ফেসবুক বন্ধ রাখার প্রস্তাবনার বিষয়ে মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী।
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি এড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রস্তাবনার প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ফেসবুক বন্ধ রাখার বিষয়ে মতামত জানতে চাওয়ার পর টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্পস্ট করা হলো।
গত বছরের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে ডিসিরা রাতের ৬ ঘণ্টা ফেসবুক বন্ধ রাখার প্রস্তাব করেছিলেন। এরপর ২৩ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ টেলিযোগাযোগ বিভাগকে চিঠি পাঠায়। একই চিঠিতে মধ্যরাতে শিশু-কিশোরদের আসক্তি কমাতে কার্টুন চ্যানেল বন্ধের কথা বলা হয়েছিল।
ফেসবুক বন্ধ করা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর আলোচনা-সমালাচনার মধ্যে সোমবার বিটিআরসি জানায়, ফেসবুক বন্ধ করা হবে না।
এরপর সিঙ্গাপুরে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে দেশে ফিরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তারানা হালিম বলেন, সুদৃঢ়ভাবে বলে দিতে চাই, ফেসবুক কোনো ঘণ্টার জন্যই বন্ধ হচ্ছে না। বন্ধ হবার প্রশ্নই আসে না। বন্ধ হওয়ার বিষয়ে কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত কখনই গ্রহণ করা হয়নি। বন্ধ করার বিষয়টি কখনও বিবেচিত হয়নি।
ফেসবুক বন্ধের প্রস্তাবনার বিষয়টি তুলে ধরে তারানা হালিম বলেন, ডিসি সম্মেলনে জেলা প্রশাসকরা শঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছিলেন।
‘কোমলমতি শিশুরা রাতের বেলা অনেক সময় ফেসবুক, সামাজিক মাধ্যমে থাকে। এজন্য তাদের লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্তব্য সহকারে প্রতিবেদন চাওয়া হয়। ’
তারানা হালিম বলেন, টেলিযোগাযোগ বিভাগ সুস্পস্টভাবে মৌখিকভাবে বিটিআরসি এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানিয়েছিলাম, যে কোনো ঘণ্টার জন্যই ফেসবুক বন্ধ হচ্ছে না। বন্ধ করা সমীচীন হবে না, এতে মানুষ বিরক্ত হবে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, অনেক ব্যবসায়ী আছেন ব্যবসায়িক কারণে অনেকে রাতে ফেসবুক ব্যবহার করেন ই-কমার্স, তরুণ উদ্যোক্তারা। এবং টেকনিক্যাল কারণেও বন্ধ হচ্ছে না।
বিটিআরসিও আমাদের মতামতের সঙ্গে একমত জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, এই বিষয়টি আমরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে লিখিতভাবে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
শিশু-কিশোরদের আসক্তির বিষয়ে প্যারেন্টাইল কন্ট্রোলসহ কিছু সিকিউরিটি প্রাইভেসি ফিচার তারা ব্যবহার করতে পারেন জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি ক্যাম্পেইন শুরু করবো।
বর্তমান সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছে এবং ডিজিটালাইড করার জন্য প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, সরকার এমন কিছু করবে না, যা ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল চেনতাকে কোনোভাবে আঘাত করে বা আহত করে। ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে আপামর জনগোষ্ঠীকে উৎসাহিত করতে চাই।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুর সফরে ফেসবুকের সঙ্গে অনেক ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানান তারানা।
ফেসবুক বন্ধ করা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর আসার পর আলোচনা-সমালোচনার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে তারানা বলেন, এজন্য যারা মন্তব্য করেছেন তা অনাকাঙ্খিত।
বাংলাদেশে আড়াই কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ