্ভর হাতঘড়ির বাজারে বেশ নামডাক ছিল স্যামসাং গিয়ার এসথ্রি’র। তরুণদের উদ্দেশ্যে বানানো এই ঘড়িতে সংযুক্ত করা হয় জিপিএস সিস্টেম। এছাড়া বাড়তি পাওনা হিসেবে দেয়া হয়েছিল ফিটনেস ট্র্যাকার। একের ভিতর একাধিক বলে শেষ পর্যন্ত ঘড়িটি হয়ে উঠে দরকারী গেজেট হিসেবে।
ফিটবিট আল্ট্রা: ফ্যাশন আর প্রযুক্তির দারুন সমন্বয় ঘটিয়েছে এই ফিটবিট আল্ট্রা। তাইতো প্রযুক্তির মিশেলে তৈরি দৃষ্টিনন্দন এই পণ্য ফ্যাশন পছন্দকারীদের নজর কেড়েছে। অন্যগুলোর মতো এই ফিটনেস ট্র্যাকারটিও মনিটরিং করতে সক্ষম সকল শরীর বৃত্তীয় কার্যক্রম।
এইচটিসি ভাইভ অ্যান্ড অকুলাস রিফ্ট: ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পণ্য হিসেবে এ বছর সনির প্লেস্টেশন ভিআর এর শক্ত প্রতিদ্বন্দী ছিল এইচটিসি ভাইভ এন্ড অকুলাস রিফ্ট। অনেক ব্যবহারকারীর মতে এটি মানুষকে সত্যিকারের বাস্তবতা উপভোগ করাতে সক্ষম। তাই মুক্তির পর থেকেই অনেক গেমপ্রেমীদের বিনোদনের সঙ্গী হয়ে উঠেছিল এই গেজেট।
গুগল ডেড্রিম ভিউ: প্রযুক্তি পণ্য দিয়ে গুগলের সক্ষমতাকে যদি যাচাই করা হয়, তবে শুধু গুগল ডেড্রিম ভিউ’র নামই যথেষ্ট। কেননা ২০১৬ সালে গুগল মোবাইল নিয়ে প্রযুক্তি বাজারে নিজেদের অবস্থান জানান দিলেও, সবার থেকে আলাদা করেছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির এই গেজেট। এ বছর বাজারে অনেকগুলো ভিআর হেডসেট এলেও, গুগলের এই ডেড্রিম’র সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এটি মোবাইল উপযোগী। তার উপর দামে সব থেকে সস্তা, মাত্র ৭৯ ডলার। যেখানে অন্যগুলোর দাম ৩০০ থেকে ৫০০ ডলারের মধ্যে।
অ্যাপেল ওয়াচ সিরিজ টু: এ বছর অ্যাপেলের আইফোনের পর তাদের সবচেয়ে সাফল্যজনক পণ্যটির নাম নিলে আসে অ্যাপেল ওয়াচ সিরিজ টু। নানা রং আর বাহারী ডিজাইনের অ্যাপেল ওয়াচ বেশ লড়াই করেছে বাজারে থাকা অন্যান্য প্রতিদ্বন্দী পণ্যের সাথে। এই ঘড়ির সাথে বিল্টইন আছে ফিটনেস ট্র্যাকার। ব্যবহারকারীরা এতে বাড়তি পেয়েছে আইফোনের সাথে সংযুক্তির সুবিধা। এছাড়া একই প্রতিষ্ঠানের হওয়ার, ঘড়ি থেকেই নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবহার সম্ভব হয়েছে ফোনের অনেক ফিচার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬
এমএডি/এসজেডএম