ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বাংলাদেশ ডিজিটাল হবেই: প্রধানমন্ত্রী

সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১১
বাংলাদেশ ডিজিটাল হবেই: প্রধানমন্ত্রী

আজ থেকে ঢাকায় শুরু হয়েছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলন ‘ই-এশিয়া২০১১’। ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কমপিউটার মাউস ক্লিক করে তিন দিনব্যাপী এ মহাসম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এশিয়ার অন্যতম এ প্রযুক্তি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিজয়ের মাস শুরু হয়েছে। স্বাধীনতার ৪০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বিনির্মাণের পথে এগোচ্ছে। এদেশের সোনার মানুষরাই গড়বেন আগামীর বাংলাদেশ।

তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশ এগিয়েছে। ১৯৯১ সালে সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি কমপিউটার কেনার উদ্যোগ নেয়। তখন এর জন্য ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়। আর মোবাইল ফোনের জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছিল।

কিন্তু এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। দিন বদলেছে। এখন গ্রামের সাধারণ কৃষকও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। আর ইন্টারনেট সেবাও ছড়িয়ে যাচ্ছে জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়নে। সরকারি তথ্যসেবার জন্য এখন আর গ্রাম থেকে শহরে আসার প্রয়োজন নেই।

এরই মধ্যে দেশে ১ হাজার ৬০০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এর লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজারে উন্নীত করা। দেশের বিত্তবানরা যদি এ কাজে সরকারকে সহায়তা করেন তাহলে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো সম্ভব।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ তথ্যসেবা পৌঁছে দিতে সাড়ে চার হাজার তথ্যসেবা কেন্দ্র কাজ করছে। এ কেন্দ্রগুলো থেকে ৪০ লাখ মানুষ তথ্যসেবা নিচ্ছেন। আয়ও হয়েছে ২ কোটি টাকা। ফলে তথ্যসেবার মাধ্যমে আয়ের পথটাও নিশ্চিত হচ্ছে।

১৯৯৬ সালে প্রযুক্তি পার্কের জন্য জমি বরাদ্দ নেয় আ.লীগ সরকার। কিন্তু পরবর্তীতে সরকার এসে এ কাজে কোনো অগ্রগতি করেনি। এবার আবার সরকারে এসে প্রযুক্তিপার্ক স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ‘ই-গভ’ পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। একে একে মন্ত্রণালয়ভুক্ত সরকারি কাজগুলো ই-গভের আওতায় আনা হচ্ছে।

বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) আওতায় ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার (এনডিসি) স্থাপন করা হয়েছে। ইন্টারনেটের গতি এবং পরিধিকে আরও সুপ্রসারিত করতে সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইথড এবং ব্যয় কমানো হয়েছে।

সাধারণ মানুষের জন্য তথ্যপণ্যকে সুলভ করতে কমপিউটারের সব ধরনের পণ্যকে শুল্কমুক্ত করা হয়েছে। ফলে কমপিউটার, ল্যাপটপ এবং ডিজিটাল পণ্যেও দাম দ্রুতই সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য হয়ে উঠছে।

এরই মধ্যে সর্বোচ্চ গতির ইন্টারেনট সেবাভুক্ত হতে থ্রিজি মোবাইল নেটওয়ার্ক চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণের সুব্যবস্থা করা হচ্ছে। দেশের প্রতিটি জেলা শহরে ডিজিটাল উদ্ভাবনী প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে।

এ ছাড়াও জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে তথ্যসেবার আওতায় আনতে তথ্য বাতায়ন তৈরি কাজ চলছে। এখন গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই দেওয়া সম্ভব। গ্রামের কৃষকেরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাংকিং, কৃষিতথ্য এবং সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারছেন।

চিনি চাষীরা ডিজিটাল পূর্জি সেবার মাধ্যমে আখের সঠিক দাম পাচ্ছেন। তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এতে সাধারণ কৃষকদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটছে।

আগামী ২০২১ সাল হবে ক্ষুধা এবং দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ। এতেই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। বাংলাদেশ হয়ে উঠবে সত্যিকারের ডিজিটাল দেশ। ই-এশিয়া২০১১ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনির্মাণের এমন সব দৃঢ় তথ্যই তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ই-গভ প্রকল্পের সভাপতি এবং সিইও অজয় সোহানি, এ সম্মেলনের সহআয়োজক সেন্টার ফর সায়েন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজের (সিএসডিএমএস) এম পি নারায়ণ, বিশিষ্ট প্রযুক্তিবিদ ও বাংলাদেশ আইসিটি মন্ত্রণালয়ের পরামর্শক সজীব ওয়াজেদ জয়, প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এবং জিপিআইটির সিইও পিটার ডিনডিয়াল।

বাংলাদেশ সময় ১৩৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।