২০১৫ সালে যা ১২.৮ শতাংশ বেড়ে ১ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ কোটির শিল্পে রূপ নিয়েছিলো তা ২০১৬’য় এসে ৯.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ১ লাখ ২৬ হাজার ২১০ কোটি রুপিতে দাঁড়ায়।
বছরের শেষ দুই কোয়ার্টারে বাজার থেকে মুদ্রা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তই ছিলো এই পতনের বড় কারণ।
তবে এত কিছুর পরেও নতুন মিডিয়া খ্যাত ডিজিটাল মিডিয়া প্রবৃদ্ধিতে তার শীর্ষের অবস্থান ধরে রেখেছে। এই খাতে ২০১৬ সালে বিজ্ঞাপনে ব্যয় আগের বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। তবে সে ব্যয় ২০১৫ সালে ছিলো ৩৮.২ শতাংশ।
মুদ্রা প্রত্যাহারের প্রভাব পড়লেও সবার উপরেই যে ডিজিটাল বাজারের অবস্থান তা বলাই বাহুল্য। বিজ্ঞাপনদাতা আর ব্র্যান্ডগুলোর কাছে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বিষয়টি আরও আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, এমনটাই জানাচ্ছে এম অ্যান্ড ই রিপোর্ট।
চলচ্চিত্রে বিজ্ঞাপন সবচেয়ে কচ্ছপ গতিতে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে এগুচ্ছে, নিচের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রিন্ট মিডিয়া (৭ শতাংশ), টেলিভিশন ৮.৫ শতাংশ। আর এনিমেশন, ভিএমএক্স, রেডিও মিউজিক ও গেমিং এর সবখাতেই প্রবৃদ্ধি ডাবল ডিজিটে। যার সবার ওপরে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন। রিপোর্ট বলছে ২০১৬ সালের মোট বিজ্ঞাপন রেভিনিউর ১৫ শতাংশই একা ঘরে তুলেছে এই ডিজিটাল মাধ্যমগুলো। বিজ্ঞাপন দাতারা ক্রমেই এই ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের পণ্যের প্রচার দেখতে বেশি বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যাপকতা, মোবাইল ডিভাইসের সস্তা দর ও সহজলভ্যতা আর ড্যাটা চার্জ কমে আসার প্রেক্ষাপটে এই খাতের উন্নতি হচ্ছে শনৈ শনৈ।
ভারতে অবশ্য রেডিও বেশ বিস্ময় দেখিয়েছে। ২০১৬’য় এই খাতে প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে ১৪.৬ শতাংশ। তবে রেডিও এখনো মাঠে স্রেফ ছোট্ট খেলুড়ে, কারণ বাজারটি খুব একটা বড় নয়। হিসাবের খাতায় এর বাজার ভলিউম বছরে ২২৭০ কোটি রুপির। রেডিও অবশ্য স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এটি একটি সহজ ও স্বল্প খরচের যোগাযোগ মাধ্যম। ফলে রিপোর্ট বলছে, সনাতনি মিডিয়াগুলোর মধ্যে এখন রেডিওই সবচেয়ে এগিয়ে।
টেলিভিশন মিডিয়ার জন্য ভারতে বছরটি কেটেছে বড়ই দৈন্য দশায়। বাজারের মোট অংক দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ৮৩০ কোটি রুপি। মোটের ওপর বিজ্ঞাপনী আয় ১১ শতাংশ বেড়েছে বটে তবে তা ২০১৫ সালের চেয়ে ৬ শতাংশ কম।
এ জন্য স্রেফ ডিমনিটাইজেশন অর্থাৎ মুদ্রা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের ওপর দোষ দিয়ে বসে থাকলে চলবে না, কারণ ভারতের ব্রডকাস্ট অ্যাসোসিয়েশন রিসার্চ কাউন্সিল গবেষণা থেকে জানিয়েছে দেশটিতে টেলিভিশন দেখার হারে একটা পতন ঘটে গেছে। এতে বলা হয়েছে, টেলিভিশন, প্রিন্ট ও রেডিও’র বিজ্ঞাপনী আয় হুমকিতে। আর সিনেমা হলগুলো, বিশেষ করে এক পর্দার প্রেক্ষাগৃহগুলো এখন দর্শক একটু কমই টানতে পারছে।
প্রিন্ট মিডিয়ার রেভিনিউতো পড়েই চলেছে। ২০১৬ সালে এই খাতে প্রবৃদ্ধি ছিলো মোটেই ৭ শতাংশ। যা আগের বছর ছিলো ৭.৬ শতাংশ। ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্রগুলোরতো অনেকটা ত্রাহি দশা। এখানেও একটি মজার ব্যাপার ঘটছে, আঞ্চলিক খবরের কাগজগুলো এখনো প্রবৃদ্ধির বলে বলীয়ান। তবে এর সবগুলোই মুদ্রা প্রত্যাহারের খাড়ায় বেশ কাহিল।
চলচ্চিত্র শিল্পের দশা সবচেয়ে খারাপ। এই খাতে ২০১৫’য় প্রবৃদ্ধি ছিলো ৯.৩ শতাংশ যা ২০১৬য় কমে ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বলিউড ও তামিল উভয় ছবির জগতে বক্সঅফিস পারফরম্যান্স আগের চেয়ে নিম্নগামী। ২০১৫ সালে অনেক ছবিই নেমেছিলো যেগুলো বাজার থেকে ৫০ থেকে ৭০ কোটি রুপি অনায়াসে উঠিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু ২০১৬ সালে তেমনটা আর দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৭
এমএমকে