বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টেলিটকের কেয়ার সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
টেলিটকের উন্নয়নে গত বছরের আগস্টে একনেকে ৬৭৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারানা হালিম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত প্রকল্পটি ঝুলে আছে। এটি নিয়ে অনেক তদবির করছি, কারণ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী টেলিটকসহ সকল দেশি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। সেজন্যই একনেকে এ বিশাল প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছিলো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনুমোদিত প্রকল্পটিতে এখনও অর্থ ছাড় না হওয়ায় কিছুটা হলেও হোঁচট খাচ্ছি। টেলিটকের বিনিয়োগ যদি আমরা বৃদ্ধি করতে না পারি, অন্তত নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে, টেলিটকের গ্রাহক ধরে রাখা কঠিন হবে। এটা কঠিন সত্য আমাদের মানতে হবে।
তিনি বলেন, নেটওয়ার্ক কোনো ম্যাজিক নয় যে তুড়ি দিলাম, নেটওয়ার্ক হয়ে যাবে, টাওয়ার বসে যাবে। তাতো নয়, অর্থের প্রয়োজন, এটা হল রূঢ় বাস্তবতা। আমি কষ্টের কথাটি বললাম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নানা কারণে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পটি আটকে গেলো। অর্থ ছাড় এখনও পাচ্ছি না। এ অর্থ ছাড় না পেলে এমএনপি (নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদল) চালু হলে আসলে টেলিটকের অবস্থাটা কি দাঁড়াবে, তা আমার ও দেশের জন্যও দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না এ বাধাটি আমার কেন পাচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাতৃসুলভ স্নেহে সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতি (একনেকে) বলেছিলেন, আমরা পুরোপুরি গ্র্যান্ট না দেই, এক শতাংশের কম সুদের হারে টেলিটককে এ অর্থায়নটি আমরা করি।
তবে হতাশ হতে চান না প্রতিমন্ত্রী তারানা। বলেন, আমি হতাশ হতে চাই না, আমি মনে করি প্রকল্পটির অর্থ ছাড় দ্রুত হবে। টেলিটক সম্পূর্ণভাবে এ দিকেই তাকিয়ে আছে। নিজস্ব অর্থায়নে যা যা করার টেলিটক সবই করেছে। টেলিটকের আর সক্ষমতা নেই যে নেটওয়ার্ক বৃদ্ধির জন্য আর কোনো প্রকল্প হাতে নেবে।
তারানা হালিম বলেন, আমরা যদি এই অর্থ ছাড় পাই, অবশ্যই টেলিটক নিজের পায়ে দাঁড়াবে। এইটুকু প্রতিশ্রুতি দিতে পারি যে অর্থের একটি অংশও অপব্যয় হবে না, একটি অংশও দুর্নীতির কারণে কারো পকেটে যাবে না। আমি নিজে মনিটর করবো।
তিনি বলেন, এরপরও যদি টেলিটক দাঁড়াতে না পারে, সেই ব্যর্থতা টেলিটকের। তার আগে কিছুতেই দায়ভার টেলিটকের উপর চাপাতে পারছি না।
প্রতিমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও জয়পুরহাটে টেলিটকের কাস্টমার কেয়ার সেন্টার উদ্বোধন করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত মাসে টেলিটকের কাস্টমার কেয়ার সেন্টার ছিল ৯৩টি এ মাসে আরও তিনটি যুক্ত হল। এখন কাস্টমার কেয়ারের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৬টি। গত মাসে রিটেইলারের সংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার ২০০, এ মাসে সেটি ৫৬ হাজার।
টেলিটক মাসভিত্তিক টার্গেট পূরণ করছে জানিয়ে তারানা বলেন, টেলিটকের টু-জি বিটিএস ৩ হাজার ৭০০টি, থ্রি-জির জন্য বিটিএস এক হাজার ৫০০। আরও ১০০টি বিটিএস যুক্ত হবে। যেটুকু সাফল্য তা নিজস্ব অর্থায়নে এসেছে।
তিনি বলেন, বাজারে সবেচেয়ে বড় অপারেটরের টাওয়ার ১২ হাজার, সেখানে সমভাবে কীভাবে টেলিটক সংগ্রাম চালিয়ে যাবে তা আমার বোধগম্য নয়।
২০০৫ সালে ৬৭৩ কোটি টাকা নিয়ে টেলিটক যাত্রা শুরু করে জানিয়ে তারানা বলেন, এই স্বল্প বিনিয়োগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য টিকে থাকা কঠিন।
টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. গোলাম কুদ্দুসসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
**নববর্ষ উপলক্ষে ডাকটিকিট প্রকাশ
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
এমআইএইচ/বিএস