ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

চালু হলো দেশের প্রথম ‘রোবট রেস্টুরেন্ট’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
চালু হলো দেশের প্রথম ‘রোবট রেস্টুরেন্ট’ অর্ডার নিয়ে রোবটই টেবিলে টেবিলে পৌঁছে দিচ্ছে খাবার। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রোবট ঘুরছে রেস্টুরেন্ট জুড়ে। কাস্টমারদের সঙ্গে কথা বলছে সে। নিচ্ছে গ্রাহকদের পছন্দের খাবারের অর্ডার। আবার রোবটের পেছনে থাকা মনিটরের স্ক্রিনে ভেসে ওঠা বাটন টিপে গ্রাহকরাও দিচ্ছেন খাবারের অর্ডার।

শক্তিশালী ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে সে অর্ডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে যাচ্ছে রান্নাঘরে থাকা শেফের কাছ। ঝটপট তৈরি হচ্ছে খাবার।

দ্রুত সেই খাবার নিয়ে ওই রোবটই হাজির হচ্ছে নির্দিষ্ট টেবিলে।

উন্নত দেশগুলোতে এ সেবা চালু হয়েছে আগেই। এবার পেতে যাচ্ছেন এ দেশের মানুষও। রাজধানী ঢাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে যান্ত্রিক রোবটের কাছ থেকে ‘মানবিক’ এ সেবা।  

দেশের প্রথম রোবট রেস্টুরেন্টের যাত্রা শুরু হলো আসাদ গেটের ফ্যামিলি ওয়ার্ল্ডে। রেস্টুরেন্টটিতে শুধুমাত্র রোবটই গ্রাহকদের খাবার সরবরাহ করছে।
মিরপুর রোডে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের কাছে প্রধান সড়কের ফ্যামিলি ওয়ার্ল্ড টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় রেস্টুরেন্টটি যৌথভাবে পরিচালনা করবে বাংলাদেশ ও চীন।

বুধবার ( ১৫ নভেম্বর) নিজস্ব অডিটোরিয়ামে রেস্টুরেন্টটির উদ্বোধন করা হয়। যাত্রা শুরু উপলক্ষে রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ এবং রোবট প্রস্তুতকারী চীনা সংস্থা এইচ জেড এক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানি যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকরা বলেন, বাংলাদেশে এটিই এ ধরনের  প্রথম রেস্টুরেন্ট, যেখানে রোবটের মাধ্যমে গ্রাহকদের খাবার সরবরাহ করা হবে।   এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি নতুন মাইলফলক এবং নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।

সংবাদ সম্মেলনে রোবটের কাজের পদ্ধতি তুলে ধরেন চীনা নির্মাতারা।  ছবি: বাংলানিউজশিশুদের বিনোদন ও খাবারের বিষয়টি চিন্তা করেই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ।

রেস্টুরেন্টটির পরিচালক রাহিন রাইয়ান নবী বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় যে, ওয়েটাররা কয়েক ঘণ্টা কাজের পর ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ক্লান্ত অবস্থায়ই তারা গ্রাহকদের খাবার সরবরাহ করতে বাধ্য হন। কিন্তু রোবট কখনোই ক্লান্ত হবে না। তাই যখন রোবট খাবার সরবরাহ করবে, তখন এটি গ্রাহককে আরও ভালো সেবা দিতে পারবে। সকল বয়সের মানুষের জন্য অত্যন্ত রোমাঞ্চকর পরিবেশও তৈরি করবে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি রোমাঞ্চিত হবে’।

‘প্রাথমিক অবস্থায় আগামী একমাস শিশুদের ‘কিডমিল’ এবং দেশি খাবারের সেটফুড পরিবেশিত হবে। যার মূল্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার বেশি হবে না’।  

তিনি আরও বলেন, ‘খাবারের দাম সাধ্যের মধ্যেই রাখা হবে, যেন সকল শ্রেণীর মানুষই এ সেবা নিতে পারেন। শিশুদের জন্য বিশেষ কিছু খাবারও থাকছে। খাবারের মান ও পারিবারিক পরিবেশ অবশ্যই বজায় রাখা হবে, যেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যে কেউ এখানে খেতে আসতে পারেন’।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রোবটের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন অনেক গ্রাহক। উপস্থিত সবার জন্যই এটি ছিল সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা।

রেস্টুরেন্টটির পরিচালক আরো বলেন, ‘একজন ওয়েটারের পক্ষে সব সময় খাবারের গুণগতমান নিশ্চিত করা ও জীবানুমুক্ত থাকা সম্ভব হয় না। তাই আমরা রোবটকে দিয়ে এসব কাজ করাচ্ছি। প্রাথমিকভাবে দু’টি রোবট কাজ করছে’।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এইচ জেড এক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়াজ বাংলাদেশে রোবট ডিজিটালাইজেশনে যেকোনো সহযোগিতা করতে সব সময় প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আনোয়ারুন নবী মজুমদারের দুই সন্তান তাসিন রওনাক নবী ও রাহিন রাইয়ান নবী বিদেশে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়ণরত অবস্থায় চীনে যান। সেখানে তারা চীনের রোবটদের দিয়ে খাবার সরবরাহ পদ্ধতি দেখে আকৃষ্ট হন। এরপর সংশ্লিষ্ট রোবট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়ার্জের সঙ্গে বাংলাদেশে রোবট রেস্টুরেন্ট চালুর বিষয়ে আলোচনা করেন। ওই আলোচনার ভিত্তিতেই এটি বাংলাদেশে চালু করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন রেস্টুরেন্টটির পরিচালক রাহিন রাইয়ান নবী, এইচ জেড এক্স ইলেকট্রনিক টেকনোলজি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স সোয়াজ, কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজার তানভিরুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।