বুধবার (২৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, ২০১৭’ এর খসড়া চূড়ান্তে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল ইনু সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
দেশের বিভিন্ন স্থানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার অপব্যবহারের কারণে এই ধারাটি ওই আইন থেকে বাদ দিয়ে তা আরও স্পষ্ট করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুক্ত করা হবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
ইনু বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়াটি চূড়ান্ত করেছি। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর আশা করছি আগামী শীতকালীন অধিবেশনে জাতীয় সংসদে এটি উত্থাপন করতে পারবো। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিস্তৃত ডিজিটাল জগতে নিরাপত্তা দেবে এবং এর বিকাশে সাহায্য করবে। ’
তিনি বলেন, ‘দেশের সংবিধানে প্রদত্ত সব ধরনের মৌলিক অধিকার এবং সংবিধানের যেসব গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি আছে, সেটার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে অন্য আইন যেভাবে করে থাকি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও আমরা সেভাবে তৈরি করেছি। এই আইন নাগরিকের সব মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করবে। সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল সমাজ গড়তে সাহায্য করবে, ডিজিটাল সমাজকে নিরাপত্তা দেবে। ’হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, ‘এই আইনে (ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন) তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আপনারা পাবেন, একইসঙ্গে ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারা বিলুপ্ত হওয়ার প্রস্তাবও যাবে। ’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মূলত ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য করা হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়টি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ’
ইনু বলেন, ‘সংবাদপত্রের সঙ্গে জড়িতদের উদ্বেগ এখানে ব্যাপার নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ১৬ কোটি নাগরিকের জন্য করা হচ্ছে। সুতরাং এখানে সাংবাদিক বলে আলাদা কোনো বিষয়বস্তু নেই। সম্প্রচার আইন যখন পরবর্তীতে আসবে। এতে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের কর্মীদের ব্যাপারটি খেয়াল করা হবে। ’
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের সভাপতিত্বে সভাটি শুরু হলেও শেষ হওয়ার আগে অন্য একটি সভায় যোগ দিতে চলে যান তিনি। তবে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস এই ৫৭ ধারা সেভাবে থাকবে না। এবং ফ্রিডম অব স্পিচ (বাক স্বাধীনতা) রক্ষা করার জন্য যে সব চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের (ভারসাম্য) দরকার সেগুলো আমার মনে হয় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও সম্প্রচার আইনে থাকবে। ’
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়া চূড়ান্ত হলে তা প্রধানমন্ত্রী কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।
সভায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য ও যোগাযোগ সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭
এমএন/এইচএ/
** জানুয়ারি থেকে দেশে চালু হচ্ছে ফোরজি সেবা