ঢাকা: শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিকেল থেকেই উপচে পড়া ভিড়। সন্ধ্যার পরেও অসংখ্য মানুষ আসছেন।
ছুটির দিন হওয়ায় সব পেশার মানুষ ই-এশিয়ায় এসেছেন।
তবে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই বেশি। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলছে। এখানে প্রবেশের জন্য কোনও টিকেট’র প্রয়োজন নেই।
দর্শনার্থীদের আগ্রহ দেখা গেছে ‘দোয়েল’ ল্যাপটপের দিকে। শুক্রবার প্রায় ৫৫টি ল্যাপটপ বিক্রিও হয়েছে বলে জানিয়েছেন দোয়েল কাউন্টার’র একাউন্টস অফিসার ফারহানা শারমিন।
তবে দোয়েল ছাড়া আর কোনও স্টলে কোনও পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। শুধুমাত্র প্রদর্শনী হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তির এ আসর ই-এশিয়া’২০১১।
ঢাকায় ৩ দিনব্যাপী পঞ্চম এ আসরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮ ও ২০০৯ সালে এ আয়োজন করা হয়েছিলো অন্য দেশে। ৫ম বারের মতো আয়োজিত এশিয়ার অন্যতম প্রধান এই আইসিটি ভিত্তিক ইভেন্টটি এবার বাংলাদেশে প্রথম আয়োজিত হচ্ছে।
ই-এশিয়ায় সম-সাময়িক আইসিটি ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ৩০টি সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পাশাপাশি এবারের প্রদর্শনীতে মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, জাপান, থাইল্যান্ড ও নেদারল্যান্ড’র কান্ট্রি প্যাভিলিয়ন স্থান পেয়েছে।
বাংলাদেশের আউটসোর্সিং কোম্পানিগুলো এখানে তাদের সক্ষমতা তুলে ধরতে পারছে।
এই আয়োজনে দেশ ও বিদেশের শীর্ষস্থানীয় এবং বরেণ্য আইসিটি নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ২ হাজারের মতো প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন। বিভিন্ন দেশের আইসিটি পণ্য ও সেবা সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আইসিটি নির্ভর উন্নয়ন সম্পৃক্ত বিভিন্ন সেমিনার এই সেক্টর’র কর্মীদের জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। বহির্বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি’র নেতৃবৃন্দের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার সুযোগও তৈরি হয়েছে। সেই সাথে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন ডিজিটাল উদ্যোগও প্রদর্শিত হচ্ছে।
এশিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে ধারণা দিতেই এ আসরের আয়োজন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অসংখ্য আইসিটি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের এই অংশগ্রহণ ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ।
মেলায় দর্শকদের ব্যাপক সমাগম দেখলে তা স্পষ্ট হয়ে যায়।
শুক্রবার মেলার দ্বিতীয় দিন দর্শনার্থী এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশগ্রহণে ৬টি থিম’র ওপর ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে মোট ১২টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। থিমগুলো হলো : প্লেনারি, বিল্ডিং ক্যাপাসিটি, কানেক্টিং পিপল্, সার্ভিং সিটিজেন, ড্রাইভিং ইকোনমি এবং টেকনিক্যাল সেশন।
সেমিনারগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে দ্রুত ও কার্যকরী উন্নয়ন সম্ভব এবং সারা বিশ্বকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসা যায়, সে বিষয়ে বক্তারা বিভিন্ন পন্থা এবং দিক নির্দেশনা তুলে ধরেন।
তবে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে অনেকেই এ সম্মেলনে এসে দিশেহারা হয়েছেন। এমন একজন ইডেন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ইশরাত।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘পত্রিকায় দেখে মেলায় এসেছি। ভাবলাম, হয়তো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পণ্য দেখতে ও কিনতে পারবো। কিন্তু এসে দেখলাম, শুধু প্রদর্শনী। কোথায় তথ্য পাবো, তাও বুঝতে পারছি না। ’
তার মতো অনেকেরই অবস্থা ।
তবে উদ্দেশ্যহীনভাবেও অনেকেই এসেছেন। মামুন নামের এক যুবক বলেন, ‘অনেক মানুষ দেখে আসলাম, যে দেখি এখানে কি হচ্ছে। ’
শনিবার সন্ধ্যায় সম্মেলনের সমাপনী ঘোষণা করবেন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১১