ঢাকায় উবারের অনেক চালক জানিয়েছেন, তারা আগে যত ট্রিপ পেতেন তা এখন ততটা পান না। উবার-এক্স নিয়মিত ট্রিপ পেলেও উবার প্রিমিয়ারের চালকরা খুব কম রাইড রিকোয়েস্ট পান।
উবার সংশ্লিষ্ট স্যোশাল মিডিয়া গ্রুপগুলোতে উবার চালক ও যাত্রীদের কাছ থেকে এসব প্রতিক্রিয়া জানা গেছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে ভাড়া একটু বাড়িয়ে সাম্প্রতিক মডেলের প্রাইভেট কার দিয়ে চালু হয় উবার প্রিমিয়ার। আর পুরাতন মডেলের গাড়ি দিয়ে চলছে উবার-এক্স। এক্সের ভাড়া কিছুটা প্রিমিয়ারের চেয়ে কম। এরপর থেকে ঢাকায় উবার এক্স নিয়মিত ব্যবহৃত হলেও উবার প্রিমিয়ার ততটা সাড়া জাগাতে পারেনি।
তবে তীব্র যানজট পেরিয়ে দ্রুত গন্তব্যে যেতে মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ঢাকায় পাঠাও, শেয়ার এ মোটরসাইকেল (স্যাম), আমার রাইড, মুভ, বাহন সহ কয়েকটি অ্যাপস বাইক রাইড শেয়ারিং করছে।
রাইড শেয়ারিং স্যোশাল মিডিয়া গ্রুপগুলোর বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করে মুরাদ শুভ বাংলানিউজকে জানান, ‘অ্যাপের দিক থেকে ‘স্যাম’ বাইকার এবং রাইডারদের প্রশংসা পাচ্ছে। নির্ভুল জিপিএস সিস্টেম ও নতুন নতুন ফিচারের কারণে বাইকার এবং রাইডার বাড়ছে তাদের। তবে বাইকার বেশি থাকায় ট্রিপ বেশি পাচ্ছে পাঠাও। জিপিএস ত্রুটি ভাড়ার হিসেবে গোলমালের অভিযোগ দেখা গেছে তাদের ফেসবুক গ্রুপগুলোতে। ’
রাইড শেয়ার নিয়ে নিয়মিত বিশ্লেষক মুরাদ শুভ জানান, সিঙ্গেল যাত্রীরা তাদের যাত্রায় একটি প্রাইভেট কারের চেয়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। যে কারণেও উবারও ঢাকায় মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং শুরু করে দিচ্ছে।
উবার সূত্র জানায়, রাইড শেয়ারিংয়ের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় ঢাকায় মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং ফিচার যুক্ত করছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও বাইকশেয়ারিং-এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে প্রথম বছরেই উবারমটো দুই মিলিয়ন ট্রিপ সম্পন্ন করেছে।
যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য চালকদের পরিচয় প্রকাশসহ উবারমটো তে ট্রিপের স্ট্যাটাস শেয়ারিং, জিপিএস ট্র্যাকিং এবং রেটিং সিস্টেমের মতো সেফটি ফিচার সংযুক্ত রয়েছে।
এদিকে প্রথমে পাঠাও ঢাকার পর চট্টগ্রামে বাইক রাইড শেয়রিং গত সপ্তাহে শুরু করেছে। এবার ঢাকায় পাঠাও প্রাইভেট কারে রাইড শেয়ারিং শুরু করতে রেজিস্ট্রেশন কাযক্রম শুরু করেছে।
পাঠাও এমন সময় প্রাইভেটকার রাইড শেয়ারিং শুরু ঘোষণা দিয়েছে যখন উবার প্রিমিয়ার সার্ভিসে ট্রিপ কমে গেছে। এ অবস্থায় পাঠাও ও উবারের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা বলে মনে করছেন ব্যবহারকারীরা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকায় উবার ট্রিপ কমে যাওয়ার কারণ চাহিদার তুলনায় অনলাইনে থাকা গাড়ির সংখ্যা বেশি। আর সিঙ্গেল যাত্রীর ক্ষেত্রে বাইক ভিত্তিক রাইডশেয়ারিং সেবার প্রতি আকর্ষণ বেড়েছে।
অনেক যাত্রীর অভিযোগ, ভালো সেবা দেওয়ার জন্য উবার প্রিমিয়ার সার্ভিস শুরু হয়েছে জানালেও ভাড়ার পার্থক্য ছাড়া উবার এক্স এবং উবার প্রিমিয়ার সেবায় কোনো পার্থক্য পাননি যাত্রীরা। ২০০৫ পরবর্তী মডেলের গাড়ি উবার প্রিমিয়ার সেবার অন্তর্ভূক্ত হলেও প্রিমিয়ার সেবার গাড়ির কন্ডিশন নিয়ে অনেক যাত্রী অসন্তুষ্ট। নোংরা গাড়ি, এসির অকার্যকারিতা, গাড়ির ইন্টেরিয়র এবং এক্সটেরিয়র ভাঙ্গাচোরাসহ অনেক অভিযোগ উবার সংশ্রিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোতে দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
এসএ/বিএস