আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডিজিডে.কম বলছে, এই মডেলটি চালু হলে নিউ ইর্য়ক টাইমস, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও দ্য ইকোনমিস্টের মতো ফেসবুক বিরোধী সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত লেখাও সমন্বয় করা যাবে। এসব পত্রিকায় বর্তমানে বিনামূল্যে প্রবন্ধ-নিবন্ধ আংশিক পড়ার সুযোগ রয়েছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, প্রকাশকদের জন্য আরও বেশ কিছু সুবিধা ও ছাড় দিচ্ছে ফেসবুক। সূত্র অনুযায়ী, তাদের সব গ্রাহক ডেটায় প্রবেশগম্যতা থাকবে, যা প্রকাশকরা চান এবং যার মাধ্যমে পাঠকদেরও খুঁটিনাটি বিষয়ে ভালোভাবে বুঝতে পারেন।
লোকজন যাতে বিভিন্ন কোম্পানির প্রকাশনাগুলো সংগ্রহ করতে পারেন সে রকম একটি বিতর্কিত প্রস্তাবও টেবিলে রয়েছে।
তবে প্রকাশকরা আশা করছেন, প্রকাশনাগুলোর মূল্যের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে প্রকাশকদের হাতেই।
এদিকে পে-ওয়াল ব্যবহারে টাকার নির্ধারিত অংকটায় অনেকে সন্তুষ্ট নাও হতে পারেন। এক্ষেত্রে ওয়াশিংটন পোস্টের কথা বলা হয়। মাসে পত্রিকাটির প্রবন্ধ-নিবন্ধ বিনামূল্যে পড়া যায়। এ পদ্ধতি চালু হলে এটা বছরে পাঁচটি থেকে কমিয়ে তিনটিতে নিয়ে আসতে পারে।
তাই বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে ফেসবুক। তাদের ভাষ্য, প্রত্যেক প্রকাশকেরই একটি নিজস্ব মডেল আছে। ফেসবুকেও তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে প্রতিলিপি (রেপ্লিকেট) প্রকাশ করতে চাইবেন তারা।
যদিও ফেসবুক বিশ্বাস করে, একটি অভিন্ন ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা তৈরিতে সহায়তা করা।
তবে সাবস্ক্রিপশনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বেশ কিছু বিবরণ এখনও অনিশ্চিত। সাবস্ক্রিপশন পদ্ধতিতে কীভাবে মূল্য পরিশোধ করা হবে- সে বিষয়টিও এখানে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় ফেসবুক।
একজন প্রকাশক জানান, ফেসবুক তাদের মোবাইল ওয়েব মাধ্যমের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এটি জটিলতার একটি স্তর এবং অ্যাপ্লিকেশন স্টোর থেকে বাদ দেওয়াও হতে পারে। এছাড়া প্রকাশকদের মূল্য ও তথ্য নিয়ন্ত্রণের উপরও বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে তারা।
তিনি বলেন, যদিও বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। প্রকাশকরা যদি ব্যবহারকারীদের তথ্য পেতে পারেন, যেমনটা তারা তাদের নিজের সাইটে করতে পারে। তাহলে তাদের ধরণটাও জানতে পারবে।
শেষ পর্যন্ত, টাইমস ও জার্নালের মতো প্রকাশকদের জন্য একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। ফেসবুকে প্রবন্ধ নিবন্ধ পোস্টের পরিবর্তে সদ্য প্রকাশিত লেখা সাবস্ক্রাইব করা ও লোকজনকে সাবস্ক্রাইব করার ব্যবস্থা থেকে যায়। এভাবে প্রকাশকের নিজের সাইটেও ঢোকা যায়।
এ বিষয়ে ফেসবুকের যুক্তি, যেসব নিবন্ধ পুরাতন পদ্ধতিতে পোস্ট করা হয়েছে, গ্রাহক পদ্ধতিতে এর চেয়েও বেশি ক্লিক (পড়া) হবে। তবে সাবস্ক্রাইব পদ্ধতিতে প্রকাশকদের গ্রাহকের তথ্য বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী বলেন, আমরা এ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করবো কিনা তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং বিষয়টি মূল্যায়ণ করা হচ্ছে। তবে এ পর্যন্ত আমরা কোনো ঊর্ধ্বমুখী কিছু দেখি না।
গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের জিএম কার্ল ওয়েলস বলেন, তারা (ফেসবুক) একটি সিস্টেম তৈরি করার চেষ্টা করছেন, যা সবাইকে খুশি রাখে।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রকাশকদের একটি গ্রুপকে নিয়ে পরীক্ষামূলক এ কাজটি করতে চায় ফেসবুক। যা ২০১৮ সালে বড় পরিসরে শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
এ পরিকল্পনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বের ছোট-বড় প্রকাশকদের নিয়ে প্রতিনিধিত্বমূলক একটি গ্রুপ সৃষ্টি করা হবে। যাতে সব বিষয়ের একটা সমন্বয় থাকে।
এরই মধ্যে নিউ ইর্য়ক টাইমস, ট্রংক, হার্স্ট, দ্য ইকোনমিস্ট, জার্মানিস বিল্ড ও যুক্তরাজ্যের টেলিগ্রাফের সঙ্গে নিউ ইয়র্ক এবং প্যারিসে এ সপ্তাহে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছে ফেসবুক।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৭
এমএ/