ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৭
 গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় গ্রামীণফোন

ঢাকা: অফারের মাধ্যমে গ্রাহক ঠকানো, প্যাকেজ চালু করে না ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করা, ধীরগতির ইন্টারনেট সেবা, অযাচিত ডাটা কেটে নেওয়াসহ অভিযোগের অন্ত নেই গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি দেশের শীর্ষ এ মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানির বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ জমা পড়েছে সংসদীয় কমিটিতে। খোদ কমিটির সদস্য গ্রামীণফোনের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

এমনকি প্রতিমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন যত এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ যাওয়ার কথা, তারচেয়ে কম যাচ্ছে।

কমিটির সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ‘গ্রামে-গঞ্জে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরে কথা বলা যাচ্ছে না। বিশেষ করে গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক হ্যাং হয়ে যাচ্ছে। ফ্রি মিনিটসহ বিভিন্ন প্যাকেজের অফার দেওয়া হলেও বাস্তবে তা পাচ্ছে না গ্রাহক। এভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে। অথচ তারা গ্রাহকের কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়ে যাচ্ছে। ’

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সংসদীয় কমিটিতে জানান, এডিএসএল মডেমের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। অনেক সময়ই স্পিড কমে যাচ্ছে, আবার বন্ধও থাকছে। এরফলে এসডিএসএল এর গ্রাহক সংখ্যা কমে যাচ্ছে।    

কমিটির এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, বেশ কিছু জায়গায় পরীক্ষা করে দেখা গেছে যত এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ যাওয়ার কথা তারচেয়ে কম যাচ্ছে। এ বিষয়ে এটুআই প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা তাদের তৈরি সফটওয়্যারের মাধ্যমে এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ কোথায় কি পরিমাণে যাচ্ছে তা পরিমাপ করে মন্ত্রণালয়ে জানাবেন।

কমিটিতে আরও অভিযোগ রয়েছে গ্রামীণফোন কোম্পানি বিভিন্ন প্যাকেজের মাধ্যমে গ্রাহককে ঠকিয়ে যাচ্ছে। এটা এক ধরনের প্রতারণা। এছাড়া রাত-বিরাতে ফোন কোম্পানিগুলো তাদের বিভিন্ন মেসেজ ও অফারের ফোন দিয়ে গ্রাহককে বিড়ম্বনায় ফেলছে।

ফোন কোম্পানিগুলোকে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই তারা সেই নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করছে না। এ নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ কেন পালন করছে না তা খতিয়ে দেখতে বলা হয় কমিটির পক্ষ থেকে।

ইন্টারনেটের অফার সংক্রান্ত মেসেজ দিয়েও গ্রাহককে ঠকাচ্ছে গ্রামীণফোন। গ্রাম-গঞ্জের অনেক সাধারণ মানুষ প্যাকেজ প্রতারণা শিকার হচ্ছেন। অনেক সময় গ্রাহক রিচার্জ করলেও সেই টাকার কথা বলার আগেই ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাচ্ছে।

ফোন কোম্পানির বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে কমিটি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব অভিযোগের জবাব চেয়েছি। গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাবে এটা হতে পারে না। কারণে অকারণে মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করে ফোন কোম্পানিগুলো। আবার গ্রামীণফোন দেশের এক নম্বর মোবাইল ফোন কোম্পানি দাবি করলেও গ্রামে তাদের নেটওয়ার্কে কথা বলা যায় না। গ্রামীণফোনসহ অন্য কোম্পানির কল ড্রপের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির  বৈঠকে উত্থাপিত কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৭
এসএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।