একই সঙ্গে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর বিষয়ে বিটিআরসি এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে ছয় মাস পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইন্টারনেটের মূল্য পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা জানান।
ভোক্তা ও পাইকারি পর্যায়ে দামের ফারাকের বিষয়ে ফেসবুকে আলোচনা নিয়ে অপারেটরদের ডাকা হয়েছিল জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রশ্ন করেছি এখন ভোক্তা পর্যায়ে কেন রিফ্লেকশন হচ্ছে না?
“তাদের পক্ষ থেকে জানানো হলো, যে প্রচারণাটি চলছে এর মধ্যে অনেকগুলো বিভ্রান্তিকর তথ্য আছে। যেমন, হোলসেল ও রিটেইলার এবং স্পিড ও ভলিউমের মধ্যে কনফিউজড করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, দু’টো কনফিউজড করার ফলে অঙ্কে যে হিসাব দেখানো আছে সেখানে একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে, যা তথ্যভিত্তিক নয়। তারা বলেছেন, এর মাঝে ভ্যাট, ট্যাক্স, প্রডাকশন খরচ, মেইনট্যান্যান্স খরচ আছে। এ সমস্ত কারণে উৎপাদন খরচ এবং ইন্ড ইউজার লেভেলে যে খরচের তারতম্য তা হিসাবে আনা হয়নি। ’
তারানা বলেন, আমরা বলেছি, দু’দিনের মধ্যে প্রত্যেকটি পয়েন্টের ক্লারিফিকেশন দিতে হবে। অপারেটরদেরকেই আমাদের কনভিন্স করাতে হবে। আমরা কখনই গ্রাহকের সেবার গ্রাহকের সঙ্গে কোন রকম শুভঙ্করের ফাঁকি মেনে নিব না- এটা বটম লাইন।
“আমি তাদের বলেছি শুক্রবারে প্রতিটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাতে হবে, মানুষের ধারণা কী এবং তাদের বক্তব্য কী। এটা মানুষের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা। কারণ গ্রাহককে দিয়েই অপারেটররা ব্যবসা করছে। তাদের ব্যাখ্যা আমার কাছে দিলে হবে না, মানুষের কাছে দিতে হবে। পরে আমি বসব। ”
আগামী ছয় মাসের মধ্যে কিছুটা হলেও ইন্টারনেটের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত আসবে বলে প্রত্যাশা করেন তারানা।
“কিছুটা ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কিছুটা লস হলেও তা মেনে নিয়ে আমরা যদি জনকল্যাণের মন মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসি; ট্যাক্স, ভ্যাটে কিছু করার আছে কিনা- সে বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। তিনিও অত্যন্ত সহনশীলভাবে এটা আমাদের কথা শুনবেন, কিছুটা যদি সেখানে কমানো যায়। ”
তারানা বলেন, ত্যাগের মনোভাব নিয়ে বিটিআরসি, এমএনও, আইআইজিরা যদি একটু রেভিনিউ শেয়ারিং কমায়- তাহলে ইন্ড ইউজার লেভেলে কিছু করতে পারি কিনা।
তিনি বলেন, আশা করছি ৬ মাসের মধ্যে অপারেটরেরা কী বলছেন, আইআইজিরা কী বলছেন, এনটিটিএনরা কী বলছেন, বিটিআরসির মন্তব্য- সবগুলোকে কম্পাইল করে একটা কনক্লুশনে আসতে পারব, যে কিছু করা যাচ্ছে কিনা।
তবে তাদের বক্তব্য হচ্ছে, এর চেয়েও যদি কম করা হয় তাহলে সাসটেইন করা কষ্ট হয়ে যাবে। কারণ মধ্যসত্ত্বভোগীদের অনেকগুলো বিষয় আছে। আমরা চাচ্ছি কস্ট মডেলিং করলে মধ্যসত্ত্বগুলোর মধ্য থেকে রেভিনিউ শেয়ারিং কিছু সেকরিফাইজ করে একটু কমানো যায় কিনা।
তারানা বলেন, ২০০৯ সালে প্রতি এমবিপিএস ব্যান্ডউইডথ এর মূল্য ছিল ২৭ হাজার টাকা। বর্তমান সরকার সেটা কমিয়ে এনে ৬২৫ টাকা করেছে। আমাদের দেশে ইন্টারনেটের মূল্য পৃথিবীর তৃতীয় সর্বনিম্ন। আমরা সর্বনিম্ন যদি হতে পারি, সেটাই বা কম কিসের। কাজেই সেই মানসিকতা নিয়ে আমরা দেখতে চাই কতদূর করতে পারি।
“বিটিআরসি, আমরা এবং অপারেটররা মিলে ৬ মাস পরে বসে দেখবো তাদের এ বক্তব্যগুলো এবং বিটিআরসি আইটিইউ’র সঙ্গে যে কস্ট মডেলিং করছে, সেই মডেলিংয়ের বক্তব্যের সঙ্গে কতটুকু মিল বা অমিল বা কোথায় কমাবার সুযোগ আছে- তা পরবর্তীতে আমরা কমাব। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ