ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

সিমের তথ্য সংরক্ষণে বায়োমেট্রিক প্লাটফর্মের উদ্বোধন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৬ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
সিমের তথ্য সংরক্ষণে বায়োমেট্রিক প্লাটফর্মের উদ্বোধন ডাক ‍ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম

ঢাকা: মোবাইল সিমের তথ্য সংরক্ষণ ও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্লাটফর্ম চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এর ফলে কোনো গ্রাহক ২০টির বেশি সিম রাখতে পারবেন না। অপরাধ প্রবণতাও কমে যাবে। 

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বুধবার (১৪ জুন) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে এই সিমের তথ্য লাইভে চলে যাবে। কার্যক্রমটি চালুর সময়ে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রাত ৮টা থেকে সিম বিক্রিতে বিঘ্ন ঘটবে।

তবে মোবাইল নেটওয়ার্কে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।

মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে সিমের বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এই পদ্ধতিটিকে নিশ্ছিদ্র করতে চাই। এই ধারাবাহিকতায় আরও একটি ধাপ যুক্ত হচ্ছে।

এই প্ল্যাটফর্মে অপারেটররা যুক্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা বায়োমেট্রিক সিমের তথ্য বিটিআরসিতে পাঠিয়েছেন। ৩০ মে পর্যন্ত ডাটাবেজ সিস্টেমে লোড করা আছে।

কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে কেউ সিম কিনতে চাইলে অপারেটরের সেই তথ্য যাবে বিটিআরসির সেন্ট্রাল মনিটরিং সিস্টেমে। সিস্টেম এনআইডির সঙ্গে যাচাই করে দেখবে ওই গ্রাহকের এনআইডির বিপরীতে কয়টি সিম আছে। এক্ষেত্রে একটি এনআইডির বিপরীতে প্রিপেইড গ্রাহকের ২০টি ও পোস্টপেইড গ্রাহকের ৫টি সিম থাকতে পারে।

তারপর বিটিআরসির সিস্টেম থেকে সিমটি রেজিস্ট্রেশন করা যাবে কিনা সে তথ্য অপারেটরের কাছে যাবে। অপারেটর তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে সিমটি ভেরিফাই ও রেজিস্ট্রেশন করবে।

গ্রাহকদের কোনো প্রকার হয়রানিতে না ফেলেই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।  সেন্ট্রাল মনিটরিং সিস্টেমের সুবিধাগুলো তুলে ধরে তারানা হালিম বলেন, প্র্রত্যেক এনআইডির বিপরীতে সব অপারেটর মিলিয়ে কয়টি সিম আছে তা জানা যাবে। প্রতিটি সিম বিক্রির আগে ক্লিয়ারেন্স দেওয়া যাবে যে এই এনআইডির বিপরীতে সিমটি বিক্রি করা যাবে কি না।

‘মোবাইল গ্রাহকদের নিয়ে যে কোন পরিসংখ্যান দেওয়া যাবে। যেমন- কোন অপারেটরের গ্রাহক মাসে কত বাড়লো বা কমলো। কোন ডাটা নিয়ে সন্দেহ হলে বিটিআরসি তা ভেরিফাই করে নিতে পারবে। ’

তিনি বলেন, ‘সিস্টেম অনলাইন হয়ে গেলে এক এনআইডির বিপরীতে কতটি সিম তা জানা যাবে, তা গ্রাহককে জানিয়ে দিয়ে অতিরিক্ত সিম থাকলে ডিঅ্যাক্টিভ করে দেওয়া হবে। এর আগে অপারেটররা সংখ্যা দিতে পারেনি। ’

বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী জানান, এখন পর্যন্ত যে সিমগুলো বিক্রি হচ্ছে সেগুলো এনআইডি তথ্যভান্ডারের সাথে ভেরিফাই করে সরাসরি বিক্রি করা হচ্ছে। ইচ্ছা করলে আমরা চেক করতে পারছি।

শুক্রবারের পরে সব সিম বিক্রির অনলাইন রেকর্ড থাকবে। এরফলে তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারবো কোন এনআইডির বিপরীতে কোন অপারেটর কতগুলো সিম বিক্রি করছেন। ’

তিনি বলেন, ‘এই সিস্টেম চালু হলে দেখতে পারবো একটি এনআইডির বিপরীতে ২০টির বেশি সিম আছে কিনা। প্রত্যেক গ্রাহককে তথ্য দেওয়া হবে ২০টির বেশি সিম থাকলে ডিঅ্যাক্টিভেট করতে হবে। না করলে আমাদের ফোর্সলি ডিঅ্যাক্টিভেট করতে হবে। ৩০ মে পর্যন্ত ১৩ কোটি ৩১ লাখ সিম বায়োমেট্রিক নিবন্ধন হয়েছে।   

বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে ডাটা মাইগ্রেশনের কাজ শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সময় লাগবে ১৮ ঘণ্টা। রাতের বেলায় সিম বিক্রি হয় না। শুক্রবার সকালে হয়তো কোথাও কোথাও নতুন সিম বিক্রিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তবে তা দুপুরের পর ঠিক হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘ দিনের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে শুক্রবার সব থেকে কম বিক্রি হয়। কাজটি শেষ করতে ১২ ঘণ্টা লাগে। তবে আশা করি রাতের মধ্যে শেষ করতে পারবো।

সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
এমআইএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।